দক্ষিণ কলকাতা
সুরাহা কবে
নিদারুণ যাত্রা
সারা দিনই যান কম থাকে। রাতে সমস্যা আরও বাড়ে। তাই নেপালগঞ্জ, জুলপিয়া, কবরডাঙা, কালীতলা, ঠাকুরপুকুর, হরিদেবপুর এলাকার বাসিন্দাদের ভরসা বলতে অটো এবং ট্রেকার। স্থানীয় বাসিন্দা এবং নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, অটোতে ঠাসাঠাসি করে আর ট্রেকারে ঝুলে বিপজ্জনক ভাবে যাতায়াত করতে হয়। এই সমস্যা দীর্ঘ দিনের। প্রশাসনকে জানালেও কোনও সুরাহা হয়নি। যদিও রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এই সব এলাকা থেকে প্রতি দিন অনেকে ধর্মতলা, বাবুঘাট যাতায়াত করেন। গত কয়েক বছরে এই সব এলাকায় জনসংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে। কিন্তু পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, ধর্মতলা যেতে হলে তিন-চার বার গাড়ি বদল করতে হয়। বাস খুবই কম। তা ছাড়া বাসের জন্য অপেক্ষা করলে গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যায়। এতে খরচও বেশি পড়ে বলে অভিযোগ। কিন্তু বাধ্য হয়ে তাই করতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক সময়ে নেপালগঞ্জ থেকে বাবুঘাট যেত ৪০ নম্বর রুটের বাস। অথচ, এখন আর বাসটির দেখা পাওয়া যায় না। এলাকার পুলক মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই বাসটি আমাদের খুব কাজে আসত। ধর্মতলা বা বাবুঘাট যাওয়ার জন্য গাড়ি বদল করার দরকার হত না। খরচও কম পড়ত। এখন বাসটির দেখাই মেলে না। ফলে যাতায়াতে খুব অসুবিধে হয়।”
ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, দিনের বেলাতে বাস কম। রাত বাড়লে অবস্থা আরও খারাপ হয়। প্রায় কিছুই মেলে না। অটোতে সাত-আট জন যাত্রী গাদাগাদি করে যেতে হয়। ট্রেকারে বাদুরঝোলা হয়ে যেতে হয়। তা ছাড়া রাত বাড়লে অটো বা ট্রেকারের ভাড়াও বেড়ে যায়।
কবরডাঙা এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাত বাড়লে এই এলাকায় অটো মেলাও দুষ্কর হয়ে পড়ে। হরিদেবপুর, টালিগঞ্জ অঞ্চলে রাত ৮টার পরে আর কোনও অটো যেতে চায় না। কখনও কখনও ঘণ্টা দেড়েক লাইনে দাঁড়ানোর পরে অটো মেলে। জুলপিয়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, এখান থেকে সরাসরি ধর্মতলা যাওয়ার একটি বাস রয়েছে। কিন্তু রাতে খুব কম পাওয়া যায়। আর পাওয়া গেলেও এত ভিড় হয় যে অনেক সময় ওঠা যায় না। স্থানীয় বাসিন্দারা বেশ কয়েক বার এই সব এলাকায় বাস এবং অন্যান্য যান চলাচল বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের এক উচ্চপদস্থ কর্তা বলেন, “আমরা এই সব রুটে অনেক নতুন গাড়ির পারমিট দিয়েছি। তবুও কেন গাড়ির অভাব তা বলতে পারব না। কোন রুটে গাড়ি কত ক্ষণ চলবে তা আমাদের বিচার্য বিষয় নয়।” যদিও পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই এলাকাগুলি মূল শহর থেকে অনেক দূরে। অনেক রাস্তায় আলোর ব্যবস্থাও নেই। এই অঞ্চলে যানবাহনের সমস্যা সম্পর্কে জানি। বাসিন্দাদের আবেদনও পেয়েছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ছবি: অরুণ লোধ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.