|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
স্ট্যান্ডও বেআইনি |
রমরমিয়ে শাট্ল |
কাজল গুপ্ত |
সরকারি বাসস্ট্যান্ড। কাছের ও দূরপাল্লার সরকারি ও বেসরকারি বাস দাঁড়ানোর কথা। কিন্তু সে সব বাসের পাশাপাশিই ঠাঁই হয়েছে অসংখ্য চার চাকার গাড়ির। সে সব গাড়ি অবশ্য ‘শাট্ল’ বলেই পরিচিত। গত কয়েক মাস ধরে সেখান থেকেই চলছে যাত্রী ওঠানো-নামানোর কাজ।
ঘটনাস্থল বিধাননগরের করুণাময়ী মোড়ে সরকারি বাসস্ট্যান্ড। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি বাসস্ট্যান্ডে শাট্ল গাড়ির স্ট্যান্ড করার কোনও অনুমতি আছে কি? অভিযোগ উঠেছে, বেআইনি কাজ হচ্ছে দেখেও প্রশাসন নিশ্চুপ। প্রশাসনের চোখের সামনেই রোজ এই ঘটনা ঘটে চললেও তাদের বক্তব্য, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ট্রাফিক দফতরের দাবি, তারা কোনও অনুমতি দেয়নি। পরিবহণ দফতরের কাছেও এই বিষয়টি অজানা। |
|
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “শাট্ল গাড়ির তো কোনও স্বীকৃতিই নেই, কাজেই স্ট্যান্ড করার কোনও প্রশ্নই উঠছে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছি।” অভিযোগের জবাবে শাট্ল গাড়ির চালকদের একাংশের দাবি, মেট্রো প্রকল্পের কাজ চলায় করুণাময়ী মোড়ের পাঁচ নম্বর সেক্টরমুখী লেন থেকে সরিয়ে সরকারি স্ট্যান্ডে রাখা হয়েছে। তবে তাঁদের দাবি, তাঁরা স্ট্যান্ডের ভিতর থেকে যাত্রী ওঠানো-নামানোর কাজ করেন না। বিধাননগরে অফিসপাড়া ও পাঁচ নম্বর সেক্টরের সরকারি ও বেসরকারি অফিস মিলিয়ে লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। ফলে গাড়ির চাপও বেড়েছে গত কয়েক বছরে। কিন্তু তুলনায় বাসের সংখ্যা কম। সে সুযোগে গজিয়ে উঠেছে শাট্ল ব্যবসা। করুণাময়ী থেকে গড়িয়া, পার্ক সার্কাস, গড়িয়াহাট, আবার কখনও উত্তরে ডানলপ পর্যন্ত এই শাট্ল গাড়ি যাতায়াত করছে।
তবে কলকাতার অন্যান্য অংশের তুলনায় বিধাননগরে শাট্ল ব্যবসার ফারাক অনেকটাই। যে মোড়ে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডও নেই, সেখানে করুণাময়ীর মোড়ে একটি সার্ভিস রোডে দীর্ঘ দিন ধরেই চলছে শাট্লের ব্যবসা। যাত্রীদের অভিযোগ, দক্ষিণ কলকাতার দিকে তুলনায় বাসের সংখ্যা কম। তাই কম সময়ে যাওয়ার জন্য অনেকেই এই শাট্ল গাড়ি ব্যবহার করেন। আগে করুণাময়ী মোড়ের কাছে সার্ভিস রোডে গাড়ি থাকত। এখন এই সরকারি বাসস্ট্যান্ডেও শাট্ল স্ট্যান্ড হয়েছে। |
|
এই শাট্লে চড়েই কর্মসূত্রে রোজ করুণাময়ী যাতায়াত করেন গড়িয়াবাসী মনোজ সরকার। তাঁর কথায়: “বৈধ কি অবৈধ জানি না। বাস কম, ভিড় ততোধিক। বাধ্য হয়েই শাট্ল ধরতে হয়। কম সময়ে অফিস যেতে পারব। আমি রোজই করুণাময়ীর স্ট্যান্ড থেকে শাট্ল ধরি।” প্রায় একই দাবি পাটুলির বাসিন্দা গৌতম সেনের। তাঁর দাবি, “সরকার নিজে পরিবহণের ব্যবস্থা করতে পারছে না। শাট্লে ভাড়া এক লাফে ৫-১০ টাকা বেড়ে যায়। নিয়ন্ত্রণ করার কেউ নেই। কিন্তু আমাদেরও কিছু করার নেই। বাধ্য হয়েই বেশি ভাড়ায় যাতায়াত করি।”
অটোচালকদের একাংশের অভিযোগ, ওই বাসস্ট্যান্ড দেখভালের কেউ নেই। করুণাময়ী আবাসনের উল্টো দিকে এই স্ট্যান্ডের এক অংশ ফাঁকা ছিল। শাট্ল চালকেরা তা দখল করে বসে আছে। যদি সরকারি স্ট্যান্ডে শাট্ল গাড়ি থাকতে পারে, তা হলে তাঁরাও বা সেখানে অটো রাখতে পারবেন না কেন? বিধাননগরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) প্রণব কুমার বলেন, “আমরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ি রাখার কোনও অনুমতি দিইনি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (পরিবহণ) অশেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই বাসস্ট্যান্ড দেখভালের দায়িত্ব পরিবহণ দফতরের। ফলে আমাদের করণীয় কিছু নেই। এ ক্ষেত্রে পুরপ্রশাসনের অনুমোদন দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।” |
|
|
|
|
|