কামদাকিঙ্কর ফুটবল এ বার শুরু হবে ১৫ ডিসেম্বর। উদ্বোধন করবেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী।
বাবা কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে ২০০৮ সালের ১৯ জুলাই এই গ্রামীণ ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু করেছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তখন তিনি জঙ্গিপুরের সাংসদ। এখন তিনি রাষ্ট্রপতি। সাধারণত প্রতি বছর পুজোর পরে এই প্রতিযোগিতা হয়। তবে এ বার পুজোর ঠিক মুখে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রেরই উপনির্বাচন ছিল। তার ফল প্রকাশ পুজোর ঠিক আগে আগেই। তারপরে জঙ্গিপুরের নতুন সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় শপথ নেন ২২ নভেম্বর। এ বার তাই কিছুটা দেরি করেই হচ্ছে এই প্রতিযোগিতা। তবে তাতে সন্তুষ্ট এলাকার ফুটবল প্রেমীরা। সাইয়ের কোচ সুবোধ দাস বলেন, “এ বার সব উৎসবগুলিই দেরি করে হয়েছে। তা ছাড়া, পাট, ধান উঠতেও দেরি হয়েছে। তাই সেই মতো প্রতিযোগিতাও ঠিক সময়েই হচ্ছে।”
তবে রাষ্ট্রপতি নিজে প্রতিযোগিতার উদ্বোধনে আসতে পারছেন না। তবে উদ্যোক্তা সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, ফাইনালে কিছুক্ষণের জন্য হলেও মাঠে হাজির থাকার চেষ্টা করবেন তিনি।
গত বছরের মতোই এ বারও প্রতিযোগিতায় যোগ দেবে ২৫৬টি দল। এই প্রতিযোগিতা এই নিয়ে পঞ্চম বর্ষে পড়ল। প্রথম বার জঙ্গিপুর সংসদীয় এলাকার ১৭৬টি দলের ২৫০০ ফুটবলার যোগ দেন প্রতিযোগিতায়। ২০০৯ সালে সারা মুর্শিদাবাদ জেলাই প্রতিযোগিতার আওতায় আসে। দলের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৪০। গত বছর জঙ্গিপুর লাগোয়া নলহাটি বিধানসভার ১৬টি দলকে যুক্ত করায় প্রতিযোগিতায় দলের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৫৬। প্রণবপুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ছিলেন নলহাটির বিধায়ক।
আয়োজক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার শ্রেণিক শেঠ বলেন, “২৫৬টি দলের ৪৬০৮ জন ফুটবলার অংশ নেবেন এ বার। নিরাপত্তাজনিত কারণে উদ্বোধনী ম্যাচ ও ফাইনাল-সহ গুরুত্বপূর্ণ খেলা গুলি হবে রঘুনাথগঞ্জ ম্যাকঞ্জি ময়দানে। ময়দানটিকে প্রয়োজন মতো সারিয়ে নেওয়া হবে।” বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস বলেন, “প্রতিযোগিতা শুরু হবে ১৫ ডিসেম্বর। অধীরবাবু উদ্বোধন করবেন। তবে ফাইনালে কিছুক্ষণের জন্য হাজির থাকবেন রাষ্ট্রপতি প্রণববাবু।”
উদ্যোক্তা কমিটির অন্যতম পুস্পল দাস বলেন, “জঙ্গিপুর সংসদীয় এলাকা থেকে ১৭৬টি দল খেলবে এবারে। ৬৪ দল খেলবে ফরাক্কা, ধুলিয়ান বিধানসভা এবং মুর্শিদাবাদ ও বহরমপুর সংসদীয় এলাকা থেকে। বাকি ১৬টি দল নলহাটির। মূল পর্বে প্রতিটি বিধানসভা ও লোকসভা থেকে ২টি করে মোট ২৮টি দল উঠে আসবে।” গত বারের বিজয়ী বেলডাঙা কোচিং ক্যাম্পের সংগঠক হাসানুজ্জামান বলেন, “গত বার গোল্ড কাপ জিতেছিলাম। সেরা খেলোয়াড় হিসাবে গোলরক্ষক সৈফুদ্দিন শেখ মোটরবাইক পেয়েছিলেন। এ বার গ্রাম ফুটবল হবে কি না তা নিয়ে সংশয় ছিল। প্রতিযোগিতা হচ্ছে শুনে সবাই খুব খুশি।” গত বারের রানার্স বহরমপুর একাদশের সহ-অধিনায়ক সাহেব সাহা বলেন, “খুব খুশির খবর। গত বারের হারের বদলা নিতে এ বার প্রস্তুতি বাড়াচ্ছি।” গত বার সুতির ছাবঘাটি মাঠে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণববাবু বলেছিলেন, “বাঙালি হিসাবে ফুটবল আমার দ্বিতীয় সত্তা। তাই প্রতি বছর দিল্লিতে সব কাজ ফেলে রেখে শুরু ও শেষের দিন মাঠ থেকে খেলা উপভোগ করতে ছুটে আসি জঙ্গিপুরে। বিশ্বাস করি, ভারতীয় ফুটবলকে বরাবর সমৃদ্ধশালী করেছে গ্রাম। তাই জঙ্গিপুরে গ্রাম ফুটবলের সূচনা করে আমি গর্বিত।” প্রতিবার খেলার মাঠে এলেও এবারে রাষ্ট্রপতি আসেন কি না সেটাই দেখার। |