সব জল্পনার অবসান। ব্রাজিল ফুটবলের দায়িত্বে এ বার দুই বিশ্বজয়ী কোচ।
দেশের মাটিতে ২০১৪ বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে নেইমারদের কোচের ভূমিকায় লুই ফেলিপে স্কোলারি। সঙ্গে টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট কার্লোস আলবার্তো পাহিরা। বৃহস্পতিবার ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)-এর তরফে এই ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট হোসে মারিয়া মারিন বলেন, “দেশের মাটিতে ষষ্ঠ বার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ব্রাজিলের ফুটবলপ্রেমী জনতা অধীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। এই পরিস্থিতিতে শুধু ব্রাজিল নয় বিশ্ব ফুটবলের দুই শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বের হাতেই তুলে দেওয়া হল জাতীয় দলের দায়িত্ব।”
ব্রাজিল ফুটবলের জনপ্রিয় ‘বিগ ফিল’ (এ নামেই স্কোলারিকে আদর করে ডাকেন ব্রাজিলের মানুষ) যদিও ‘সেলেকাও’-দের কোচ হিসাবে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার দিনে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। সাংবাদিকদের এড়িয়ে গিয়েছেন পাহিরাও। |
পেলে-গ্যারিঞ্চাদের জমানায় জুলে রিমে ট্রফি তিন বার জিতে তা চিরতরে হস্তগত করার পর দীর্ঘ ২৪ বছরের বিশ্বকাপ-খরার কবলে ছিল ব্রাজিল। ১৯৯৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সেই খরা কেটেছিল কোচ পাহিরার হাত ধরে। ঠিক তেমনই নতুন সহস্রাব্দের শুরুতে যখন খোঁড়াচ্ছিল রোনাল্ডো-রিভাল্ডোদের ব্রাজিল। ঠিক তখনই ২০০২ সালে পেলের দেশকে পঞ্চম বার বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন স্কোলারি। তারপর আর বিশ্বকাপ ঢোকেনি ব্রাসিলিয়ায়। এ বার দুই বিশ্বজয়ী কোচের যুগলবন্দিতে ‘হেক্সা চ্যাম্পিয়ন’ হওয়ার আশায় মশগুল গোটা ব্রাজিল। আগামী বছর ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত কনফেডারেশন কাপ জয় আপাতত লক্ষ্য দুই ভুবনজয়ী কোচের। দু’জনেরই ব্রাজিলের বাইরে কোচিং-এর সুবাদে বিশ্ব ফুটবলকে চেনেন হাতের তালুর মতো। স্কোলারি অতীতে যেমন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোদের কোচিং করিয়ে ২০০৪ ইউরো কাপের ফাইনালে এবং ২০০৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিয়ে গিয়েছিলেন, তেমন পাহিরাও মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশের কোচিং করিয়েছেন।
তবে অভিষেকের দিনে এই দু’জনকে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া প্রাক্তন ফুটবলারদের। জিকো যখন এই স্কোলারি-পাহিরার কোচিংয়ে আস্থা রাখছেন ঠিক তখনই ১৯৭০-এর বিশ্বকাপের অধিনায়ক কার্লোস আলবার্তোর গলায় অন্য সুর। তিনি বলছেন, “২০০২ বিশ্বকাপ স্কোলারির হাত ধরে এসেছিল এটা ঠিক। কিন্তু এই ২০১২-তে ফুটবল অনেক এগিয়েছে। স্কোলারির কোচিংয়ে গত সেপ্টেম্বরেই কিন্তু পালমেয়ার্স অবনমন বাঁচাতে পারেনি।”
গত শুক্রবারই কোচের পদ থেকে সরানো হয়েছিল মানো মেনেজেসকে।
সামনে অপেক্ষা ১৮ মাস। এই সময়ে ফের ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ দিয়ে সমালোচকদের মুখ স্কোলারি এবং পাহিরা বন্ধ করতে পারেন কি না সেটাই দেখার অপেক্ষায় দুনিয়া। |