একই হাসপাতাল, একই রোগী। কিন্তু তাঁর আঘাত নিয়ে দু’রকম রিপোর্টে বিভ্রান্ত পুলিশ।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময়ে রোগী বলেছিলেন, তাঁর মাথায় লোহার ডান্ডা দিয়ে মারা হয়েছে। রোগীর বয়ানের ভিত্তিতে ওই তোলাবাজের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করে পুলিশ। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় চিকিৎসকের রিপোর্টে বদলে গিয়েছে আঘাতের কারণ। ডিসচার্জ রিপোর্টে চিকিৎসক লেখেন, পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছেন ওই রোগী। একই হাসপাতালে দু’রকম রিপোর্টের ফলে খুনের চেষ্টার মামলাটি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২ নভেম্বর রাতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পার্কিং থেকে তোলা আদায় করা নিয়ে মনোজিৎ ওরফে ছোটন এবং তাঁর সঙ্গী শানু মান্নার সঙ্গে বচসা হয় বাদল কর্মকার নামে এক দুষ্কৃতীর। তার পরেই লোহার ডান্ডা দিয়ে মনোজিতের মাথায় আঘাত করে সে। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে ভোজালির কোপে জখম হন শানুও। খবর পেয়ে বৌবাজার থানার পুলিশ হাতেনাতে পাকড়াও করে বাদল ওরফে বাবাই নামে ওই দুষ্কৃতীকে। বাজেয়াপ্ত করা হয় অস্ত্র দু’টিও। পুলিশের খাতায়, বাবাইয়ের বিরুদ্ধে তোলাবাজি, হুমকি-সহ কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে খবর।
নথি বলছে, ঘটনার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মনোজিতের ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টে লিখেছিলেন, লোহার ডান্ডা দিয়ে মাথায় মারা হয়েছে মনোজিৎকে। সেটি আহতের বয়ানের ভিত্তিতে লেখা। হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময় (ডিসচার্জ রিপোর্টে) শল্য বিভাগের চিকিৎসকেরা লিখেছেন, পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন মনোজিৎ। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে মাথায় আঘাত লেখা থাকলেই যথেষ্ট। কিন্তু মনোজিতের ক্ষেত্রে উঁচু থেকে পড়ে যাওয়ার বিষয়টিও লেখা রয়েছে। সেটা কেন লেখা হয়েছে, তা বোঝা যায়নি।
কী ভাবে বদলে গেল রিপোর্ট?
কারণটা স্পষ্ট ভাবে বলতে পারেননি মনোজিতের চিকিৎসকেরা। যাঁর অধীনে মনোজিৎ ভর্তি ছিলেন, সেই চিকিৎসক গার্গী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুরো ঘটনাটি জানতে হলে মনোজিতের কাগজপত্র ঘেঁটে দেখতে হবে। যদি কোনও ভুল হয়ে থাকে, তা হলে রোগীর আত্মীয়দের আবেদনের ভিত্তিতে সেটা শুধরে দেওয়া সম্ভব।” ফলে মামলাটি লঘু হয়ে যেতে পারে, তাও স্বীকার করে নেন তিনি। তবে বিষয়টি যে গোলমালের তা মানেননি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার এম এস মাইতি। |