বন্দির হিসেব তলব
বিনা বিচারে জেলে দীর্ঘদিন,
হাইকোর্ট বলছে অমানবিক
বিচারের আগেই বছরের পর বছর জেল খাটছেন অজস্র মানুষ। কারণ, মামলা উঠতে দেরি। বিচারে দেরি। কলকাতা হাইকোর্ট বলছে, এটা অমানবিক। রাজ্যের বিভিন্ন জেলে বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা কত, জানতে চেয়েছে তারা। জেলগুলিতে কত সাজাপ্রাপ্ত বন্দি আছেন, তা-ও জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দু’সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে এই খতিয়ান-সহ রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে।
রাজ্যের জেলগুলিতে হাজার হাজার বিচারাধীন বন্দি রয়েছেন। অনেকেরই মামলা উঠতে বা বিচার শুরু হতে বছরের পর বছর কেটে যাচ্ছে। দোষী না নির্দোষ, তার বিচার হওয়ার আগেই বিনা বিচারে জেলের অন্ধকারে কেটে যাচ্ছে বহু মানুষের জীবনের মূল্যবান সময়। হাইকোর্ট শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছে, এই অমানবিকতা মেনে নেওয়া যায় না। তার পরেই মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের একটি মামলার সূত্রে রাজ্যের জেলগুলিতে বন্দির সংখ্যা জানানোর জন্য সরকারকে নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। আইজি (কারা) এবং মেদিনীপুর জেলের সুপারকেও হাইকোর্টে এই রিপোর্ট দিতে হবে।
২০১১ সালের ১৮ মার্চ কৈলাস দাস নামে মেদিনীপুরের এক বাসিন্দা বিনা টিকিটে ট্রেনে চড়ার অভিযোগে ধরা পড়েন। টিকিট পরীক্ষক তাঁর ২০০ টাকা জরিমানা করেন। ওই টাকা দিতে না-পারায় পুলিশ কৈলাসকে গ্রেফতার করে। তাঁকে মেদিনীপুর সেন্ট্রেল জেলে রাখা হয়। ২১ মার্চ জেলেই মৃত্যু হয় তাঁর। পরে জেল-কর্তৃপক্ষ জানান, দু’দল বন্দির সংঘর্ষেই মারা গিয়েছেন কৈলাস। জেলের এই পরিস্থিতি নিয়ে জনস্বার্থের মামলা করেন আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
সেই মামলার সূত্রে সুব্রতবাবু এ দিন জানান, রাজ্যের বিভিন্ন জেলে হাজার হাজার বিচারাধীন বন্দি রয়েছেন। তাঁদের অনেকেরই বিচার শুরু হয়নি। কারও কারও বিচার শুরু হয়েও থমকে গিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে এমন অনেক মামলার নজির রয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কারাবাস হত সর্বাধিক সাত বছর। অথচ মামলা শুরু না-হওয়ায় বিচারাধীন বন্দি হিসেবেই সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তের দশ-দশটা বছর জেলে কেটে গিয়েছে!
এই জনস্বার্থের মামলার অন্যতম আইনজীবী কার্তিকচন্দ্র কাপাস জানান, দ্রুত বিচারের দাবিতে বিচারাধীন বন্দিরা বেশ কয়েক বার জেলের মধ্যে অনশন আন্দোলনও করেছেন। কিন্তু অবস্থার কোনও পরিবর্তনই হয়নি। জেলে জীবনধারণের জন্য সুযোগ-সুবিধার অভাবের কথাও ওঠে।
আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পরে হাইকোর্টের অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি প্রতাপ রায় রাজ্যের কারা দফতরকে অবিলম্বে জেলের সব সেলে মশা মারার ধূপের ব্যবস্থা করার সঙ্গে সঙ্গে বন্দিদের অন্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেন। মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার নিয়ে মামলা হলেও অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রাজ্যের সব জেলেরই বন্দিদের অবস্থা জানিয়ে সবিস্তার রিপোর্ট পেশ করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.