দুর্গাপুজো তাঁদের সে ভাবে টানে না। ওঁরা, কান্দির কাগ্রামের বাসিন্দারা সারা বছর হাপিত্যেশ করে অপেক্ষা করে থাকেন জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য। পুজো উপলক্ষে কেবল কাগ্রামের মানুষেরাই আনন্দে মেতে ওঠেন না, পড়শি জেলা বর্ধমানের কাটোয়া থেকেও অনেকেই আসেন পুজো দেখতে। এমনটাই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হয়ে জগদ্ধাত্রীর আরাধনা। এ বছর পারিবারিক ও বারোয়ারি মিলিয়ে মোট ১৯টি পুজো হচ্ছে। পুজো উপলক্ষে ওই গন্ডগ্রাম সেজে ওঠে বাহারি সব আলোকসজ্জায়। প্রথম রাতে পুজোর শেষে মণ্ডপে মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয় যাত্রাপালা, বাউলগান। কোথাও আবার বিচিত্রানুষ্ঠানও হয়। এলাকার আট থেকে আশি সকলেই মেতে ওঠেন এই উৎসবের আনন্দে। |
পুজোতে রকমারি আলোকসজ্জা ও বাদ্যযন্ত্র দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। সপ্তমী ও অষ্টমীর পুজোর পর নবমীর পুজোর আগে প্রত্যেক পুজোর উদ্যোক্তারা ঢাক, ঢোল, তাসা সহযোগে গোটা গ্রাম পরিক্রমা করেন। একে পুজোর উদ্যোক্তারা অন্য মণ্ডপে গিয়েও এই বাদ্যযন্ত্র বাজান। স্থানীয় ভাষায় একে বলা হয় দুপুর মাতান। পুজোকে ঘিরে গ্রামের প্রত্যেক পরিবারে আত্মীয়-স্বজনের ঢল নামে। রুজির টানে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়া মজুরেরাও পুজোর দিনে বাড়ি আসেন। পুজোর পরের দিন রাতে শুরু হয় বিসর্জন। রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে গ্রামের সমস্ত প্রতিমা এক জায়গায় জমা হয়। তারপর রাতভর গোটা গ্রাম পরিক্রমা করে ওই প্রতিমা।
গ্রামের সবচেয়ে প্রাচীন পুজো হল মহাশয় বাড়ির পুজো। প্রায় ১৫৬ বছর আগে শুরু হয় সেই পুজো। ওই পরিবারের বর্তমান সদস্য জহরলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “মহাশয় বাড়ির পুজো গ্রামের সব থেকে পুরনো। এখন অবশ্য অনেক পুজো হয়।” গ্রামবাসী নারায়ণ ঘোষ বা পার্থপ্রতিম পাল বলেন, “পুজোতে চাঁদার জুলুমের কোনও বালাই নেই। সাধ্য অনুযায়ী যে যেমন পারেন চাঁদা দেন। এটাই পুজোর মূল বৈশিষ্ট।” পুজোতে নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় তার জন্য গ্রামে টহল দিচ্ছে শ’খানেক পুলিশকর্মী। কাগ্রাম অঞ্চল প্রধান কংগ্রেসের বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “গ্রামের সমস্ত মানুষ শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে পুজোর দিন গুলিতে আনন্দে মেতে ওঠেন। এই পুজো আমাদের শারদোৎসব। |