সামান্য পাট কাঠিকে সম্বল করে দাঁতাল হাতির হামলা থেকে প্রাণে বাঁচল ডুয়ার্সের এক কৃষক। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে কালচিনি ব্লকের উত্তর মেন্দাবাড়ি গ্রামের পশ্চিম পাড়ায়। মানুষকে ভয় পাওয়ার মধ্যে হাতির স্বভাবে অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। বুধবার রাতে বাড়ি ফেরার সময় আচমকা এক দাঁতালের সামনে পড়ে যান উত্তর মেন্দারবাড়ির বাসিন্দা চন্দ্র কার্জি। হাতিটি তাঁকে ভয় দেখানোর জন্য সামনের পা দিয়ে তাঁর দিকে ধুলো ছিটিয়ে তেড়ে এলেও প্রাণ বাঁচাতে হাতে থাকা প্রায় ৭-৮ ফুট লম্বা একটি পাট কাঠি দিয়ে হাতির মাথায় খোঁচা মারেন চন্দ্রবাবু। তাতেই হাতিটি ভয়ে পালিয়ে যায় বলে চন্দ্রবাবুর দাবি। হাতি বিশেষজ্ঞ পার্বতী বড়ুয়া বলেন, “উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় হাতির সাথে মানুষের সংঘাত লেগে থাকে। মানুষ যেমন হাতিকে ভয় পায়। সেরকম হাতিরাও মানুষদের ভয় পায়। বুধবার রাতে চন্দ্র বাবুর দিকে দাঁতালটি পা দিয়ে ধুলো ছিটিয়ে তাকে সর্তক করে। ওই এলাকা ছেড়ে চলে যাবার ইঙ্গিত দিয়েছিল।চন্দ্রবাবু সেখান থেকে না যাওয়ায় হাতিটি তাঁর দিকে এগিয়ে যায়। সেই সময় চন্দ্রবাবু তাঁর হাতে থাকা পাটকাঠিটি দিয়ে হাতির মাথায় খোঁচা মারেন। সেই সময় পাটকাঠিটি ভেঙ্গে যায়।” পার্বতী বড়ুয়ার ধারনা, পাটকাঠি ভাঙলে মট করে যে শব্দ হয় তাতেই হাতিটি ভয় পেয়েছে। তাঁর কথায়, “এটা হাতির স্বাভাবিক আচরণের মধ্যে পড়ে। কারণ, ধুলো ছিটিয়ে হাতি জানানোর চেষ্টা করেছিল সে আক্রমণ করতে চায় না। শুধু ভয় দেখাতে চায়। তাই পাটকাঠির ভাঙার আওয়াজে ভয় পেয়ে সে এলাকা ছেড়ে চলে যায়।” চন্দ্র কার্জি জানান, বুধবার রাতে এক আত্মীয়র বাড়িতে বিয়ের রান্না করে বাড়ি ফিরছিলেন। পাশে একটি বাড়িতে দাড়িয়ে গল্প করার সময় হাতির আওয়াজ পান। রাতে তাঁর সঙ্গে টর্চ না থাকায় সাপের ভয়ে ওই বাড়িটি থেকে একটি পাট কাঠি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে বেড়িয়ে পড়েন। বাড়িটি থেকে বের হতেই তাঁর ফুট বিশেক দুরে চলে আসে এক মস্ত দাঁতাল হাতি। হাতিটিকে দেখে তিনি ঘাবড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে চিৎকার করতে থাকেন। সেই সময় হাতিটি সামনের পা দিয়ে তাঁর দিকে ধুলো ছেটায়। কোনও মতে ধুলো ঝেড়ে চোখ খুলতেই দেখেন একদম সামনে চলে এসেছে হাতিটি। বাঁচার শেষ চেষ্টায় হাতে থাকা পাট কাঠিটি হাতির কপালের মাঝে খোঁচা মারেন। সঙ্গে সঙ্গে কাঠিটি ভেঙে যায়। দাঁতালটি পিছু হটে মেন্দাবাড়ির জঙ্গলে ঢুকে যায়। আশেপাশের লোকজন ছুটে যান। এলাকার বাসিন্দা ভুবেন বসুমাতা জানান, প্রায় রাতে মেন্দাবাড়ির জঙ্গল থেকে হাতি বাইসন গ্রামে ঢুকে অত্যাচার চালায়। |