মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ

দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুই মুখ

গিয়াসুদ্দিন মোল্লা

এলাকার মানুষের প্রত্যাশা
“সরকার পরিবর্তন হওয়ায় উন্নয়ন গতি
পাবে ভেবেছিলাম। এখন উনি মন্ত্রী হওয়ায়
এলাকায় পানীয় জল, বিদ্যুৎ ও রাস্তাঘাটের
উন্নিত হবে, এমন আশাই করব।”
“বর্তমানে যে ভাবে খুন, ডাকাতি
বেড়ে গিয়েছে তা আতঙ্কের। মন্ত্রী হওয়ায়
এলাকার আইন-শৃঙ্খলার উন্নতিতে
উনি নজর দিন, এটাই চাই।”
“আজ পর্যন্ত এই কেন্দ্র থেকে কেউ মন্ত্রী
হননি। তাই ওঁর কাছে প্রত্যাশা অনেক। বিশেষ
করে কর্মসংস্থান, রাস্তাঘাটের উন্নতিতে
উদ্যোগী হবেন এই আশা করব।”
“সন্ধ্যার পর উস্থি থেকে কলকাতায়
যাওয়ার গাড়ি মেলে না। এলাকার আরও
উন্নয়ন দরকার। উনি এ বার এই সব বিষয়ে
নজর দেবেন এটাই ওঁর কাছে চাই।”
 

মণ্টুরাম পাখিরা
এলাকার মানুষের প্রত্যাশা
“এই প্রথম এলাকার মানুষ একজন
মন্ত্রী পেলেন। মানুষের নানা সমস্যা রয়েছে।
রাস্তাঘাট, সেতু-সহ এলাকার সার্বিক উন্নয়নে
উনি নজর দেবেন এটাই আশা করব।”
“উনি যে দফতর পেয়েছেন তাতে এই
এলাকার বাণিজ্য, পর্যটনের দিকে নজর দিলে
বহু মানুষের কর্ম সংস্থান হবে। আশা করব
উনি এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন।”
“কাকদ্বীপ শহরের অন্যতম সমস্যা যানজট।
এ জন্য একটি বাইপাসের খুবই প্রয়োজন।
এ ছাড়া মেডিক্যাল কলেজ, নার্সিং ট্রেনিং
স্কুলের জন্য ওঁর কাছে প্রত্যাশা থাকল।”
“আশা করব, উনি এলাকায় মৎস্যবন্দর,
জেটিঘাট নির্মাণে ব্যবস্থা নেবেন। মৎস্যজীবীদের
সুযোগ-সবিধার দিকেও নজর দেবেন।”

রিপোর্ট কার্ড

শ্যামল মণ্ডল
১৬ মাসে কোন প্রকল্প কোথায় দাঁড়িয়ে
গোসাবা যুব আবাস। বাম জমানার পর একচুলও কাজ এগোয়নি।
বাসন্তী দমকল কেন্দ্র। দানে জমি মিলেছে দু’বিঘা। অর্থ বরাদ্দ হলেও কাজ শুরু হয়নি।
গোসাবা সেতু। অর্থ মঞ্জুর হলেও কাজ শুরু হয়নি।
বাসন্তীর হুগলদড়ি-পাঠানখালি সেতু। অর্থ মঞ্জুর হলেও কাজ শুরু হয়নি।
গোসাবা-সোনাগাঁ (বালি) সেতু। অর্থ মঞ্জুর হলেও কাজ শুরু হয়নি।
আয়লার পর বাঁধ নির্মাণ। সুন্দরবনের ১৯টি ব্লকের কিছু অংশে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে মাত্র। কয়েকটি ব্লকে বাঁধের ফাটল মেরামত করা হয়েছে।
জয়নগর-মথুরাপুর ঢাকির মুখ সেতু। কাজ অসম্পূর্ণ। ঠিকাদারকে পাওনা মেটানো হয়নি বলে অভিযোগ। বর্তমানে কাজ বন্ধ।
রাস্তা সংস্কার। কয়েকটি ব্লকে কাজ হয়েছে। কয়েকটি ব্লকে চলছে।
তথ্য: শুভাশিস ঘটক

নতুন মুখ
বেচারাম মান্না: সিপিএমের রাজনীতি দিয়ে শুরু। পঞ্চায়েত সদস্যও ছিলেন। বনিবনা না হওয়ায় দল ছাড়েন। তৃণমূলে যোগ দেন। শ্রীরামপুরের একটি জুটমিলের কর্মী ছিলেন। সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনের সময় থেকে রাজনীতিতে উত্থান। এক বছরে নজিরবিহীন ভাবে ৬৬টি মামলা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। গত বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের একদা শক্ত ঘাঁটি হরিপালে জেতেন তৃণমূলের টিকিটে। এ বার হলেন কৃষি প্রতিমন্ত্রী।

অসিত দাস (চিকিৎসক): “সিঙ্গুরের আন্দোলন রবীন্দ্রনাথবাবু এবং বেচারামবাবুকে মন্ত্রী করেছে। ওঁদের কাছে প্রত্যাশাও রয়েছে আমাদের। আমি চাই সিঙ্গুরে কলেজ হোক। আশা করব, সিঙ্গুরের চাষিদের সমস্যার সমাধান হবে। কৃষি ও শিল্প দু’টোই প্রয়োজন। অনিচ্ছুকদের সঙ্গেও যেন ন্যায় হয়।”

মনোরঞ্জন মালিক (সিঙ্গুর আন্দোলনে নিহত তাপসী মালিকের বাবা): “সিঙ্গুর দু’জন মন্ত্রী পেল। সিঙ্গুরবাসীর কাছে এটা গর্বের ব্যাপার। এ বার এলাকার কাজও নিশ্চয়ই আরও গতি পাবে। তবে, বেচারামবাবু তো সবে মন্ত্রী হলেন। তাঁকে একটু সময় দেওয়া প্রয়োজন।’’

শিশির কুমার মাঝি (প্রধান শিক্ষক, সিঙ্গুর মহামায়া উচ্চ বিদ্যালয়): “আমরা চাই বেচারামবাবু এলাকার উন্নতির জন্য কাজ করুন। এলাকা থেকেই দু’জন মন্ত্রী হওয়ায়, উন্নয়নের কাজে গতি বাড়বে বলে সকলেই আশা রাখছি। তবে উন্নয়ন হোক সার্বিক।”

অনুরাধা সিংহ রায় (প্রধান শিক্ষিকা, গোলাপমোহিনী মল্লিক উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়): “রেললাইন পারাপার করতে ছাত্রছাত্রীরা অসুবিধায় পড়ে। তাই, একটি সাবওয়ে চাই। আর, কারখানার জমিটা তো পড়েই আছে। ওখানে আর চাষ করাও সম্ভব নয়। ওই জমিতে শিল্পের ব্যবস্থা হোক। এলাকার বেকার যুবকেরা কাজ পাবে।”

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়: সেচ ও জলসম্পদ দফতরের মন্ত্রী হিসাবে বুধবার শপথ নিলেন ডোমজুড়ের বিধায়ক রাজীব। ম্যানেজমেন্টের ডিগ্রিধারী এই যুবক মন্ত্রী হওয়াতে জেলার মানুষের প্রত্যাশার পারদ চড়েছে। রাজনীতিতে পুরোদস্তুর নামার আগে রাজীব একটি বহুজাতিক নির্মাণ সংস্থার উঁচু পদে চাকরি করতেন। ওই সংস্থা ২০০০ সালের গোড়ায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক তথা মুম্বই রোড সম্প্রসারণের কাজ করেছে। জেলার পরিকাঠামোগত উন্নয়নে মুম্বই রোড সম্প্রসারণের গুরুত্ব অনেকটাই। সম্প্রসারণের কাজে জড়িত থাকার সুবাদে জেলার পরিকাঠামোগত সমস্যার দিকগুলি নিয়ে রাজীব অনেকটা অবহিত। মন্ত্রী হিসাবে সেই অভিজ্ঞতা তিনি জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণের মতো সমস্যা সমাধানে কাজে লাগাতে পারবেন বলে বিভিন্ন মহলের ধারণা।
সরস্বতী সংস্কার জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। জল নিকাশির ক্ষেত্রে সরস্বতীর ভূমিকা অনেকটাই। বহুবার সরস্বতী সংস্কারের জন্য আন্দোলন হয়েছে। সেচ দফতরের পক্ষ থেকেও একাধিকবার সরস্বতী সংস্কারের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সংস্কার কাজ আর শেষ হয়নি। ফলে সমস্যা থেকে গিয়েছে সেই তিমিরেই। ডোমজুড়ের বিধায়ক রাজীব মন্ত্রী হওয়ায় সরস্বতী সংস্কারে কাজ শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ হবে বলে মনে করছেন এলাকার বাসিন্দারা। মাকড়দহের বাসিন্দা পেশায় সরকারি কর্মচারী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে প্রথমেই ধন্যবাদ দেব রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে মন্ত্রী করার জন্য। মন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি সবস্বতী সংস্কারের উপরে তিনি যেন জোর দেন।”
আমতা ২ ব্লক এবং উদয়নারায়ণপুর প্রতিব ছর বন্যা কবলিত হয়। ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। সেচ দফতরের পক্ষ থেকে এই এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে একটি হল, থলিয়া-বাকশি শর্টকার্ট চ্যানেলের কাজ। প্রকল্পটি অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে দামোদরের বাঁধ সংস্কার। উদয়নারায়ণপুরের মানশ্রীর বাসিন্দা অসিত বাকুলি, হরিশপুরের সুনীল মান্নাদের দাবি, “আমতা ২ এবং উদয়নারায়ণপুরকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতেই হবে। রাজীববাবু উদ্যমী। এটা তাঁর পক্ষে সম্ভব বলে আমরা মনে করি।” পেশায় কৃষক জয়পুরের সৌরভ রায়েরও বক্তব্য “উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা ২ ব্লকের বন্যা নিয়ন্ত্রণকে নতুন সেচমন্ত্রী গুরুত্ব দেবেন সেটাই তাঁর কাছ থেকে আমরা আশা করি।” একই সঙ্গে তাঁর সংশয়, “সেচ দফতরের পরিকাঠামো খোল নলচে বদলানো দরকার। তা তিনি করতে পারবেন কী?” ডোমজুড়ের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক শ্যামসুন্দর দত্তের প্রত্যাশা আবার অন্য রকম। তিনি বলেন, “সর্বশিক্ষা প্রকল্পে যে সব টাকা আসে তা স্কুলের হাত পর্যন্ত পৌঁছতে অনেকটা সময় লেগে যায়। এটা যাতে দ্রুত স্কুলগুলির হাতে আসে, তা যেন উনি জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বলেন।”
বহু মানুষের বহু আশা পূরণের দাবি নিয়ে মন্ত্রী হলেন রাজীববাবু।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.