পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে উন্নয়নমূলক কাজে গতি আনতে হাওড়া জেলায় ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হল।
চলতি আর্থিক বছরের গোড়ায় প্রকল্পটিতে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছিল ৫০ কোটি টাকা। গত ২৮ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক করেন। তার পরেই ওই প্রকল্পে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৭৫ কোটি টাকা করে দেওয়া হয়। জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, বাড়তি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে কোনও অসুবিধা হবে না।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, চলতি আর্থিক বছরের ২০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটিতে কাজ হয়েছে ৩৭ কোটি টাকার। শীতের মরসুম এসে গিয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, এ বার কাজের সুযোগ আরও বাড়বে। এই পরিস্থিতিতে আগামী চার মাসে ৫০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা তো বটেই, বাড়তি লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করা যাবে।
এ দিকে, টাকা খরচের হার বাড়লেও ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে গড় কাজের দিন তৈরির যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে সেটি পূরণ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে জেলা প্রশাসন কর্তাদের একাংশের মধ্যে। চলতি আর্থিক বছরে গড় কাজের দিনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ৫০ দিন। কিন্তু ২০ নভেম্বর পর্যন্ত গড় কাজের দিন তৈরি হয়েছে মাত্র ২৩ দিন। এটি গত বছরের তুলনায় মাত্র ২ দিন বেশি।
কেন এই অবস্থা?
প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, এক-একটি স্কিমে একটি পরিবারকে সর্বাধিক ৬ দিন কাজ করানোর সংস্থান রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্কিমগুলি এমন ভাবে করা হয়েছে, যাতে এক-একটি পরিবার গড়ে তিন-চার দিনের বেশি কাজ পাচ্ছেন না। অনেক পরিবার আবার দু’তিন দিন কাজ করে নিজেরাই ছেড়ে দিচ্ছেন। তাঁদের জায়গায় নতুন পরিবার ঢুকছেন। ফলে মোট কাজের দিনের সঙ্গে প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী পরিবারগুলির সংখ্যাকে ভাগ করলে কাজের দিনের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এই সমস্যার কথা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকে জানানো হয়েছে বলে ১০০ দিনের প্রকল্পের জেলা সেল সূত্রের খবর। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সব ব্লক প্রকল্পটিতে ভাল কাজ করেছে তার মধ্যে রয়েছে আমতা-২, শ্যামপুর-১ এবং ২, উদয়নারায়ণপুর এবং বাগনান-২। জেলার ১৫৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে এখনও পর্যন্ত টাকা খরচের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে শ্যামপুর-২ ব্লকের নাকোল। এই গ্রাম পঞ্চায়েত ইতিমধ্যে খরচ করেছে ১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা। অন্য দিকে সাঁকরাইল, উলুবেড়িয়া-১ এবং বালি-জগাছার মতো কয়েকটি ব্লক আবার টাকা খরচের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। এই ব্লকগুলির প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন, ১০০ দিনের প্রকল্পের জন্য যে ব্লকভিত্তিক সেল রয়েছে, কর্মীর অভাবে সেগুলি কার্যত অস্তিত্বহীন। তা ছাড়া এই তিনটি ব্লকে শ্রমিক পাওয়াও একটা সমস্যা বলে আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। |