নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
চা বাগানের আদিবাসী শ্রমিকদের জমির পাট্টার জন্য দলীয় নেতাদের নতুন উদ্যমে আন্দোলনে নামার পরামর্শ দিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে সিপিএমের রতনলাল ব্রাহ্মণ স্মারক বক্তৃতার মুখ্য বক্তা ছিলেন বৃন্দা কারাট।
আলোচনার বিষয় ছিল ‘ভারতের আদিবাসী সমাজের সমস্যা, এ বিষয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের দায়িত্ব’। তিনি বলেন, “দেশের আদিবাসীদের অবস্থা শোচনীয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভাষা, সংস্কৃতি-সামজিক অবস্থা সব মিলিয়ে তাঁরা শোচনীয় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। চা বাগানের শ্রমিকেরা মালিকদের মুখাপেক্ষী হয়ে রয়েছেন। চা বাগানের অতিরিক্ত জমির অধিকার পাচ্ছেন না।” এর জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতা-কর্মীদের নতুনভাবে আন্দোলন করার পরামর্শও দেন তিনি। বৃন্দা জানান, বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বিষয়টি নিয়ে সুন্দর পরিকল্পনার কথা তুলেছিলেন। তাতে বাগানের অতিরিক্ত জমির পাট্টা দীর্ঘদিনের বসবাসকারী আদিবাসী শ্রমিকেরা পাবেন। এতে তাঁদের ইন্দিরা আবাস যোজনা, বিপিএল কার্ড করতে অসুবিধা থাকবে না। কিন্তু তা তখন হয়ে ওঠেনি। নতুন সরকার এসে বিষয়টি ভাবছেই না। সেই সঙ্গে আদিবাসীদের তফশিলি শংসাপত্রের সমস্যা নিয়েই বৃন্দা সরব হন। এই প্রসঙ্গে তিনি বামফ্রন্ট সরকারের মৃদু সমালোচনা করেছেন। |
ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক। |
তাঁর কথায়, “আমলাতান্ত্রিক জটিলতার জেরে সরল আদিবাসীদের শংসাপত্রের জন্য ঘোরাঘুরি করতে হয়। এই রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের আমলেও এই জটিলতা কাটানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা পুরো সফল হয়নি। একই অবস্থা থেকে গিয়েছে বর্তমানেও।” দেশের আদিবাসীদের পরিচয় নিয়ে দেশের আইন ব্যবস্থা, সরকারেরও কড়া সমালোচনা করেন বৃন্দা কারাট। তিনি জানান, এক আদিবাসী এর রাজ্যে আদিবাসী, তফশিলি উপজাতি অন্য রাজ্যে গিয়ে তিনি ওবিসি বা পিছিয়ে পড়া জাতি হিসাবে চিহ্নিত হচ্ছেন না। আর তাতে সুপ্রিম কোর্টের মত বিচার ব্যবস্থা শিলমোহর দিচ্ছে। এটা মানা যায় না। আদিবাসীদের সংরক্ষণ বাড়ানোর পাশাপাশি একই নিয়ম সর্বত্র থাকা জরুরি। আবার অনেককে আদিবাসী স্বীকৃতিই দেওয়া হচ্ছে না। এই ধিমাল এমনই এক সম্প্রদায়। এই প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, মধ্য প্রদেশের নানা উদাহরণও তুলে ধরেন। আদিবাসীদের জন্য জমির পাট্টা ছাড়াও বন সুরক্ষা আইন কার্যকরী করা, পরিবারপিছু ২ টাকা কেজি দরে মাসে ৩৫ কিলো চালের ব্যবস্থা, হিন্দি ভাষায় স্কুল কলেজের দাবির পাশাপাশি খনিজ সম্পদে আদিবাসীদের দাবির বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনের কথা বলেন বৃন্দা কারাট। তিনি জানান, অধিকাংশ খনি আদিবাসীদের জমির উপর থাকে। একটি খনি খোঁড়া হয় আর আদিবাসীদের এলাকাচ্যুত হতে হয়। এটা বন্ধ করে খনিজে তাঁদের অধিকার কায়েম করতে হবে। |