নেই শৌচাগার, পানীয় জলের ব্যবস্থা |
পরিকাঠামোর অভাবে খুঁড়িয়ে চলছে মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র |
দিলীপ নস্কর • মগরাহাট |
অভাব রয়েছে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর। পরিকাঠামোর উন্নয়নে হস্তক্ষেপ চেয়ে বার বার প্রশাসনের কাছে আবেদনও জানানো হয়েছে। কিন্তু সুরাহা হয়নি। যার ফলে ব্যাহত হচ্ছে পঠনপাঠন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার মহকুমার মগরাহাট-২ ব্লকের অধীনে গোকর্ণি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে অবস্থা এমনই।
স্কুলছুট ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য ওই মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র ২০০৫ সালে সরকারি অনুমোদন পায়। অনুমোদন পাওয়ার পরে গ্রামে এক ব্যক্তির দান করা জমিতে টিনের চালাঘর তৈরি করে শুরু হয় পঠনপাঠন। পরবর্তীতে স্কুলভবন নির্মাণে সরকারি অনুমোদন পাওয়া যায় ৭ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা। ওই টাকায় চারটি পাকা ঘর তৈরি হয়। সেগুলিতেই বর্তমানে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন চলে। স্কুলের চারজন শিক্ষক-শিক্ষিকার বসার জন্য গ্রামবাসীদের চাঁদায় আরও একটি ঘর তৈরি করা হয়। |
|
এভাবেই চলে মিড-ডে মিলের রান্না।—নিজস্ব চিত্র। |
স্কুলে বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২৫০ জন। কিন্তু পড়ুয়াদের জন্য নেই কোনও শৌচাগার। ব্যবস্থা নেই পানীয় জলের। এমনকী মিড ডে মিল রান্না জন্য কোনও ঘর নেই। কার্যত খোলা জায়গাতেই দূষণের আশঙ্কা সত্ত্বেও চলে রান্না। স্কুলের চারপাশে কোনও পাঁচিল না থাকায় নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কোনও সংস্কার না হওয়ার স্কুলভবনের অবস্থা বিপজ্জনক। বহু জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। চারটি ঘরের স্বল্প পরিসরে কোনওরকমে আড়াইশো পড়ুয়ার পঠনপাঠন চলে। স্কুলে শৌচাগার না থাকায় পড়ুয়াদের বিশেষ করে ছাত্রীদের খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। পানীয় জলের নলকূপ না থাকায় গোকর্ণি বাজার মোড়ে জল খেতে যেতে হয় ছাত্রছাত্রীদের।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সাধনা দত্ত বলেন, “এখানে পড়ুয়াদের মান ভাল। সংখ্যালঘু এলাকায় গ্রামে গ্রামে ঘুরে স্কুলছুটদের নিয়ে এসে ভর্তি করাচ্ছি আমরা। কিন্তু পরিকাঠামোর এত সমস্যা রয়েছে যে ছাত্রছাত্রীদের ধরে রাখাই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি আরও জানান, এখান থেকে অষ্টম শ্রেণিতে পাশ করার পরে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে অন্য বিদ্যালয়ে যেতে হয়। ফলে দূরত্বের কারণে অনেকেই পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। স্কুলের দশম শ্রেণি পর্যন্ত অনুমোদন দেওয়ার জন্য দরবার করা হলেও আজও তা মেলেনি। ফলে ছাত্রছাত্রীদের এই সমস্যা থেকে গিয়েছে। মগরাহাট-২ এর বিডিও রিজওয়ান ওয়াহাব বলেন, “ওই শিক্ষাকেন্দ্রের উন্নয়নের জন্য টাকা আটকে রয়েছে। স্কুলের পরিচালন সমিতির যিনি সম্পাদক তাঁর কোনও ছেলেমেয়ে সেখানে পড়ে না। ফলে নিয়মানুযায়ী তাঁর পদ বৈধ নয়। এই জটিলতার কারণেই সমস্যা হচ্ছে। তবে শীঘ্রই বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে।”
অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাপরিষদ) অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, “ওই শিক্ষাকেন্দ্রটির পরিকাঠামোর বিষয়ে জানার পরে জেলা পরিষদ থেকে ২ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে যাতে আরও সাহায্য করা যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।” |
|