রাত কাঁপিয়েও দিনে ছন্দপতন ঠান্ডার
বেলা ২টো-আড়াইটে পর্যন্ত আর্দ্রতার দাবড়ানিতে মুখ নিচু করে থাকছে ঠান্ডা। কিন্তু বিকেল গড়ালেই মেজাজ চড়ছে তার। আর মাঝরাত্তিরে তো তার দাপটে কাঁপন ধরছে কলকাতায়। এর পিছনে সেই উত্তুরে হাওয়ার খেল্। এবং উত্তুরে হাওয়ার এমন বিচিত্র আচরণের জন্যই পারদ পতনের হারে এক দশকের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এ বারের নভেম্বর। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার, নভেম্বরের শেষ দিনে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ১০ বছরে এটা দেখা যায়নি।
কাগজে-কলমে শীত না-আসুক, চলতি সপ্তাহের গোড়া থেকেই তার জোরালো ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত মিলছে। মাঝ-অগ্রহায়ণের রাতে এমন ঠান্ডার নমুনা সাম্প্রতিক অতীতে খুব বেশি পাওয়া যায়নি। আনুষ্ঠানিক ভাবে শীতের আগমন ঘোষণার আগেই আলমারি থেকে সোয়েটার-মাফলার বার করে ফেলেছেন অনেকে। ভোরের দিকে ঠান্ডার কনকনে ভাবটাও কমবেশি মালুম হচ্ছে। কিন্তু বেলা গড়ালেই ছন্দ হারিয়ে ফেলছে ঠান্ডা। আবার তা ধীরে ধীরে ফিরে আসছে সন্ধ্যার পর থেকে।
আবহবিদেরা বলছেন, কাশ্মীরে একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জন্য উত্তর ও মধ্য ভারতে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া বইছে। তার জেরেই উত্তুরে হাওয়ার দাপট বেড়েছে দক্ষিণবঙ্গে। রাতে তাপমাত্রার পতনও সেই কারণেই। আপেক্ষিক আর্দ্রতার খুব বেশি হেরফের হচ্ছে না। শুক্রবার কলকাতায় সর্বাধিক আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮০ শতাংশ। তবে কয়েক দিন ধরে দিনের তাপমাত্রাও নীচের দিকেই রয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিকে পাকাপাকি ভাবে শীত বলতে রাজি নয় আবহাওয়া দফতর।
কেন?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলছেন, “পাকাপাকি ভাবে শীত পড়তে গেলে ঠান্ডার স্থায়িত্বের দরকার হয়। স্থিতিশীলতা না-থাকলে বলা যায় না যে, শীত এসে গিয়েছে।”
দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ফের একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। এখন তা মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। গোকুলবাবু জানান, ওই নিম্নচাপ উপকূলের দিকে এগিয়ে এলে উত্তুরে হাওয়ার গতি ব্যাহত হতে পারে। এর আগে ঘূর্ণিঝড় নীলম বা তার পরের একটি নিম্নচাপের ক্ষেত্রে যেমনটা হয়েছিল। এ বছর লক্ষ্মীপুজোর পরে উত্তরের হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করলেও নীলমের প্রভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আবার বেড়ে যায় তাপমাত্রা। তার কয়েক দিন পরে ফের নতুন একটি নিম্নচাপের প্রভাবেও একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গবাসীর। নতুন নিম্নচাপ কলকাতায় শীতের আনুষ্ঠানিক আগমন পিছিয়ে দিতে পারে।
কলকাতায় পাকাপাকি ভাবে শীত পড়তে দেরি থাকলেও জেলাগুলিতে অবশ্য শীতের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে হাওয়া অফিসের খবর। বিশেষ করে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে দ্রুত তাপমাত্রা নামছে। এ দিন দক্ষিণবঙ্গে সব থেকে কম তাপমাত্রা ছিল বীরভূমে শ্রীনিকেতনে, ১০.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে তাপমাত্রাও ১১ ডিগ্রির নীচে নেমে গিয়েছে।
মৌসম ভবনের আবহবিদেরা জানিয়েছেন, কাশ্মীরে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জন্য আগামী কয়েক দিন উত্তর ও মধ্য ভারতে তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি কমবে। তার প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে পড়লেও পড়তে পারে। তবে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় তাপমাত্রার তেমন হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.