|
|
|
|
জাঁক বাড়ছে মাইতিবাড়ির রাসে
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
রাসে মেতেছে মহিষাদল। মহিষাদল রাজ পরিবারের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব কোনও রকমে ভাঙা রাসমঞ্চে হলেও উত্তর কাশিমনগরের মাইতি পরিবারের রাস উৎসবের জাঁক এখন অনেকটাই বেশি। মঙ্গলবার রাত থেকে এই রাস ঘিরেই ভিড় জমিয়েছেন মহিষাদলের রাজারামপুর, দক্ষিণ কাশিমনগর, টাঠারিবাড় প্রভৃতি গ্রাম থেকে আসা মানুষজন। পরিবারের সদস্য চুরাশি বছরের অশীতিপর ক্ষিতিপ মাইতি বলেন, “আগের তুলনায় ছেলেমেয়েরা যে উৎসাহ দেখাচ্ছে, তা আমাদের কাছে গর্বের। আগের তুলনায় আড়ম্বরও অনেকটাই বেড়েছে। মন্দ লাগে না।”
কথিত আছে, একদা কাশিজোড়া পরগনার (যার বর্তমান নাম পাঁশকুড়া) রাজবংশের প্রজা বচ্ছিরাম মাইতি রাধা-গোবিন্দের বিগ্রহ নিয়ে ১৬৪৩ সালে চলে আসেন মহিষাদলের কাশিমনগরে। তখন থেকেই এলাকায় চালু হয় উৎসব। পরিবারের সদস্যরা জানান, এলাকার বড় পুকুরের কাছেই রাসমঞ্চে পালিত হত উৎসব। এরপর ১৮৯৭ সালে উত্তরসূরি হরপ্রসাদ মাইতি একটি পাকা মন্দির গড়ে তোলেন। তখন প্রতিষ্ঠিত হয় কষ্টি পাথরের ১২ ইঞ্চির গোবিন্দ ও ১০ ইঞ্চির রাধা মূর্তি। প্রতিবারই মন্দিরের আরতি সেরে বাতাসা লুঠ দেওয়ার পর, রাধা-গোবিন্দকে বার করা হয় রাসযাত্রায়। বড় পুকুরের দক্ষিণ দিকে রাসমঞ্চে যাওয়ার ১০ মিনিটের পথ পেরোতে সময় লাগে প্রায় দু’ঘণ্টা। চলে হরেক রকম আতসবাজি প্রদর্শনী। এ বারও কীর্তন সহযোগে রাধা-গোবিন্দকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাসমঞ্চে। দু’দিনের গ্রামীণ মেলায় পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। হয় যাত্রাও। সব মিলিয়ে জমজমাট মহিষাদলের মাইতি পরিবারের প্রাচীন রাস উৎসব। পরিবারের সদস্য সঙ্কর্ষণ মাইতি বলেন, “এই রাস উৎসবের জনপ্রিয়তা যে বেড়েছে, মানুষের বিপুল সমাগমই তার প্রমাণ।” |
|
|
|
|
|