সাহায্যে অপারগ রাজ্য
পরিবারের জমিতেই গনির নামে প্রতিষ্ঠান
মির অপ্রতুলতার যুক্তি দেখিয়ে রায়গঞ্জে কেন্দ্রের প্রস্তাবিত এইমস হাসপাতাল সরিয়ে দক্ষিণবঙ্গে আনার জন্য অনেক দিন ধরেই সচেষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। একই সঙ্গে মালদহে ‘গনি খান চৌধুরী ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি’র (জিকেসিআইইটি) জন্য জমি দিতেও কেন্দ্রকে অপারগতার কথা জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত জানার পরেও প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এ দিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গনি খানের পরিবারের দান করা একশো একর জমিতেই ওই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে এ-ও জানিয়ে দেওয়া হল, প্রতিষ্ঠানটির জন্য আরও দেড়শো থেকে দু’শো একর জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হবে। সঙ্গেই কলকাতা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণের জন্য এ দিন আরও ৩২৩ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।
গত কালই কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়ে মালদহের ইংলিশবাজারের বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীকে রাজ্য মন্ত্রিসভায় সামিল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। তার মধ্যে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে কঠোর রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তৃণমূল অনাস্থা প্রস্তাব আনার বিষয়টি ঘোষণা করার পর থেকেই অসন্তুষ্ট সনিয়া গাঁধী।
দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে নামার ব্যাপারে তিনি ইতিমধ্যেই নির্দেশও দিয়েছেন। রাজনীতির কারবারিদের মতে, আজ যে ভাবে মালদহে গনি খানের নামাঙ্কিত প্রযুক্তি ও কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার ব্যাপারে প্রত্যয় দেখালো কেন্দ্র, তাতে স্পষ্ট যে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্বের হাত শক্ত করতেই চাইছেন কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরপরই মালদহের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও সনিয়া গাঁধীকে নিয়ে মালদহে শীঘ্রই রাজনৈতিক সভা করার চেষ্টা করব।”
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর আজ সরকারি সূত্রে বলা হয়, ২০০৮ সালে মালদহে প্রয়াত গনি খান চৌধুরীর নামে ওই প্রযুক্তি ও কারিগরী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। রাজ্যে তখন ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট সরকার। স্থির হয়েছিল যে, আড়াইশো থেকে তিনশো একর জমিতে ওই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে।
এর মধ্যে রাজ্য দেড়শো থেকে দু’শো একর অকৃষি জমি বিনামূল্যে দেবে। কেন্দ্রের সেই প্রস্তাবে রাজিও হয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার। রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে জানিয়ে দেয়, তারা সংশ্লিষ্ট এলাকায় ওই পরিমাণ অকৃষি জমি ঠিক মতো খুঁজে পাচ্ছে না।
বরকত পরিবার নিজেদের উদ্যোগে মালদহে জমি কেনার যে চেষ্টা শুরু করেছিল, তাতে অবশ্য রাজ্য সরকারের তরফে কোনও বাধা দেওয়া হয়নি। জমির ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বক্তব্য জানার পর আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্থির হয়, মালদহের বর্তমান সাংসদ যে একশো একর জমির বন্দোবস্ত করেছেন, সেখানেই ওই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কাজ এ বার শুরু করে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগে উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ জানিয়ে দিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার যা-ই বলুক, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ইচ্ছা অনুযায়ী, রায়গঞ্জেই গড়ে তোলা হবে এইমস হাসপাতাল।
আজ মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে কংগ্রেস ফের নিজের কঠোর মনোভাবটাই স্পষ্ট করে দিল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.