সংকট, ভয়, বিপন্নতা ইংরেজি ‘ক্রাইসিস’ শব্দটির মধ্যে মিলেমিশে রয়েছে সব কিছুই। ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক বা সমাজজীবন সব স্তরেই আজকের এই অস্থির সময়ে লুকিয়ে রয়েছে ক্রাইসিস। রাগ-অনুরাগ মিউজিক রিসার্চ অ্যাকাডেমি এই বিষয়-কেন্দ্রিক একটি বিন্যাস তৈরি করেছেন কথায়, গানে এবং যন্ত্রের সুরে, যা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল মহাজাতি সদনে। পুরো মঞ্চ জুড়ে সমবেত বিন্যাস। মঞ্চে শিল্পীদের দাঁড়ানো, দু’ পাশে যন্ত্রীরা, আলোর মায়া, পোশাক সব মিলিয়ে খুব জমকালো প্রযোজনা। অনুষ্ঠানটি দেখতে দেখতে যেন এক অন্য জগতে পৌঁছে যেতে হয়। কোনও স্বপ্নের দেশে নয়, কঠিন বাস্তবের এক জগতে। যেখানে নির্দ্বিধায় বলা যায়, সন্ত্রাসের শেষ হবে কবে? এর থেকে রেহাই পেতে মরিয়া সাধারণ ও নিরীহ মানুষ। সন্ত্রাসের বাইরেও অক্টোপাসের মতো ঘিরে রয়েছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, অনাচার, অত্যাচার ও ভ্রষ্টাচার। |
এই অনুষ্ঠানে সেই সব মূল সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজেছেন স্মৃতি লালা, শুধু মাত্র সঙ্গীতকেই অবলম্বন করে। গানের বাণীতে জীবনের সুর। ‘সংকট মোচনের লক্ষ্যে সঙ্গীতের প্রয়োগ।’ বড় কঠিন কাজ। তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। বারবার তাঁরা বলতে চেয়েছেন, ক্রাইসিস থেকে রেহাই পেতে প্রয়োজন ‘মানুষের মনের শুদ্ধিকরণ’। এই সংযোজনায় যেমন রাখা হয়েছে সপ্তসুর। ভুল পদক্ষেপ বা অন্যায়ের শিকার হয়ে অনেকেই আর সঠিক পথের দিশা পান না। সপ্তসুর সেখানে আলোর দিশা দেখাবে। বিদেশে ইতিমধ্যেই এর সমাদর খুবই বেড়েছে।
এ দিন এই অনুষ্ঠান শুধু সপ্তসুরেই সীমাবদ্ধ ছিল না। অস্থিরতা ও অশান্তির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে কবিদের কলমে ধরা পড়েছে মূল্যবান কিছু কবিতা। সন্ত্রাস নিরসনে সেই সব কবিতার কিছু বাছাই করা অংশ এ দিন সঙ্গীতের মূল ভাবনার সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। গান-কবিতা-যন্ত্রের ঐকতানে যার মূল কথা শান্তি, স্বস্তি ও সহাবস্থান। অসামান্য অভিজ্ঞতা। উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে নাম না পাওয়ায় আলাদা করে কারও কথা বলা গেল না। এই সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি নির্মাণ ও নির্দেশনার দায়িত্ব স্মৃতি লালার। ক্রাইসিসের মতো একটি প্রয়োজনীয় ও সমসাময়িক বিষয় বেছে নেওয়ার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দিতেই হয়। |