ভরদুপুরে বাসস্ট্যান্ডে দুটি গাড়ি মুখোমুখি। দু’পক্ষই গুলি চালাচ্ছে, বোমাও ছুড়ছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থানার বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ওই দৃশ্য দেখেছেন নিত্যযাত্রী ও বাসিন্দারা। প্রায় ১০ মিনিটের ওই গুলি-বোমার লড়াইয়ে জখম হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের এক ‘স্বঘোষিত’ নেতা। জখম হয়েছেন তাঁর এক সঙ্গী এবং গাড়ির চালক। পুলিশ জানিয়েছে, জখম নেতার নাম ভোলা পাল। তাঁর শরীরের নানা অংশে বোমার টুকরোর আঘাত রয়েছে। তিনি রায়গঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় অন্ততপক্ষে ১৫ রাউন্ড গুলি এবং ৫টি বোমা ছোড়া হয় বলে তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৩টি গুলির খোল উদ্ধার করে। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, যাঁদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, তাঁরা সকলে তৃণমূল সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত।
তৃণমূলের জেলা নেতারা জানান, ভোলাবাবু নিজেকে নেতা হিসেবে পরিচয় দিলেও তিনি কোনও পদে নেই। ভোলাবাবুর দাবি, তিনি জেলার কার্যকরী কমিটির সদস্য। তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “আমি কলকাতায় আছি। ভোলা পাল আমাদের সমর্থক। তবে ভোলাবাবু এখন দলের কোনও পদে নেই বলে জেলার নেতারা জানিয়েছেন। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল তা দেখা হচ্ছে।” রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি অনুজ শর্মা বলেন, “উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার টেলিফোন করে দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি এবং বোমাবাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন। আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।” দলীয় সূত্রের খবর, ভোলাবাবু পেশায় ঠিকদার। তিনি ওয়েস্ট দিনাজপুর কন্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদকও। ভোলাবাবু জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের ঘনিষ্ট বলেই পরিচিত। ইতিমধ্যে তদন্তে নেমে পুলিশ কিছু নামও পেয়েছে তাতে গোষ্ঠী সংঘর্ষের বিষয়টি উড়িয়ে দিতে পারছেন না তদন্তকারী অফিসারদের একাংশ। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমলবাবু বলেন, “দলের কেউ যদি সমাজবিরোধী কাজকর্মে যুক্ত থাকে তবে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। এর পিছনে কংগ্রেস, সিপিএমের হাত রয়েছে।” আর জেলা তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ নেতা বলে পরিচিত তিলক চৌধুরী বলেন, “দলের ক্ষমতা ভাঁড়িয়ে কেউ যদি সমাজবিরোধী কার্যকলাপ করে তবে পুলিশ তাঁদের কেনও গ্রেফতার করছে না বুঝছি না।” চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানের অভিযোগ, কংগ্রেসের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরাই ভোলার উপরে হামলা করেছে। |