সামলাতে হাতিয়ার নয়া পোর্টাল |
|
ই-গভর্ন্যান্সে কেন্দ্রের নজরদারি রাজ্যে
গার্গী গুহঠাকুরতা • কলকাতা |
|
শুধুই টাকা বরাদ্দ করে কাজ শেষ নয়। সেই টাকায় আমজনতার কতটা লাভ হল, তা রীতিমতো হিসেব কষে দেখে নিচ্ছে কেন্দ্র। আর সেই কড়া নজরদারির চাপে এ বার ঘর গোছাতে তৎপর রাজ্য সরকারও।
ই-গভর্ন্যান্স প্রকল্পে কেন্দ্রের এই নজরদারি সামলাতে রাজ্য তথ্যপ্রযুক্তি দফতর তৈরি করেছে ইন্টারনেট নির্ভর নতুন একটি ব্যবস্থা। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্পমহলও।
কিছু দিন আগেই কেন্দ্রীয় বরাদ্দের হিসেবে নজরদারি করতে রাজ্য সরকার তৈরি করেছে সচিব পর্যায়ের ‘টাস্ক ফোর্স’। প্রশাসনিক স্তরে আটঘাট বাঁধার পাশাপাশি প্রযুক্তিকেও এই কাজে লাগাচ্ছে সরকার।
তৈরি হয়েছে ‘প্রজেক্ট মনিটরিং ইনফর্মেশন সিস্টেম’ (পিএমআইএস) নামে একটি পোর্টাল। এর মাধ্যমে রাজ্য সরকার বিভিন্ন দফতরের কাজে নজর রাখবে। দফতরের কাজের খতিয়ান, খরচের হিসেব ও প্রকল্পের নানা তথ্য থাকবে সেখানে। কেন্দ্রের বরাদ্দ টাকায় যেসব ই-গভর্ন্যান্স প্রকল্প চলছে, সেগুলির সার্বিক খতিয়ান দিতে হবে। পিএমআইএস-এ নিয়ম করে তথ্য জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট দফতরকে।
আগে ই-গভর্ন্যান্স প্রকল্পে টাকা দেওয়ার বিষয়ে এতটা কড়াকড়ি ছিল না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের এক কর্তা। কিন্তু ছবিটা বদলেছে। সরকারি কোষাগার থেকে মোটা টাকা ব্যয় হলেও, আমজনতার দোরগোড়ায় সেই সব সুবিধা পৌঁছচ্ছে কি না, সেটা যাচাই করে নিতে চায় কেন্দ্র। পরবর্তী টাকা বরাদ্দের আগে তাই কাজের হিসেব নিতে রাজ্যগুলিকে তাগাদা দিচ্ছে তারা। প্রতি ত্রৈমাসিকে ই-গভর্ন্যান্স সংক্রান্ত রিপোর্ট রাজ্যকে পাঠাতে হয় কেন্দ্রের কাছে। যা পাঠাতে কালঘাম ছুটে যায় রাজ্য তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের। কারণ, প্রকল্পের টাকা সময়ে খরচ করা ও সেই সংক্রান্ত হিসেব পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রায়শই গড়িমসি করে দফতরগুলি।
কেন্দ্রের ‘মিশন মোড প্রজেক্টস’-এর কাজের খতিয়ান দিতেই তৈরি হয়েছে এই বিশেষ পোর্টাল। ভূমি ও ভূমি সংস্কার, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পঞ্চায়েত ও অর্থ দফতরের বিভিন্ন ই-গভর্ন্যান্স প্রকল্প কেন্দ্রের টাকায় চলছে। ত্রৈমাসিক রিপোর্ট ছাড়াও মাঝে মধ্যেই সেই কাজের হিসেব চেয়ে পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। শুধুই আর্থিক নজরদারি নয়। প্রকল্পের সময়সীমা মেনে চলার দিকেও কড়া নজর দিচ্ছে। রাজ্য জুড়ে ‘ই-ডিস্ট্রিক্ট’ প্রকল্প চালু করার প্রস্তাব অক্টোবরেই কেন্দ্রের সবুজ সঙ্কেত পেয়েছে। এ বাবদ ৫০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে তারা। কিন্তু সঙ্গে বেঁধে দিয়েছে প্রথম দফার কাজ শেষের সময়সীমা। ২০১৩-র মার্চের মধ্যেই ১০টি সাধারণ পরিষেবা চালুর নির্দেশও দিয়েছে।
রাজ্যের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে শিল্পমহলের দাবি, এ ধরনের নজরদারি জরুরি। বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের প্রেসিডেন্ট কল্লোল দত্ত বলেন, “প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা। কাজে গতি আনবে এই ব্যবস্থা। কমবে লাল ফিতের ফাঁসও।” একই সুরে অ্যাসোচ্যামের পূর্বাঞ্চলীয় মুখপাত্র সূর্য নন্দী জানান, বরাদ্দ টাকার হিসেব ঠিক থাকলে নতুন প্রকল্পের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে। |