চন্দননগরের পাশাপাশি হুগলির অন্যান্য জায়গাতেও ধুমধাম করে জগদ্ধাত্রী পুজো হচ্ছে।
বাংলায় বারোয়ারি পুজোর প্রচলন হয়েছিল আড়াইশো বছর আগে। হুগলির গুপ্তিপাড়ায়। নিরবচ্ছিন্ন ভাবে দেবী বিন্ধ্যবাসিনীর সেই পুজোটি আজও চলে আসছে। স্থায়ী মন্দিরে নিষ্ঠা সহকারে দেবীর পুজো হয়। দেবীর গায়ের রং লাল। পরণেও রক্তবস্ত্র।
গুপ্তিপাড়ায় কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির অধীনে ১৪টি পুজো হচ্ছে। আজ, শুক্রবার বিসর্জন। প্রতি বছরের মতোই এ বারেও গুপ্তিপাড়া রথ সড়কে আতসবাজী প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি সূত্রের জানানো হয়েছে, রীতি অনুযায়ী বিভিন্ন পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা আতসবাজি আনবেন। সন্ধ্যায় বাজি পোড়ানো হবে।
এ দিকে, বৃহস্পতিবার নবমী নিশিতে চন্দননগরের রাস্তাঘাট জনসমুদ্রের চেহারা নেয়। অন্য দিকে, চলেছে বিসর্জনের প্রস্তুতি। আজ, শুক্রবার বিসর্জন জগদ্ধাত্রীর।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে আছড়ে পড়েছে মানুষের ভিড়। বেলা যত বেড়েছে ভদ্রেশ্বর, মানকুণ্ডু, চন্দননগরের রাস্তাঘাট চলে গিয়েছে দর্শনার্থীদের দখলে। দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এসেছেন। তবে আলোর রোশনাইয়ের মধ্যেও এ দিন ছিল কিছুটা বিষাদের সুর। কেননা, বিকেল থেকেই বিসর্জনের শোভাযাত্রার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। বড় বড় ট্রাকে সাজানো হয়েছে বিশালাকার আলোকসজ্জা। আলোকসজ্জা ছাড়া যে সমস্ত প্রতিমার বিসর্জন হয়, সেগুলি দিনের আলো থাকতেই ভাসান দেওয়া হবে। সূর্য ডুবলেই শুরু হবে শোভাযাত্রা। যা শেষ হবে রানিঘাটে। বিসর্জন পর্ব সুষ্ঠু ভাবে শেষ করতে প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশও। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, বিসর্জন চলাকালীন, গঙ্গার ধারে নজরদারি চালানো হবে। গঙ্গাবক্ষেও টহল দেবেন পুলিশকর্মীরা।
তবে, চন্দননগরের বিসর্জনের আবহেই শুরু হল রিষড়ার জগদ্ধাত্রী পুজো। প্রথা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার এখানে ছিল ষষ্ঠী। ধারে-ভারে চন্দননগর বা কৃষ্ণনগরের সঙ্গে তুলনীয় না হলেও বেশ কয়েক বছর ধরেই জগদ্ধাত্রী পুজোর মানচিত্রে প্রথম সারিতে উঠে এসেছে গঙ্গাপাড়ের শহর রিষড়া। রেল স্টেশনের পূর্ব এবং পশ্চিম দু’দিকেই একের পর এক পুজো। পূর্বে পুজোর সারি দর্শনার্থীকে নিয়ে যাবে জিটি রোড পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার থেকেই রিষড়ায় মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরেছেন মানুষ। পুলিশ সূত্রের খবর, নিরাপত্তার জন্য রেল গেটের দু’পারে মোটরবাইকে পুলিশ টহল দেবে। হোমগার্ড এবং পুরসভার ‘গ্রিন পুলিশ’ রাস্তায় থাকবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে। ষষ্ঠীতলা মোড়, দেওয়ানজি স্ট্রিটের মোড়-সহ কয়েকটি জায়গায় জিটি রোডে যান নিয়ন্ত্রণ করবেন পুলিশকর্মীরা। এ ছাড়া, শহর জুড়ে মোট আটটি পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র থাকছে। লেনিন মাঠ, চারবাতী মোড়, বাঁশতলায় জিটি রোড, বাগপাড়া মোড়, ৩ নম্বর জলট্যাঙ্ক, সাধনকানন, ব্রহ্মানন্দ মাঠ, পঞ্চাননতলায় ওই পুলিশি সহায়তা কেন্দ্রগুলি করা হয়েছে।
গত বছর পুজোয় রেলগেট পেরোতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ট্রেনের ধাক্কায় মারা যান কয়েক জন। এ বার যাতে তেমন কিছু না ঘটে, সে জন্য সতর্ক পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। পুজোর প্রস্তুতি বৈঠকে রিষড়া স্টেশনের অফিসাররোও উপস্থিত ছিলেন। এ বার জিআরপি এবং আরপিএফের কর্মীরা রেলগেটে নজরদারি করবেন। চণ্ডীতলার কৃষ্ণরামপুর পশ্চিমপাড়ার আমরা সবাই ক্লাবের পুজোয় থার্মোকল দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। আলোকসজ্জাও মানানসই। |