চাষির বঞ্চনা ঠেকাতে পদক্ষেপ
ধান কেনায় যুক্ত হলেন বিধায়কেরা
হায়ক মূল্যে এবার চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার প্রক্রিয়া বিধায়কদের যুক্ত করল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। এত দিন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের মাধ্যমেই ধান বিক্রিতে ইচ্ছুক চাষিদের চিহ্নিত করতে তাঁদের মধ্যে কুপন বিলি হত। এখন বিধায়করাও ধান কেনায় আগ্রহী চাষিদের মধ্যে ‘কুপন’ বিলির করতে পারবেন বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। শুক্রবার বালুরঘাটে জেলাশাসকের ঘরে এ বিষয়ে ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিং কমিটির সভা হয়। ওই কমিটির চেয়ারম্যান তথা জেলা পরিষদের সিপিএমের সভাধিপতি, ডান ও বাম বিধায়ক এবং চালকলের মালিক সহ খাদ্য দফতরের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ওই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “সকলের মত নিয়ে বিধায়কদের এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা হয়েছে। এতে আরও বেশি কৃষকেরা সহায়ক মূল্যে ধান বেচে উপকৃত হবেন। আগামী ২৬ নভেম্বর থেকে জেলা জুড়ে সরকারি শিবিরের মাধ্যমে ধান কিনতে নামবে। খাদ্য দফতর গত বছর সরকারি পর্যায়ে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনায় এই জেলা রাজ্যে সাফল্য অর্জন করলেও। জেলায় মোট ৬৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েত। মাত্র ১৬ টির দখল রয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল ও বিজেপির। প্রায় ৭৫ শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতই বামেদের দখলে। পাশাপাশি, জেলার ৬ টি বিধানসভার মধ্যে ৫ টি তৃণমূলের দখলে। ১ টি আরএসপির দখলে। বামেদের অভিযোগ, দুটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে প্রধানদের কুপন বিলির ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে। প্রথমত, পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে দুর্বল করা। দ্বিতীয়ত, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে ধান কেনা নিয়ে চাষিদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বামফ্রন্টের আহবায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরীর অভিযোগ, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে। এই প্রথম প্রথা ভেঙে ওই সিদ্ধান্তের ফলে পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে খর্ব করা হয়েছে।” জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের নিয়ামক ভাস্কর হালদার বলেন, “সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়। প্রকৃত চাষিরা আরও বেশি করে সহায়ক দামে ধান বিক্রি করতে পারেন সেই লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত।”
ওই সভায় সিপিএমের জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মু কোনও আপত্তি করেননি। সভাধিপতি বলেন, “ধান কেনার প্রক্রিয়ায় বিধায়কদের যুক্ত করার বিষয়টি নিয়ে সভায় আপত্তি করে লাভ হত না।” তবে জেলা পরিষদের প্রতিনিধিদেরও কুপন বিলির ক্ষমতা দেওয়ার জন্য জেলা খাদ্য নিয়ামককে অনুরোধ করবেন বলে সভাধিপতি জানিয়েছেন। তৃণমূল বিধায়ক বিপ্লব মিত্রের অভিযোগ, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গতবার বাম পরিচালিত অনেক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কুপন বিলির ক্ষেত্রে অসহযোগিতা করেন। অনেক ক্ষেত্রে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চাষিদের মধ্যে কুপন বিলি করে দায় সারেন। এ নিয়ে ওই সভায় আলোচনা করে কৃষকদের এমন বঞ্চনা ঠেকাতেই এবারে বিধায়কেরাও কুপন বিলিতে অংশ নিয়েছেন।” প্রশাসন সূত্রের খবর, এরপরই ঠিক হয় প্রতিটি শিবিরে প্রথম দফায় ধান কিনতে ৩০০ জন কৃষককে চিহ্নিত করে শংসাপত্র কিংবা কুপন দেওয়া হবে। এর মধ্যে ১৫০ জনকে দেবেন সংশ্লিষ্ট প্রধান এবং ১৫০ জন কৃষককে কুপন বিলি করবেন এলাকার বিধায়ক কিংবা বিধায়কের প্রতিনিধি। দুই তরফে কুপনের রঙ করা হয়েছে আলাদা। বিধায়কেরা ব্যবহার করবেন সাদা রঙের কুপন এবং প্রধানেরা দেবেন হলুদ রঙের কুপন। শিবিরে প্রত্যেক চাষির কাছ থেকে প্রথম দফায় ৩ কুইন্টাল করে ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য দফতর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.