ধন্দে পুলিশ এবং পুরাতত্ত্ব বিভাগ
সিরাজ-সমাধির প্রাচীর ভাঙল কে
বাব সিরাজদ্দৌলার সমাধিক্ষেত্র খোসবাগে তাণ্ডব চালাল দুষ্কৃতীরা। সমাধিক্ষেত্র দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ।
ভাগীরথীর পশ্চিমপাড় লাগোয়া খোশবাগে শনিবার গভীর রাতে ওই সমাধিক্ষেত্রে বিশেষ করে যে ঘরে নবাব সিরাজের সমাধি রয়েছে, সেই ঘর লাগোয়া উত্তর দিকে কংক্রিটের ১১টি খুঁটির সঙ্গে লাগানো প্রায় ৫০ ফুট লম্বা কাঠের পাঁচিল ভেঙে ফেলে দুষ্কৃতীরা। সেই সঙ্গে সমাধিক্ষেত্রের ঘরের উত্তর দিকের কাঠের দরজাও ভেঙে দুষ্কৃতীরা মাঠের মধ্যে ফেলে রেখে যায়। এ নিয়ে মুর্শিদাবাদ থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুর্শিদাবাদ, লালবাগ) মৃণাল মজুমদার বলেন, “সমাধিক্ষেত্র লাগোয়া ৫০ ফুট লম্বা কাঠের রেলিংগুলো ভেঙে ফেলে দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনায় ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের তরফে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কেউ গ্রেফতার হয়নি।”
কে ভাঙল প্রাচীর
খোশবাগে সিরাজদৌল্লার সমাধিক্ষেত্রের ভগ্নস্তূপের
পাশে পর্যটকেরা। সোমবার। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
ওই সমাধিক্ষেত্রে মোট ৩৪ জনের সমাধি রয়েছে। তবে খোসবাগের সমাধিক্ষেত্রের যেখানে দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালায়, সেখানে রয়েছে ৮ জনের সমাধি। তার মধ্যে নবাব সিরাজদ্দৌলা, তাঁর দাদু নবাব আলিবর্দি খাঁ, সিরাজদ্দৌলার স্ত্রী লুৎফুন্নেসা ও মেয়ে উম্মত জহুরার সমাধি রয়েছে। রবিবার বিষয়টি সকলের নজরে আসে। তার পরেই ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের অদীনে থাকা মুর্শিদাবাদ সাব-সার্কেল কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। ২০১০ সালের ১১ অগস্ট হাজারদুয়ারি সংগ্রহশালা থেকে প্রায় দেড়শো বছরের প্রাচীন মিশ্র ধাতুর তৈরি কব্জি থেকে হাতের তালুর মত দেখতে তিনটি আলম পাঞ্জা চুরি করে নিয়ে দুষ্কৃতীরা। ঊনবিংশ শতাব্দীর নবাব হুমায়ুন জাঁ এবং নবাব নাজিম ফেরাদুন জাঁ-এর আমলের ওই পাঞ্জাগুলি ধর্মীয় গ্যালারির কাঁচের আলমারি ভেঙে দুষ্কৃতীরা চুরি করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনার তদন্তে করে সিআইডি। কিন্তু এখনও ঐতিহাসিক পাঞ্জাগুলির সন্ধান মেলেনি।
খোশবাগের ওই সমাধিক্ষেত্রের দায়িত্বে রয়েছেন মুর্শিদাবাদ সাব-সার্কেলের কনজারভেন্স অ্যাসিস্ট্যান্ট শেখর দত্ত। তাঁর অনুপস্থিতিতে সার্কেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘ফোরম্যান’ হরিপ্রসাদ সিংহ বলেন, “রবিবার ঘটনার খবর পেয়ে মুর্শিদাবাদ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।”
খোশবাগে সিরাজদ্দৌলার সমাধিক্ষেত্রে দেখতে আসা পর্যটকরা ভেঙে পড়া কাঠের পাঁচিল দেখে বিষ্ময় প্রকাশ করেন। কলকাতার কসবার বাসিন্দা বেসরকারি কোম্পানীর কর্মী কানাই ব্রজবাসী বলেন, “ঐতিহাসিক এই ধরণের সমাধিক্ষেত্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর হওয়া উচিত।” ওডিশায় কর্মরত কলাকাতার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, “সমাধিক্ষেত্রে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের মত ঘটনা পর্যটন শিল্পের পক্ষে ভাল বিজ্ঞাপন নয়। পুলিশ ও প্রশাসনের ভেবে দেখা উচিত।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.