এক ম্যাচে হার। আর তাতেই পরিস্থিতি পুরো ওলটপালট।
বাংলা দলে যে সিনিয়রদের এত দিন ‘ব্রাত্য’ করে রেখেছিল সিএবি, মধ্যপ্রদেশের কাছে লজ্জার হারের পর সেই সিনিয়র-নীতিতেই ফিরে আসতে হল। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আগামী ১ ডিসেম্বর শুরু রঞ্জি ম্যাচে বাংলার হয়ে ওপেন করতে দেখা যাবে অভিজ্ঞ ওপেনার অরিন্দম দাসকে। যাঁকে কি না রঞ্জির প্রাথমিক দলেও রাখেনি সিএবি!
মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশের কাছে হারের পরপরই বাংলার অভিজ্ঞ ওপেনারকে ফেরানো নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়ে গিয়েছিল বাংলার ক্রিকেটমহলে। এ দিন নির্বাচকরা ঠিক করে ফেলেন, বাংলা ওপেনিংয়ের যা হাল, তার পর অরিন্দমকে আর দলের বাইরে বসিয়ে রাখার কোনও মানে হয় না। বিশেষ করে তিনি যখন স্থানীয় লিগে সেঞ্চুরি-সহ পরপর বড় রান করে চলেছেন। শুধু তাই নয়, ক্লাব ক্রিকেটে অরিন্দমের সঙ্গী ওপেনার রোহন বন্দ্যোপাধ্যায়কেও টিমে নেওয়া হল। তিন নম্বর ওপেনার হিসেবে গীতিময় বসুকে মুম্বই পাঠানো হচ্ছে। তবে ওপেনিংয়ে অরিন্দমের সঙ্গে থাকবেন রোহনই।
অরিন্দমকে দলে ফেরানোর পর কথাবার্তা শুরু হয়ে গিয়েছে বাকি সিনিয়রদের ভবিষ্যৎ নিয়েও। এঁদের মধ্যে সৌরাশিস লাহিড়ি আছেন, যিনি অভিজ্ঞ স্পিনার তো বটেই, একই সঙ্গে ব্যাটের হাতও অনেকের চেয়েই ভাল। আছেন শিবশঙ্কর পাল। যিনি মঙ্গলবারই পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ক্লাব ক্রিকেটে। প্রশ্ন উঠছে, এঁদের কবে ফেরানো হবে?
মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে বিপর্যয়ের পর নির্বাচকদের সবচেয়ে বেশি উষ্মা ছিল বাংলার ওপেনিং নিয়ে। পার্থসারথি ভট্টাচার্য বা শ্রীবৎস গোস্বামী কিছু করতে পারেননি। চারটে ম্যাচে আটটা ইনিংস পেয়েও ওপেনিংয়ে একটাও হাফসেঞ্চুরি পার্টনারশিপ হয়নি। পার্থ-শ্রীবৎসকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। নির্বাচক প্রধান দীপ দাশগুপ্ত এ দিন বলছিলেন, “কে সিনিয়র, কে জুনিয়র সে সব দেখার সময় এটা নয়। আর নির্বাচক কমিটি তো কখনও বলেনি যে, অরিন্দম বা অন্য সিনিয়রদের আর দলে ফেরানো হবে না।”
ঘটনা হচ্ছে, বাংলা দল থেকে ‘ব্রাত্য’ করে দেওয়ার সময় অরিন্দম সম্পর্কে সিএবি-র কেউ কেউ বলেছিলেন, অরিন্দম মরসুমে একটা সেঞ্চুরি করবেন। তার পর কুড়ি-পঁচিশ করে রান। ব্যাস। তা হলে এখন তিনি দলে কেন? সিএবি যুগ্ম-সচিব সুজন মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “এখন ভাল খেলছে, তাই ঢুকেছে।” তবে এক নির্বাচক আবার বললেন, “ওই ২০-২৫ রান করার লোকই বা কোথায় এখন? ম্যাচ শুরুর দশ ওভারের মধ্যেই তো এখন মিডল অর্ডারকে নেমে পড়তে হচ্ছে। বাজে গোঁয়ার্তুমি দেখানোর মানে নেই। অরিন্দম রান করুক না করুক, উইকেটে পড়ে থাকে। আর ক্লাব ক্রিকেটে ওর ডাবল সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ আছে রোহনের সঙ্গে।”
আর অরিন্দম— তিনি কী বলছেন? অহেতুক উত্তেজনা নেই। শুনে শুধু বললেন, “বাংলার হয়ে খেলাটা আজও আমার কাছে গর্বের ব্যাপার। সুযোগ পেয়েছি যখন, বাংলার গর্ব বাঁচানোর চেষ্টা করব।” |