|
|
|
|
লোক হাসিয়েছেন শিন্দে, ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতৃত্বও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
কথাটা শোনামাত্র শুরু হয়েছিল হাসাহাসি। লোকমুখে দু’দিন ধরে কসাবের ফাঁসি নিয়ে যত আলাপ-আলোচনা, তার পাশাপাশি অবিশ্বাসের হাসি খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়েই। লোক হাসানোর দায়ে আজ দলের নেতাদেরও কোপে পড়েছেন সুশীলকুমার শিন্দে।
বেনজির গোপনীয়তায় আজমল কসাবের ফাঁসি নির্বিঘ্নে মিটিয়ে দিয়ে সমাজের প্রায় সব স্তর থেকেই বাহবা কুড়িয়েছে সরকার। কিন্তু সেই গোপনীয়তার বহর কত দূর, সেটা বোঝাতে গিয়ে নিজেকে হাস্যাস্পদ করে তুলেছেন শিন্দে। গত কাল সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “কসাবের ফাঁসির নির্ঘণ্ট ও সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এতটাই গোপন রাখা হয়েছিল যে, সনিয়া গাঁধী এমনকী প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও তা জানতেন
না। তাঁরা টিভি দেখেই খবরটা জানতে পেরেছেন।” স্বভাবতই রাজনীতির কারবারি থেকে শুরু করে আমজনতা, কেউই বিশ্বাস করতে পারেননি বিষয়টা। শিন্দে হঠাৎ আগ বাড়িয়ে এমন একটা কথা বলতে গেলেন কেন, তাই নিয়েই জল্পনায় মেতেছিল দেশবাসী।
শিন্দের এই মন্তব্যে রীতিমতো চটেছেন অধিকাংশ কংগ্রেস নেতাও। ঘরোয়া আলোচনায় দিগ্বিজয় সিংহ, অম্বিকা সোনি, মনীশ তিওয়ারির মতো নেতারা আজ বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্য কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য? সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করবে! সবাই এটা নিয়ে হাসাহাসি করছেন!”
কংগ্রেসের ভিতর থেকেই বলা হচ্ছে, কসাবের ফাঁসি এমন একটা বিষয় যে, প্রশাসনিক দিক থেকে প্রধানমন্ত্রী তা জানবেন না, এমন হতেই পারে না। তা ছাড়া, কসাবের ফাঁসি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সনিয়া-মনমোহন দৃঢ় রাজনৈতিক নেতৃত্বের বার্তাই দিতে চাইছিলেন। অযথা হালকা মন্তব্য করে শিন্দে সেই প্রয়াসটাই কিছুটা লঘু করে দিলেন বলে অভিযোগ উঠছে।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক বর্ষীয়ান নেতা আজ বলেন, পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে ওসামা বিন লাদেনের গোপন ডেরায় মার্কিন মেরিন যখন অপারেশনে নামে, তখন তার প্রতিটা মুহূর্তের খবর নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আর সুশীল শিন্দে যা বললেন, তা একেবারে বিপরীত। এটুকু বিবেচনা তাঁর থাকা উচিত ছিল। দলের এই ক্ষোভ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সে ব্যাপারেও তাঁকে সতর্ক করা হয়েছে। এর আগেও এক বার সংসদে বেফাঁস মন্তব্য করে বিপাকে পড়েছিলেন শিন্দে। তবে কংগ্রেস মুখপাত্ররা অবশ্য প্রকাশ্যে এ ব্যাপারে আজ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কেননা কংগ্রেস সভানেত্রী নিজে এই নিয়ে প্রকাশ্যে চাপানউতোর চান না। তবে সুশীলকুমারের ঘনিষ্ঠ, মহারাষ্ট্রের এক কংগ্রেস সাংসদ বলেন, সনিয়া গাঁধীর নামটা না নেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়েই গণ্ডগোল করে ফেলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সনিয়া গাঁধী কি জানতেন যে কাসভের মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভেবেছিলেন যে, সনিয়া যেহেতু সরকারের কেউ নন, তাই তিনি বিষয়টি জানতেন বললে বিতর্ক হতে পারে। সেই কারণে তিনি বলে দেন, সনিয়া জানতেন না। শুধু সনিয়া না বলে সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নামটি করেই বাড়াবাড়ি করে ফেলেন মহারাষ্ট্রের এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। |
|
|
|
|
|