প্রণবের সফরে অন্য অঙ্ক খুঁজছে চেন্নাই
হু ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তাঁরও আপত্তি রয়েছে। কিন্তু সেই বিরোধের প্রশ্নে তৃণমূল কেন্দ্র থেকে সমর্থন তুলে নিলেও তিনি সে পথে হাঁটেননি। বরং এফডিআই নিয়ে ভোটাভুটির আশঙ্কায় সংসদে সরকার যখন বিপন্ন, তখন তিনি এম করুণানিধি বলেছেন, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে ডিএমকে ভোট দেবে ইউপিএ-র পক্ষেই। কালাইনারের সেই ঘোষণার পর ৭২ ঘণ্টাও কাটেনি, আজ চেন্নাই
কলকাতা বিমানবন্দরে।
পৌঁছে প্রথমেই বাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।
রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে বলা হচ্ছে, সময়টা নিতান্তই কাকতালীয়। সৌজন্য সাক্ষাৎই করেছেন রাষ্ট্রপতি। সাংবিধানিক শীর্ষ পদে থেকে রাষ্ট্রপতি দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকেন।
তা সত্ত্বেও এই সৌজন্য সাক্ষাৎই আজ হয়ে উঠল তামিল রাজনীতির বড়সড় আলোচনার বিষয়বস্তু।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর প্রথম রাজ্য সফরে এই চেন্নাইয়েই এসেছিলেন প্রণববাবু। কিন্তু মাদ্রাজ হাইকোর্টের দেড়শো বছর পূর্তির সেই অনুষ্ঠানে করুণানিধি যোগ দেননি। কালাইনারের সঙ্গে সে বার আলাদা করে দেখাও করেননি রাষ্ট্রপতি। ডিএমকে সূত্রে বলা হচ্ছে, এতে কিছুটা অভিমানই হয়েছিল কালাইনারের। তা ছাড়া, সাম্প্রতিক কালে কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে ডিএমকে-র সম্পর্কে কিছুটা শৈত্যও তৈরি হয়েছিল। এমনকী এফডিআই নিয়ে সংসদে ভোটাভুটিতে তাঁরা কী করবেন, সে প্রশ্নেও ‘সিনেমার সাসপেন্স’ রাখছিলেন করুণানিধি। তবে দিনের শেষে সেই ডিএমকে-র সমর্থন পেয়েই ভোটাভুটিতে এখন বলীয়ান সরকার।
রাজনীতির কারবারিদের দাবি, করুণা-প্রণব বৈঠক হয়েছে আজ সেই প্রেক্ষাপটেই। রাষ্ট্রপতি চেন্নাই এসেছেন তামিলনাড়ু বিধানসভার দেড়শো বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। সেই অনুষ্ঠানে অবশ্য করুণানিধি বা তাঁর দলের কোনও নেতা যাননি। বস্তুত, জয়ললিতার সঙ্গে সাক্ষাৎ এড়াতে করুণানিধিরা সরকারি অনুষ্ঠানে যান না। প্রণববাবু চেন্নাইয়ে নেমে প্রথমেই মেরিনা বিচ লাগোয়া সিআইটি কলোনিতে করুণানিধির বাসভবনে যান। সিআইটি কলোনির বাড়িটি করুণানিধির দ্বিতীয় স্ত্রী রজথি আম্মালের। রোজ দুপুরে করুণানিধি এখানে আসেন, বিকেলে চলে যান। সেখানে পৌঁছে করুণানিধির কুশল জিজ্ঞাসা করে প্রণববাবু তাঁকে বলেন, “অনেক দিন কথা হয় না। ভাবলাম এক বার দেখা করে যাই।”
এটা যদি ছবির একটা দিক হয়, অন্য দিকটাও কম তাৎপর্যপূর্ণ নয়। গোটা চেন্নাই শহর আজ জয়ললিতা ও প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিশাল বিশাল কাট-আউটে ঢেকে দেয় এডিএমকে। জয়ার এই আপ্যায়নের আতিশয্য দেখে রাজনীতির কারবারিদের মত, কেন্দ্রকে বার্তা দিচ্ছেন জয়ললিতাও। কংগ্রেসের এক তামিল নেতার ব্যাখ্যা, “বলা যেতে পারে, কার্যত জয়ললিতার ভয়েই এফডিআই প্রশ্নে ভোটাভুটিতে সমর্থন জানানোর কথা ঘোষণা করল ডিএমকে। কারণ, করুণানিধি বুঝতে পারছিলেন, ইউপিএ-র সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শিথিল হলেই সুযোগ নিতে পারেন জয়ললিতা।” আজ প্রণব-জয়ললিতার মধ্যেও বৈঠক হয়।
তবে ঘরোয়া আলোচনায় যা-ই হোক, বিধানসভার বক্তৃতায় করুণানিধি এবং জয়ললিতা, দু’জনেরই প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি। সেই সঙ্গে সামগ্রিক ভাবে বার্তা দেন তামিল রাজনীতিকে। এখানে প্রধান দুই দলের জনমোহিনী রাজনীতির প্রতিযোগিতা সুবিদিত। ভোটের আগে ডিএমকে প্রতিটি পরিবারকে টিভি দেওয়ার কথা ঘোষণা করে, তো জয়ললিতা আশ্বাস দেন সোনার হার দেওয়ার। রাষ্ট্রপতি বলেন, “গণতন্ত্রের আসল বিষয় হল সুশাসন কায়েম করে জনকল্যাণ ও সার্বিক উন্নয়নে লক্ষ্যে এগোনো, ভোট কুড়োনোর রাজনীতি নয়।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.