সর্বশিক্ষা মিশন ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত প্রাথমিক স্কুল পড়ুয়াদের আঁকা প্রতিযোগিতায় রাজ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করল দিনহাটার রুদ্রাক্ষী রায়। সাফল্যের স্বীকৃতি হিসাবে রুদ্রাক্ষীর আঁকা ছবি রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশনের উদ্যোগে তৈরি ২০১৩ সালের ক্যালেন্ডারে ছাপাও হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই রাজ্যের নানা স্কুল ও শিক্ষা দফতরে দেওয়াল ও টেবিলে ওই ক্যালেন্ডার শোভা পাবে। রুদ্রাক্ষীর এমন সাফল্যে নিজের স্কুল তো বটেই, খুশির হাওয়া জেলার শিক্ষক মহলেও। সর্বশিক্ষা মিশনের কোচবিহার জেলা আধিকারিক আমিনুল আহসান বলেন, “রুদ্রাক্ষীর এমন সাফল্যে আমরা খুশি। ভাল লাগছে অন্য আরও কয়েকজনের সঙ্গে ওর আঁকা ছবি রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশনের উদ্যোগে প্রকাশিত ২০১৩ সালের ক্যালেন্ডারে জায়গা পেয়েছে। এতে জেলার অন্য ছাত্রছাত্রীরাও উসাহিত হবে।” কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারপার্সন কল্যাণী পোদ্দার জানান, ছোট্ট রুদ্রাক্ষীর ওই সাফল্য নিঃসন্দেহে বড় ব্যাপার। তিনি বলেন, “সময় পেলেই স্কুলে গিয়ে ওর সঙ্গে দেখা করে অভিনন্দন জানিয়ে আসব। সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রেই জানা গিয়েছে, দিনহাটার বড়শাকদলের বাসিন্দা রুদ্রাক্ষী স্থানীয় দক্ষিণ বড়শাকদল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। সম্প্রতি কলকাতায় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ওই প্রতিযোগিতার অন্যান্য কৃতিদের সঙ্গে রুদ্রাক্ষীর হাতেও শংসাপত্র ও পুরস্কার তুলে দিয়েছেন। মঙ্গলবার মেয়েকে নিয়ে গিয়ে কোচবিহার সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা আধিকারিক আমিনুল আহসানের সঙ্গে দেখা করে ওই শংসাপত্র দেখান রুদ্রাক্ষীর বাবা গোবিন্দবাবু। মেয়ের আঁকা ছবি রাজ্য স্তরে দ্বিতীয় স্থান পাওয়ায় খুশি গোবিন্দবাবু। পেশায় দিনহাটার কিসামত দশগ্রাম এলাকার গোপালগঞ্জ নিউ প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক গোবিন্দবাবু। তাঁর স্ত্রী মামণি দেবী গৃহবধূ। গোবিন্দবাবুর কথায়, “ছোট থেকেই ওর ছবি আঁকার নেশা। একজন শিক্ষকের কাছে ছবি আঁকা শেখাতে পাঠাতাম। আমি নিজেই মাঝেমধ্যে গাইড করতাম। তাই বলে মেয়ে একেবারে রাজ্য স্তরে দ্বিতীয় হবে এতটা ভাবিনি। সত্যিই দারুণ লাগছে।” রুদ্রাক্ষী সে স্কুলের ছাত্রী সেই দক্ষিণ বড়শাকদল প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক মণীন্দ্রনাথ বর্মন তাকে সম্বর্ধনা দেবেন বলে জানিয়েছেন। সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রেই জানা গিয়েছে, নির্মল বিদ্যালয় সপ্তাহ পালনের অঙ্গ হিসাবে রাজ্য জুড়ে সমস্ত স্কুলে এ বছরের ৯ এপ্রিল নির্দিষ্ট বিষয় ভিত্তিক বসে আঁকো প্রতিযোগিতার আসর বসে। প্রথম, দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ‘ক’ বিভাগে ওই ছবি আঁকার বিষয় ছিল নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখা। ওই বিষয়ের ওপর ছবি আঁকতে গিয়ে রং পেনসিলের টানে রুদ্রাক্ষী ফুটিয়ে তুলেছে ভোরে ঘুম থেকে ওঠার পর দাঁত মাজার দৃশ্য। কাঁচা হাতে অনেকটা কার্টুনের ছাপ সম্বলিত ওই ছবিতে ফুটে উঠেছে ভোরের সূর্য থেকে জলের কল, বাড়িঘর, গ্রামের ছবি। একরত্তি রুদ্রাক্ষী বলল, “সকালে সূর্য ওঠে। আমরা উঠি। উঠে দাঁত মাজি।” কোচবিহারের ২৬ টি শিক্ষা সার্কেল এলাকার মধ্যে সেরা হওয়ার সুবাদে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় সেটি পাঠানো হয়। ওই বিভাগে পশ্চিম মেদিনীপুরের দ্রুবরাজপুর-১ প্রাইমারি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র অমৃত বর্মন প্রথম ও কলকাতার লি কলোনিস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র নজরুল মোল্লা তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। |