|
|
|
|
অধীরের কাছে যাচ্ছে কংগ্রেসের দল |
কাজই শুরু হয়নি ঘোষিত রেল প্রকল্পের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
রেলশহর খড়্গপুরের উন্নয়ন নিয়ে দরবার করতে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর দ্বারস্থ হচ্ছে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদল। দলে থাকবেন প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডে, শহর কংগ্রেস সভাপতি অমল দাস প্রমুখ। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বও ইতিমধ্যে এই পদক্ষেপে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দলটির দিল্লিতে গিয়ে অধীরবাবুর সঙ্গে দেখা করার কথা। জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবে বলেন, “খড়্গপুর থেকে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল দিল্লি গিয়ে রেল প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবে। আগে অনেক ঘোষণা হয়েছে। তবে কাজ হয়নি। ঘোষিত প্রকল্পের কাজ যাতে দ্রুত শুরু হয়, মন্ত্রীর কাছে সেই আর্জিই জানানো হবে।”
রেলমন্ত্রী থাকাকালীন একাধিকবার খড়্গপুরে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু শহর কংগ্রেসের অভিযোগ, ঘোষিত প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। খাতা-কলমেই রয়েছে প্রকল্পগুলি। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে কিছুটা চাপে রাখতেই কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের এই দিল্লি যাত্রার সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শহর কংগ্রেস সভাপতি অমলবাবু বলেন, “আমরা যাচ্ছি, শহরের উন্নয়ন নিয়ে কয়েকটি আর্জি জানাতে। যে সব প্রকল্পের কথা আগে ঘোষণা করা হয়েছে, তার কাজ দ্রুত শুরু করার আবেদন জানাতে।” তাঁর দাবি, “কংগ্রেস শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েই থেমে থাকে না। যেটা বলে সেটা করে।” রেলশহরের উন্নয়নে বরাবরই রেলের ভূমিকা রয়েছে। খড়গপুরের বড় অংশ জুড়েই রয়েছে রেল এলাকা। আগে এই এলাকা পুরসভার অন্তর্ভুক্ত ছিল না। সামান্য পরিষেবা পেতেও রেল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হতে হত। তবে বছর দু’য়েক আগে পরিস্থিতি কিছুটা বদলায়। রেল এলাকা এখন পুরসভার অন্তর্ভুক্ত। নতুন করে ৮টি ওয়ার্ডও তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে খড়গপুর শহরে এখন ৩৫টি ওয়ার্ড। পুরসভা সূত্রে খবর, রেল এলাকায় ছোট বড় মিলিয়ে ২৬টি বস্তি রয়েছে। প্রায় ৮ হাজার মানুষ এখানে থাকেন। মূলত গোলবাজার, ওল্ড সেটেলমেন্ট, নিউ সেটেলমেন্ট, ট্রাফিক, মথুরাকাটি, নিমপুরা প্রভৃতি এলাকা নিয়েই বস্তি তৈরি হয়েছে। গোলবাজারের আজাদ বস্তিতেই কয়েকশো মানুষের বসবাস।
এক সময় উচ্ছেদ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল বস্তিবাসীদের মধ্যে। আশঙ্কা ছিল, রেলের জমি থেকে গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করা হবে। এখন অবশ্য সেই উদ্বেগ আর নেই। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন শহরে এসে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ঘোষণা করেছিলেন, উচ্ছেদের প্রশ্ন নেই। বরং বস্তির বাসিন্দাদের জন্য রেল জমি দেবে। সেই জমিতে পুরসভা বাড়ি তৈরি করবে। তবে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলেই অভিযোগ কংগ্রেসের। তাদের বক্তব্য, এ নিয়ে কমিটি তৈরি হলেও কাজ এগিয়েছে নামমাত্র। অন্য দিকে, ২০১০ সালের অক্টোবরে অ্যাডভান্সড লোকো পাইলট ট্রেনিং সেন্টারের শিলান্যাস হয়েছিল খড়্গপুরে। শহরের চাঁদমারি এলাকায় রেলের বেশ কিছুটা জমি রয়েছে। এখানেই গড়ে ওঠার কথা পাইলট ট্রেনিং সেন্টার। শহর কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “শুধু লোকো পাইলট ট্রেনিং সেন্টার নয়, সেই সময় এমন কত প্রকল্পেরই তো ঘোষণা করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, প্রস্তাবিত প্রকল্প হলে প্রচুর মানুষ কাজ পাবেন। এলাকার পরিবেশ পাল্টে যাবে। কিন্তু, কোথায় কী?” তাঁর কথায়, “চমক দিতেই সেই সময় এই সব প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছিল। আমরা শুধু ঘোষণায় থেমে থাকতে চাই না। কাজ চাই। সেই আবেদন জানাতেই মন্ত্রীর কাছে যাচ্ছি।” |
|
|
|
|
|