ইডেনে ডেক্সটারকে স্বাগত লর্ডস ব্যালকনিতে
সৌরভের জামা নাচানো ছবিতে
ংল্যান্ডের ক্রিকেটে আজও যদি প্লেয়ার্স আর জেন্টলম্যান— সামাজিক দুই শ্রেণি অবশিষ্ট থাকত। তিনি টেড ডেক্সটার অবধারিত হতেন জেন্টলম্যান শ্রেণিভুক্ত! কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জেসাস কলেজের স্নাতক ডেক্সটার পড়াশোনা করেছেন পঞ্চাশের দশকে যখন এই প্রথা অবলুপ্ত হওয়ার পথে। তবু ইংল্যান্ড অধিনায়ক হওয়ার পরেও অদৃশ্য ভাবে তিনি বহাল রেখেছিলেন শ্রেণিবিভাগের সেই দেওয়াল। সেই লংরুম। সেই লর্ডসের ঐতিহ্য। সেই থ্রি-পিস স্যুট পরা মেম্বার্স এনক্লোজার। সেই দু’ধরনের ক্রিকেটার। একদল যারা টাকার জন্য খেলে— শ্রমিক। একদল যারা উন্নত সামাজিক শ্রেণির, স্রেফ আনন্দের জন্য খেলে— অভিজাত ভদ্রলোক। তা ইডেনে আসন্ন ভারত-ইংল্যান্ড টেস্টের প্রধান অতিথি ডেক্সটার যখন সিএবি ক্লাবহাউসের দোতলার সিঁড়ি বেয়ে তাঁর আসনের দিকে উঠবেন, ঐতিহ্যের বার্লিন প্রাচীর ভেঙে দেওয়া একটা ছবি তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য অপেক্ষা করবে! ক্রিকেটে বর্ণাশ্রম ভেঙে দেওয়া যুগান্তকারী একটা ছবি।
শীতের সিএবি সাজতে যাচ্ছে সৌরভের জার্সি ওড়ানোর ছবিতে। —ফাইল চিত্র
ছবিটা লর্ডসের ব্যালকনিতে ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত তখনকার ভারত অধিনায়কের। পাশের কাচের ক্যাবিনেটে সেই নিরানব্বই নম্বর জার্সি। যা পরে ন্যাটওয়েস্ট ফাইনালে খেলেছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আর শুধু খেলেনইনি। খেলার পরেও এমন কিছু করেছিলেন যা সে দিনের ৬০ রানের চেয়েও অসীম তাৎপর্যপূর্ণ।
বিশিষ্ট ইংরেজ ক্রিকেটলিখিয়েরা মনে করেন, ভারত বিলেতের ক্রিকেট মাঠে সাম্রাজ্যবাদের দ্বারা শাসিত হওয়ার হীনমন্যতা কাটিয়ে ওঠে ২০০২-এর ট্রেন্টব্রিজ টেস্টে। খাতায়-কলমে যদিও ভারতের ইংরেজ শাসন শুরু একাত্তরের অজিত ওয়াড়েকরের টিমের সিরিজ জয় দিয়ে। এর পরেও ভারত ১৯৮৬-তে কপিল দেবের নেতৃত্বে সিরিজ জিতেছে। তা সত্ত্বেও হেডিংলে তাৎপর্যপূর্ণ কেন? না, টিপিক্যাল ইংলিশ পরিবেশে কঠিন পরিস্থিতিকে জয় করে ভারত ওই টেস্ট ইনিংস ও ৪৬ রানে জেতে। সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনজন। সচিন, রাহুল, সৌরভ।
ভারতীয় ক্রিকেট সমালোচকের কাছে অবশ্য হীনমন্যতার পোস্টারের প্রকাশ্য অবলুপ্তি ন্যাটওয়েস্ট ফাইনালের পর। যখন জয়ের আনন্দে এবং ফ্লিনটফকে উত্তর দিতে লর্ডস ব্যালকনিতে জার্সি খুলে নাচাতে থাকেন সৌরভ। পরবর্তী কালে সৌরভ নিজেই একাধিক বার বলেছেন, এই আচরণের জন্য তিনি মোটেও গর্বিত নন। কিন্তু গরিষ্ঠ ক্রিকেটপ্রেমী তা মনে করে না। বরঞ্চ দৃশ্যটাকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছে।
ক্লাবহাউসে সোমবার এসে গেল সেই জার্সি। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
সিএবি আসন্ন টেস্টের আগে অসীম তাৎপর্যপূর্ণ সেই ছবিটা লাগাচ্ছে ঠিক দোতলার সিঁড়িতে। সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া সপ্তাহখানেক আগে ছবি লাগানোর অনুমতি দেন। এর পর উদ্যোগ নিয়েছিলেন কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে। সোমবার দুপুরে সৌরভের বাড়ি থেকে সেই জার্সি পৌঁছে দেওয়া হয় ইডেনে কোষাধ্যক্ষের কাছে। শুধু সৌরভের এই ছবি আর জার্সিই নয়। পঙ্কজ রায়ের একটা বহু পুরনো ব্লেজার সিএবি-র কাছে পড়েছিল। ১৯৫৯-এর লর্ডস টেস্টে এই ব্লেজার পরে তিনি টস করতে গিয়েছিলেন পিটার মে-র সঙ্গে। ওই একটাই টেস্টে ভারতের অধিনায়কত্ব করেছিলেন পঙ্কজ।
আসলে ইডেন টেস্টের আগে অঙ্গসজ্জার মধ্যে বঙ্গক্রিকেটের দুটো ভিন্ন যুগের দুই মহানায়ককে সম্মান জানানোও এ বার অন্যতম লক্ষ্য।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.