কান্দিতে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের জনসভায় থাকার কথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় ও সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর। কেন কান্দিতে সভা? জেলার মন্ত্রী তৃণমূল নেতা সুব্রত সাহা বলেন, “বছর দু’য়েক আগে কান্দিতে শুভেন্দুবাবুর সভা করার কথা ছিল। কিন্তু সেই সময়ে তা করা যায়নি। তাই এ বার সে কথা রাখতেই কান্দিতে জনসভা করা হচ্ছে।” তবে কান্দির বিধায়ক কংগ্রেসের অপূর্ব সরকারের দাবি, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতেই তৃণমূল এখন কান্দিতে সভা করার কথা ভাবছে।”
মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর সংসদীয় এলাকা কান্দির মোহনবাগান ময়দানে ওই সভায় থাকবেন সদ্য কংগ্রেস ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়ে মন্ত্রী হওয়া হুমায়ুন কবিরও। খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন মন্ত্রী সুব্রতবাবু স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় হুমায়ুন কবিরকে সম্মান জানানো হয়েছে। তাই আমাদের দলে সামিল হয়ে সম্মানের সঙ্গে রাজনীতি করুন, এই বার্তাও এই সভায় দেওয়া হবে।”
মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস অবশ্য ওই সভাকে ‘গুরুত্ব’ দিতে নারাজ। অধীরবাবু বলেন, “যে কোনও রাজনৈতিক দলের যে কোনও জায়গায় সভা করার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। সেক্ষেত্রে বলার কিছু নেই। আর তৃণমূল শুরু থেকেই মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস ভাঙার খেলায় মেতেছে। এতে জেলা কংগ্রেসের কিছু এসে যায় না। জেলা কংগ্রেসের উচ্ছিষ্ট যারা, তারা তৃণমূলের সম্পদ হতে পারে। কিন্তু কংগ্রেসের তারা উচ্ছিষ্টই ছিল।” অধীর বলেন, “মাত্র দেড় বছরের ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল বিধায়ক ও সাংসদ নিজের দলের বিরুদ্ধেই জেহাদ ঘোষণা করছেন, তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতাকে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের হাতে হেনস্থা হতে হচ্ছেতখন তাঁদের কথা জেলার মানুষ কতটা বিশ্বাস করবেন, তা নিয়ে কিন্তু সংশয় রয়েছে। কেননা, জেলার মানুষ বোকা নন। তাঁরা তৃণমূলের চরিত্র জানেন!” হুমায়ুন বলেন, “আমি যখন যে দলে থাকি, মনে প্রাণে সেই দলের অনুশাসন মেনে চলি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমায় সম্মান দিয়ে মন্ত্রীর পদে বসিয়েছেন। ফলে জেলায় তৃণমূলের সংগঠন যাতে মজবুত হয়, আমাদের পায়ের তলার মাটি শক্ত হয়সেই চেষ্টাই করব।”
এদিকে কান্দি থানা লাগোয়া এলাকায় সভা উপলক্ষে টাঙানো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ তিনটে ফ্লেক্স মঙ্গলবার গভীর রাতে ব্লেড দিয়ে কেটে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তার জেরে বুধবার সকাল ১১টা থেকে পৌনে ১২টা পর্যন্ত কান্দি থানার সামনের রাস্তা অবরোধ করে তৃণমূল। পরে কান্দি থানার পুলিশের কাছ থেকে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি পেয়ে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তৃণমূলের কান্দি মহকুমা শিক্ষা সেলের সভাপতি কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কান্দির সভা বানচাল করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। এটা কিছুতেই বরদাস্ত করব না।” দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা না হলে শুক্রবার থানা ঘেরাও করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন ওই নেতা। কংগ্রেসের অপূর্ববাবু অবশ্য বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই কাণ্ড ঘটেছে।” |