|
|
|
|
|
|
|
খুশিতে বাঁচুন |
|
ঘুমোন নিয়মমতে
শুধু শরীরচর্চাই নয়, ঘুমও জরুরি। জানাচ্ছেন রণদীপ মৈত্র |
|
নিয়মিত শরীরচর্চা করছেন। জিমেও যান। কিন্তু ঠিকমতো ঘুমোচ্ছেন কি? উত্তর ‘না’ হলে, নানা সমস্যা হতে পারে। এ বার তা নিয়েই বলব।
সাধারণ থেকে সেলিব্রিটি অনেকেই ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। শুধু ক্লান্তিই নয়, ঘুমের সমস্যা থেকে ঘাড়ে, পিঠে ব্যথা, অস্থি ও মাংসপেশির নানা সমস্যাও হতে পারে।
ব্যস্ত জীবনে আমরা অনেক সময়েই ঘুমে অবহেলা করি। ঘুমোতে অনেক দেরি করি, অল্প ঘুমোই। আমাদের শরীর কিন্তু প্রাকৃতিক নিয়মে চলে। রাত নামলে শরীরের দরকার ঘুমের। এই স্বাভাবিক প্রাকৃতিক চক্রকে ‘সারকাডিয়ান সাইকেল’ বলে। জীবিকা, সামাজিকতা রক্ষা, নানা বিনোদন ইত্যাদি নানা কারণে অনেকেই ঠিক সময়ে ঘুমোন না। তা ছাড়া কৃত্রিম আলো, শব্দের দাপটেও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে এ ভাবে প্রাকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধে চললে মানসিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায়।
ঘুম নিয়ে কিছু ভুল ধারণাও রয়েছে। যেমন, অনেকেই মনে করেন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমোতে পারলেই হল। কিন্তু কখন ঘমোচ্ছেন তাও খেয়াল রাখা দরকার। রাত দু’টোয় শুয়ে সকাল ন’টায় ওঠা মানেই কিন্তু ঠিকমতো ঘুমোনো নয়। এর পরেও দেখবেন অনেকেরই সন্ধ্যায় মাথা ধরছে, মনঃসংযোগে সমস্যা হচ্ছে, ভুলে যাওয়া, ত্বকে সংক্রমণের মতো সমস্যাও দেখা যায়। ব্যায়াম কিন্তু এ সমস্যাগুলির সমাধান নয়। |
|
আলো আর অন্ধকার আমাদের শরীরে প্রভাব ফেলে। ত্বকে, চোখে আলো পড়লেই মস্তিষ্ক মনে করে ভোর হয়েছে। তখন কোর্টিসল হরমোন নিঃসরণ শুরু হয়। এই হরমোন শরীরকে মানসিক চাপ মোকাবিলায় সাহায্য করে। এতে হাঁটাচলা, নানা ধরনের উত্তেজনার জন্য শরীর তৈরি হয়ে যায়। যত দিন যায়, আলো বাড়ে, কোর্টিসল নিঃসরণও বেড়ে চলে। আলো পড়ে এলে শরীরে মেলাটিনিন, সেরাটিনিন ক্ষরণ শুরু হয়। এ দু’টি হরমোন শরীরের নানা ক্ষয় মেরামত করে, বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ঠিক সময়ে না শুলে এই হরমোন নিঃসরণ চক্রে সমস্যা হয়, শরীর দুর্বল হতে শুরু করে। এই বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের দুর্বল শরীরে সহজে নানা সংক্রমণ ঘটে।
তা হলে কখন শোবেন?
শরীর ঠিক রাখতে গেলে রাত দশটার মধ্যেই শুয়ে পড়ুন। ঘুমোন আট ঘণ্টার মতো। এর মধ্যে রাত দশটা থেকে দু’টো পর্যন্ত শারীরিক ক্ষতির মেরামতি চলে। কোনও ভাবে অস্থি, মাংসপেশিতে আঘাত লাগলে বা অস্ত্রোপচার হলে এ সময়টুকুর ঘুম খুবই জরুরি। দু’টোর পরে শুরু হয় মানসিক ক্ষয়ক্ষতির মেরামতি।
শেষ করব ভাল ঘুমের কতগুলি টিপ্স দিয়ে:
• যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঘুমিয়ে পড়ুন। ঘুমের আগে বই পড়া বা গান শোনার অভ্যাস থাকলে আরও আগে শুয়ে পড়ুন।
• ঘুমের বেশ কিছু ক্ষণ আগে উজ্বল আলো নিভিয়ে দিন। বিশেষ করে ফ্লুরোসেন্ট আলো থাকলে ঘুমের দু’ঘণ্টা আগে নিভিয়ে দিন।
• যতই ভয় লাগুক সম্পূর্ণ অন্ধকার ঘরে ঘুমোন। আলো এড়ানোর জন্য ভারী পর্দা ব্যবহার করুন।
• বেশি রাতে চা, কফি খাবেন না।
• প্রচুর জল খান।
• ঘুমের আগে বেশি শরীরচর্চা করবেন না। বিশেষ করে ৩০ মিনিটের বেশি কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম করবেন না। এতে কোর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে, ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে।
• বিছানার কাছে যে সব বিদ্যুৎচালিত যন্ত্র রয়েছে তা বন্ধ করে দিন। এ যন্ত্রগুলি বিছানা থেকে দূরে রাখাই ভাল। |
|
|
|
|
|