নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
দলত্যাগী চেয়ারম্যান নান্টু পালের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আজ, শুক্রবার শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে বামেরা যোগ দেবে না। কংগ্রেস সূত্রে খবর, মেয়র এবং মেয়র পারিষদরা বোর্ড মিটিংয়ে যোগ দেবেন। বাকি কংগ্রেস কাউন্সিলররা যোগ দেবেন না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের নিয়ে জেলা নেতৃত্বের বৈঠকে তা ঠিক হয়েছে। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার বলেন, “দলত্যাগ বিরোধী আইন এই রাজ্যে তা মানা হচ্ছে না। নান্টুবাবুর বিষয় নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হব। তবে সে জন্য উন্নয়ন অবহেলিত হতে পারে না। মেয়র এবং ৩ মেয়র পারিষদ মিটিংয়ে যোগ দেবেন। বাকি কাউন্সিলররা প্রতিবাদ জানিয়ে যোগ দেবেন না।”
বামেরা বোর্ড মিটিংয়ে যোগ দেবেন না বলে আগেই জানিয়েছে। বামেদের তরফে বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম বলেন, “দলত্যাগ করার পর চেয়ারম্যান পদে নান্টুবাবুর থাকা অনৈতিক। তা নিয়ে অনাস্থা জানিয়েছি। সভা ডাকতে কমিশনারের মাধ্যমে চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। নিয়ম থাকলেও মানা হচ্ছে না। শুক্রবার বোর্ড মিটিংয়ে আমাদের কোনও কাউন্সিলর যোগ দেবেন না।” তৃণমূলের পক্ষে মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল বলেন, “যাঁরা বোর্ড মিটিংয়ে যোগ দেবেন না তাঁরা উন্নয়ন কাজের পক্ষে নন। তা ছাড়া নান্টুবাবুর দলত্যাগ নিয়ে সরব হওয়া কংগ্রেস বা বামেদের মানায় না। এক সময় সিপিএম ছেড়ে নান্টুবাবু তৃণমূলে এবং পরে কংগ্রেসে যোগ দেন। তখন নান্টুবাবু বরো কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তখন কেউ সরব হননি।”
কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর নান্টুবাবুর চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবিতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বোর্ড মিটিংয়ে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস এবং বাম কাউন্সিলররা। তার জেরে বৈঠক ভেস্তে যায়। অক্টোবর মাসে মুলতুবি সভা ডাকা হলে বামেরা যোগ দেয়নি। নান্টুবাবুর পদত্যাগের দাবিতে দলের অন্যান্য কাউন্সিলররা যোগ না-দিলেও পুজোর মুখে পরিষেবা বিপর্যস্ত হতে পারে এই প্রশ্নে ওই মুলতুবি সভায় যোগ দেন মেয়র-সহ কংগ্রেসের ৩ জন মেয়র পারিষদ।
চেয়ারম্যান নান্টু পাল অবশ্য বলেছেন, “নিয়ম মেনে বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছে। কারা আসবেন তা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। যাঁরা উন্নয়ন চান থাকবেন।” বাম কাউন্সিলররা অনাস্থা প্রকাশ করে সভার আর্জি জনালেও তা মানা হচ্ছে না কেন? নান্টুবাবুর জবাব, “ওই সভা আমাকেই ডাকতে হবে বলে কোনও নিয়ম নেই। পুর আইনের বিষয়টি প্রয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট পুর কর্তৃপক্ষকে ‘রুলস’ তৈরি করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সে ধরনের কিছু নেই।”
জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর মালাকার বলেন, “দল ছাড়ার পরেও নান্টুবাবু পদ আঁকড়ে রয়েছেন। তাঁর ওই অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে।” |