আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী দুশো বছরের পুরনো রাসমেলা। এ দিন সন্ধ্যায় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন কোচবিহারের জেলাশাসক তথা দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি মোহন গাঁধী। অনুষ্ঠানে কোচবিহারের জেলা ও দায়রা বিচারক অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়, পুলিশ সুপার প্রণব দাস ছাড়াও জনপ্রতিনিধিরা থাকবেন। মেলা উদ্বোধনের পর পঞ্জিকার নির্ঘণ্ট মেনে মদনমোহন মন্দিরে পুজোয় বসবেন জেলাশাসক। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ পুজো শেষ করে মন্দির চত্বরে রাসচক্র ঘুরিয়ে রাসযাত্রা উসৎবের সূচনা করবেন তিনি। দুটি অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষ। মেলা আয়োজনেও চলছে শেষ তুলির টান। সোমবার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, সদর মহকুমাশাসক এবং পুরসভা চেয়ারম্যান মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে প্রস্তুতির কাজ খতিয়ে দেখেন। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “আয়োজন প্রায় শেষ। মঙ্গলবার উপোস থেকে পুজোর পর রাসচক্র ঘুরিয়ে রাসযাত্রার সূচনা করব।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার রাজাদের কুলদেবতা মদনমোহন দেবের রাসযাত্রাকে ঘিরে রাসমেলার সূচনা হয় ১৮১২ সালে। মহারাজা হরেন্দ্র নারায়ণের আমলে দিনহাটার ভেটাগুড়িতে প্রথম বার ওই মেলার আয়োজন হয়। কোচবিহার জেলা তো বটেই। উত্তরবঙ্গ, নিম্ন অসম, নেপাল, ভুটান থেকে প্রচুর মানুষ মেলায় ভিড় করেন। এ বার দুশো বছরে ভিড় অনেক বেশি হবে বলে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের অনুমান। ওই কারণে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। |
অসম সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মেখলিগঞ্জে সম্প্রতি আইএসআই চর সন্দেহে ৩ জন গ্রেফতার, বক্সিরহাট লাগোয়া অসমের ছাগলিয়ায় সন্দেহ ভাজন কেএলও জঙ্গিদের হামলায় ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ হওয়া, পুজোর আগে শামুকতলায় টাইম বোমা উদ্ধারের ঘটনার কথা মাথায় রেখে এ বার বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “এ বার রাসমেলা দুশো বছরে পা রাখছে। আয়োজনে বৈচিত্র্য রয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় ভিড় বেশি হবে। তাই নিরাপত্তায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অসম সীমান্তে তল্লাশি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তে বি এস এফের সঙ্গে যৌথ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।” এ বার মেলা প্রাঙ্গনে থাকবেন ৮০০ পুলিশ অফিসার এবং কর্মী। তাঁদের মধ্যে ৩৫০ জনকে বাইরের জেলা থেকে আনা হয়েছে। থাকবে সাদা পোশাকে মহিলা পুলিশ। ভিড়ে মিশে থেকে তাঁরা ইভটিজিং ও কেপমারির উপর নজরদারি চালাবেন। প্রবেশ পথে বসানো হচ্ছে ডোরফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর। রাখা হচ্ছে অস্থায়ী থানা, লকআপ, বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড, মেটাল ডিটেক্টর, স্নিফার ডগ, ওয়াচ টাওয়ার, ক্লোজ সার্কিট টিভির ব্যবস্থা। জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “গত বছর ৬টি সিসি টিভি বসানো হয়েছিল। এ বার থাকবে ১০টি। দর্শনার্থীদের সাহায্যের জন্য থাকবে পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার মেলা চলবে ১৮ দিন। দু’টো সার্কাস মেলায় তাঁবু ফেলেছে। মৃত্যুকূপ, টয়ট্রেন, হরেক রকমের নাগরদোলনা, দুই হাজারের বেশি দোকান বসেছে। মুম্বই ও কলকাতার শিল্পীদের এনে জলসার আয়োজন করা হয়েছে। পুরচেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডু বলেন, “দুশো বছরে রাসমেলাকে স্মরণীয় করার প্রস্তুতি প্রায় শেষ। |