লেখার শুরুতেই আমি সেই সব কর্মকর্তা আর প্রাক্তন ফুটবলারদের উদ্দেশে একটা কথা বলতে চাই, যারা করিমকে কোচদের ‘পি সি সরকার’ ভেবে নিয়েছিল। ভারতীয় ফুটবলে মনস্তত্ত্ব আগে, কোচিং পদ্ধতি পরে। মোহনবাগানে সফল হতে গেলে সবার আগে করিমকে এই অতিসাধারণ বিষয়টায় জ্ঞান অর্জন করতে হবে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হল, সেটা ও কখনওই করতে পারবে না। যে কোচ ফুটবলারদের থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকী আড্ডা মারতে বেশি পছন্দ করে, সে ওডাফা কী ফুটবল খেলতে চাইছে সে দিকে মন দেবে কী করে? আমার কষ্ট হচ্ছে ওডাফার জন্য। একটা জলজ্যান্ত প্রতিভাকে চোখের সামনে নষ্ট হতে দেখছি মোহনবাগানে।
অনেক বিশেষজ্ঞই হয়তো বলবেন, মাত্র সাত দিনে একটা কোচের মূল্যায়ন হয় না। আমি বলছি সাত দিন কেন, সত্তর দিনেও করিমের মূলায়ন করা যাবে না। সালগাওকরকে দেখলেই ফুটে উঠবে করিমের আসল চেহারা। |
ভারতে করিম |
চার্চিল ব্রাদার্স
ম্যাচ ৪২, জয় ২৩, হার ৮, ড্র ১১
মোহনবাগান (প্রথম বার)
ম্যাচ ৭৯, জয় ৪৬, হার ২১, ড্র ১২
সালগাওকর
ম্যাচ ৯২, জয় ৪৭, হার ২৫, ড্র ২০
মোহনবাগান (এ বার)
ম্যাচ ২, জয় ০, হার ১, ড্র ১ |
ট্রফি ৬ |
• চার্চিল ব্রাদার্স ডুরান্ড কাপ।
• মোহনবাগান ফেডারেশন কাপ, সুপার কাপ, কলকাতা লিগ।
• সালগাওকর আই লিগ, ফেডারেশন কাপ। |
* তথ্য: হরিপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় |
|
কলকাতার বেশি টাকা আর প্রচারের লোভে একটা দলকে ন’নম্বরে নামিয়ে দিয়ে চলে এল। কোন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কী ভাবে খেলতে হয়, সেটাই এখনও ঠিকমতো জানে না। আর স্বপ্ন দেখছে আই লিগের। দুর্ভাগ্য করিমের নয়। মোহনবাগানেরও নয়। দুর্ভাগ্য আমাদের মতো মোহনবাগান সমর্থকদের। যারা দিনের পর দিন কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনা মুখ বুজে সহ্য করে যাচ্ছি।
আমার মনে আছে ধীরেনদার আমলে প্লেয়ার রিক্রুটাররা ব্যর্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে দেওয়া হত। ৭৫-এ পাঁচ গোল খাওয়ার পরে গজুদা, ঝুকুদাদের সরে যেতে হয়েছিল। আর এখন? ফুটবল সম্পর্কে যাদের কোনও ধারণা নেই, ন্যূনতম ফুটবলবোধ নেই, তারা দল গড়ছে। দেবাশিস দত্তরা যদি মোহনবাগানকে হলদিয়া ডক ভেবে নেয়, তা হলে কিন্তু ভুল করবে। মোহনবাগান জনগণের ক্লাব। যে দিন সমর্থকদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাবে, সে দিন আর পালানোরও সুযোগ পাবে না।
করিমের থেকে বেশি দোষী তো কর্তারাই। আমার মতে সন্তোষ কাশ্যপের কোনও দোষ নেই। এত নিম্নমানের দল বানালে কোচ কী করবে? ৯ ডিসেম্বর ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধেও মনে হচ্ছে কপালে দুঃখ নাচছে। মোহনবাগানকে বাঁচতে হলে অবিলম্বে আবার কোচ বদলাতে হবে। মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা সঞ্জয় সেনকে কোচ করা উচিত। যারা ভারতীয় ফুটবলকে জানে। বোঝে। না হলে আরও কাঁদতে হবে মোহনবাগানকে। |