নিহত তৃণমূল নেতা অরুণ কুমার বিশ্বাসের খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম শৈলেন রায়, শ্যামাপদ রায় এবং নান্টু বিশ্বাস। খুনের ঘটনার পর অরুণবাবুর স্ত্রী কল্পনাদেবী যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাতে ধৃত ৩ জনের নাম ছিল না বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তদন্তে নামার পরে ওই তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পায় পুলিশ। এর পরই তাদের ধরা হয়।
উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “তদন্তে ধৃত তিনজনের বিরুদ্ধে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কিছু প্রমাণ মিলেছে। আরও অনেকে এই ঘটনায় জড়িত। তাদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ৯ নভেম্বর স্থানীয় মামুদপুর বাজারে রাস্তার ধারে বাঁ হাতের কিছুটা অংশ কাটা অবস্থায় অরুণবাবুর মৃতদেহ পাওয়া যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মামুদপুর বাজারে অরুণবাবুর কাঁসা ও পিতল বিক্রির দোকান ছিল। ৮ নভেম্বর রাত থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। ঘটনার পর অরুণবাবুর স্ত্রী কল্পনা বিশ্বাস থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে তিনি জানান, গাজীপুর গ্রামের নিহত দুষ্কৃতী সহদেব সরকার ওরফে নাড়ুর স্ত্রী কল্পনা সরকারের মদতে ও পরিকল্পনায় তাঁর স্বামীকে খুন করা হয়েছে।
অরুণবাবুর স্ত্রী আরও অভিযোগ করেন, ২০০৯ সালের ৮ জানুয়ারি অরুণবাবুকে একই দিনে দু’বার খুন করার চেষ্টা করা হয়। ওই বছরই নাড়ু খুন হয়। সেই খুনের ঘটনায় অরুণবাবুর নাম জড়িয়ে যায়। যদিও পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। বৃহস্পতিবার ধৃতদের নামও নাড়ু খুনের ঘটনায় জড়িয়ে ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, নাড়ুর স্ত্রী তাদের অরুণবাবুকে খুন করায় প্ররোচনা দিয়েছিল। এছাড়াও গরুপাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় অনেকেই অরুণবাবুর শত্রু হয়ে গিয়েছিলেন বলে অরুণবাবুর আত্মীয়রা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার যাদের ধরা হয়েছে তারা গরু পাচারের সঙ্গেও জড়িত ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, অরুণবাবুর মৃতদেহ যখন রাস্তার ধারে পড়েছিল তখন ধৃত শৈলেন তাঁকে দেখতেও এসেছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, অরুণবাবুর সঙ্গে ধৃতদের ঘনিষ্ঠতা ছিল এবং ধৃতরাও তৃণমূল সমর্থক। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিত দাস ওই গ্রামে গেলে বৃহস্পতিবার যাদের ধরা হল তারাই অরুণবাবুর খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছিল। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্বজিত দাস বলেন, “ধৃত দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ তদন্ত সঠিক পথেই নিয়ে যাচ্ছে।” |