দলে গোষ্ঠীকোন্দল এড়াতে নেতাদের উদার হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সকালে কালীঘাটে তাঁর বাড়িতে উত্তর ২৪ পরগনার দলীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে জেলার সমস্ত স্তরের নেতাদের মমতা বলেছেন-মনটা বড় করতে। হৃদয় প্রসারিত করতে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় কোন্দল এড়াতে এবং সংগঠন মজবুত ও অটুট রাখতে এটাই তাঁর দাওয়াই।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় ও জেলায় দলের পর্যবেক্ষক মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে বাড়তি দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা। জেলার বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। দলীয় নেতাদের একাংশের অভিযোগ, গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে সিপিএম বা কংগ্রেস ছেড়ে যাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের একটা বড় অংশ হতাশ হয়ে পুরনো দলে ফিরছেন। বিশেষ করে বসিরহাট, হাড়োয়া, মিনাখাঁ, দেগঙ্গায় এমন প্রবণতা দেখা গিয়েছে। এ দিনের বৈঠকে মমতা উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের বলেছেন, যাঁরা অন্য দল থেকে এসেছেন তাঁদের ধরে রাখতে হবে। দলটা বড় করতে হবে। দলটা বড় করতে হবে। কংগ্রেস, সিপিএম থেকে যাঁরা আসতে চান তাঁদের সাদরে যেন দলে নেওয়া হয়। কারণ, পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের পর্যুদস্ত করাই তৃণমূলের লক্ষ্য বলে তিনি জানিয়েছেন।
বৈঠকে জেলা থেকে নির্বাচিত রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ব্রাত্য বসু, মদন মিত্র, মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর, পূর্ণেন্দু বসু, সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী প্রমুখ। মমতা ছাড়াও বৈঠকে বিধায়ক ও দলের জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষ, মুকুল ও জ্যোতিপ্রিয় পঞ্চায়েত ভোটের আগে সংগঠনকে মজবুত করার বিষয়ে বক্তৃতা করেন। সেইসঙ্গে জেলা কমিটির কলেবরও বৃদ্ধি করেছেন তৃণমূল নেত্রী। সভাপতি, সম্পাদক নিয়ে যে কমিটির সদস্য সংখ্যা এতদিন ছিল ৬, এ দিন বৈঠকে তা বাড়িয়ে ১৮ করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে জেলাপরিষদের প্রার্থীভিত্তিক কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ দিনের বৈঠক নিয়ে মুকুলবাবু বলেন, “এটা দলের অভ্যন্তরীন বৈঠক। এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলার নেই।” তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলাওয়ারি এই ধরনের বৈঠক যে নিয়মিত হবে তা তিনি জানিয়েছেন। |