|
উত্তর কলকাতা: নিদারুণ বসবাস |
হুল-উৎসব
সত্যজিৎ চক্রবর্তী |
|
বেশি ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। দিন-রাত দরজা-জানলা বন্ধ রাখতে হয়। আর খোলা রাখতে গেলে ওই দরজা-জানলায় নেট লাগাতে হয়। না হলে মশারি টাঙাতে হয়। রাত বাড়লে র্যাকেট নিয়ে নেমে পড়েন অনেকে। অভিযোগ, মশার দাপটে বারাসত পুর এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দার এখন এই অবস্থা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, মশার প্রকোপ আটকাতে কার্যত ব্যর্থ পুরসভা। মশা বাড়ার অন্যতম কারণ বদ্ধ নিকাশি। ঠিকমতো নিকাশি সাফ করা হয় না। তা ছাড়া অনেক জায়গায় কাঁচা নর্দমা রয়েছে। বর্ষার পরে নর্দমায় মাত্র এক বারই মশার লার্ভা মারার জন্য ব্লিচিং এবং কীটনাশক ছড়ানো হয়েছিল। প্রবীণ বাসিন্দা অমর্ত্য চৌধুরীর কথায়: “নিকাশিগুলি মশার আঁতুড়। এ বিষয়ে পুরসভার কোনও উদ্যোগ নেই। শুধু নানা ধরনের সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে।” |
|
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুরকর্মী জানান, মাসে তিন বার স্প্রে না করলে মশার লার্ভা নষ্ট হয় না। অভিযোগ, পুরসভা সে নিয়ম মানে না। নদর্মাও নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। অধিকাংশ নর্দমা আগাছায় ভরে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মোনালিসা মণ্ডলের কথায়: “পুর-নির্বাচন এলেই নিকাশিগুলি পাকা করা ও সংস্কারের কথা ওঠে। নির্বাচন মিটে গেলেই যে-কে-সেই।” বারাসতের বিধায়ক তৃণমূলের চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বললেন, “বিধায়ক তহবিল থেকে বারাসত পুরসভার নিকাশি, রাস্তার উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছি। স্থানীয় সাংসদও অর্থ মঞ্জুর করেছেন। নিকাশি সমস্যা সমাধানের জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়েছে। জরিপের কাজ শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি জায়গায় কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।” |
|
যদিও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের রত্না ভট্টাচার্য বলেন, “পুরসভা নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করে না। এই ওয়ার্ডের উন্নতির জন্য বিধায়ক এবং সাংসদ তহবিলের টাকা এখনও পাইনি। নিকাশি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিক পাই না। ফলে নিকাশি সাফাই বা কীটনাশক ছড়ানো কোনওটাই নিয়মিত হয় না।”
বারাসত পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের দেবব্রত বসুর অভিযোগ, “বাম পুরবোর্ডের আমলে নিকাশি সংস্কারে পরিকল্পনা হয়েছিল। বাজেটও হয়েছিল। তার পরে কিছু হয়নি। এই পুরবোর্ড কোনও ব্যবস্থা
নিচ্ছে না।” |
|
এই অভিযোগের জবাবে পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “নিয়মিতই নর্দমা সাফাই করা হয়। তবে এক শ্রেণির বাসিন্দার অসচেতনতার জন্য নর্দমা খুব দ্রুত আবর্জনায় ভরে যায়। কীটনাশক স্প্রে মাসে দু’বার করে দেওয়ার নিয়ম আছে। এ ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে কি না তা জানতে কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলব।” এরই পাশাপাশি তিনি জানান, জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের অধীনে সাংসদ তহবিলের টাকায় ৬৭ কিলোমিটার পাকা নর্দমা তৈরি হবে। ইতিমধ্যেই ৮৭ লক্ষ টাকার কাজের টেন্ডার ডাকা হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই কাজ শুরু হবে। |
|