সাইকেল চুরির অভিযোগে ধৃত এক যুবককে নিয়ে উত্তেজনা ছড়াল বিশ্বভারতীর বিদ্যাভবনের সিনিয়র বয়েজ হস্টেলে। হস্টেল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ একটি সাইকেল নিয়ে পালানোর সময়ে আবাসিক ছাত্ররা ওই যুবককে ধরে ফেলে। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম রাজেশ হাজরা। বাড়ি স্থানীয় সুরশ্রীল্লিতে। তার কাছ থেকে একটি চপার উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশের দাবি।
এ দিকে দিনের বেলায় বিশ্বভারতী চত্বরে এ ভাবে বহিরাগত এক যুবক ঢুকে পড়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আবাসিকদের দাবি, হস্টেলে ধারাবাহিক ভাবে চুরি হচ্ছে। ওই চোরকে জেরা করে ওই সব চুরির সঙ্গে যুক্ত আরও চারজনের নাম পাওয়া গিয়েছে। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এককর্মীর ছেলেও রয়েছে। আবাসিক ছাত্রদের অভিযোগ, চোর ধরার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রপরিচালক এবং নিরাপত্তা আধিকারিককে ফোনে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা অনেক পরে এসে চোরকে তাঁদের হাতে ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু আবাসিকেরা বাকি চারজনকে ধরে বিভিন্ন সময়ে চুরি যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধারের দাবি তোলেন। এই নিয়ে দু’পক্ষের বচসা হয়। শেষে অবশ্য আবাসিকেরা চোরকে ছেড়ে দেন। দুপুর ১টা নাগাদ ছাত্রপরিচালক ও নিরাপত্তা আধিকারিক চোরকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। |
পুলিশ জানায়, ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে। তার সঙ্গে জড়িতদেরও খোঁজ চলছে। আবাসিক জামসেদ আলি খাঁর অভিযোগ, “দিনের পর দিন হস্টেল থেকে জিনিসপত্র চুরি যাচ্ছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিছু করতে পারছে না। আমরা যখন হাতে নাতে চোর ধরে বাকি দুষ্কৃতীদের নাম উদ্ধার করি তখন ছাত্র পরিচালক ও নিরাপত্তা আধিকারিক ওই চোরদের ধরে জিনিসপত্র উদ্ধার না করে সিউড়ি থেকে র্যাফ ও পুলিশ এনে আমাদের লাঠিপেটা করার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে চোরকে ছেড়ে দিই।” তাঁর দাবি, “দুষ্কৃতীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এককর্মীর ছেলে জড়িত আছে বলে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
ছাত্রপরিচালক সমিত রায় অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, “খবর পাওয়া মাত্র গিয়ে শুনি আবাসিকরা ধৃতকে শৌচাগারে আটকে রেখে মারধর করেছে। আমরা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বলি। তাতেও ছাত্ররা অনড় থাকায় উপাচার্যের নির্দেশে পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তবে এর আগে চুরির ব্যাপারে বা কেউ জড়িত রয়েছে বলে আবাসিকদের তরফে কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আর নিরাপত্তার ব্যাপারে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করার প্রস্তুতি চলছে।” যদিও এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়। |