প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদের প্রতি দুর্ব্যবহারের অভিযোগ
শিক্ষকদের ঘিরে বিক্ষোভ
নিয়মিত ক্লাস, ঠিক মতো টিফিন ও সঠিক দেখভালের দাবিতে শিক্ষকদের ক্লাস ঘরে আটক করে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন মূক ও বধির এবং মানসিক প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকেরা। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে মালদহ শহরের ফুলবাড়ি এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত কোতোয়ালি সালেহা মেমোরিয়াল স্কুলে এই বিক্ষোভের ঘটনাটি ঘটে। সেই সময়ে সেখানে আটকে পড়েন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ অর্থোপেডিক হ্যান্ডিক্যাপড-এর এক প্রতিনিধি। স্কুল কর্তৃপক্ষ নিয়মিত ক্লাস ও রক্ষণাবেক্ষণের আশ্বাস দিলে তাঁরা ঘেরাও মুক্ত হন।
অভিভাবকদের বিক্ষোভ স্কুলে। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।
প্রতিবন্ধী ছাত্রদের অভিভাবকদের অভিযোগ, খাতায় কলমে ২১০ জন ছাত্রছাত্রী থাকলেও ৭০-৮০ জনের বেশি ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসে না। স্কুলে শিক্ষক সংখ্যা ৩২ জন। অশিক্ষক ৫ জন। যে সব প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসে তাদেরও নিয়মিত ক্লাশ হয় না, সারা দিন স্কুলে বসিয়ে রেখে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নোটিস বোর্ডে টিফিনের তালিকায় চাউমিন, ডিম থাকলেও বেশির ভাগ দিনই মুড়ি চানাচুর দেওয়া হয়। স্কুলের এক প্রতিবন্ধী ছাত্রীর মা বলেন, “ছেলেমেয়েদের কী পড়ানো হচ্ছে আমাদের জানানো হচ্ছে না। স্কুলে আমাদের বাচ্চারা মারপিট করলে তাদের থামতে কোনও শিক্ষক বা আয়া এগিয়ে আসেন না। কোনও বাচ্চা ঘরে প্রস্রাব করে ফেললে তাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়।” দিনের পর দিন এই অসন্তোষ চাপা থাকার পরে মঙ্গলবার অভিভাবকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শিক্ষকদের ক্লাস ঘরে আটকে বিক্ষোভ দেখানো শুরু হয়। সেখানে হাজির ছিলেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ অর্থোপেডিক হ্যান্ডিক্যাপড-এর এক প্রতিনিধি অনিরুদ্ধ পালিতও। এই দিন অভিভাবকদের আন্দোলনে পাশে দাঁড়িয়েছেন পুরসভার ১৩ নম্বর ওর্য়াড কাউন্সিলার তৃণমূলের সঞ্জয় রায়। তিনি বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলেছি ৫ বছরের অডিট রিপোর্ট দেখাতে হবে। আমরা জানতে চাই ৫ বছরে কোথা থেকে কত টাকা এসেছে এবং কোন খাতে কত টাকা খরচ হয়েছে।” কর্তৃপক্ষের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে ঘণ্টা তিনেক পরে ঘেরাও ওঠে। স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি মনোজ গুপ্ত এই দিন বলেন, “অভিভাবকরা যে অভিযোগ তুলছেন তা ঠিক নয়। তবে স্কুলের কিছু শিক্ষক দিনের পর দিন ক্লাস নিতে স্কুলে না এসে কেবল বেতন নিতে আসতেন। ছাত্রছাত্রীদের পড়াবেন না অথচ বেতন তুলবেনতা হতে পারে না। এ জন্য আমরা কয়েক জন শিক্ষককে তাড়িয়ে দিয়েছি। আমার ধারণা, তাঁরাই অভিভাবকদের স্কুলের বিরুদ্ধে উসকে দিচ্ছেন।”
এ দিন বিক্ষোভের সময়ে সেখানে পরিদর্শনে আসা অনিরুদ্ধবাবুকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি পরিদর্শনে এসেছি। এই ঘটনা নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।”
অধ্যক্ষ রাজেন্দ্রনাথ দাস বলেন, “স্কুলে কত জন পড়ছে, তার উপর আমরা কেন্দ্রীয় সরকার থেকে অনুদান পাই। অনুদানের টাকায় শিক্ষকদের বেতন, পড়ুয়াদের টিফিন ও রাহা-খরচ দিই। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধির পরিদর্শনের দিন স্কুলে ছাত্রছাত্রী কত জন হাজির থাকছে, তার উপরে সেই অনুদানের টাকা মঞ্জুর করে কেন্দ্রীয় সরকার।” অধ্যক্ষ আরও বলেন, “গত দেড় বছর অনুদানের টাকা আসেনি। শিক্ষকেরা বিনা বেতনে ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়ে যাচ্ছেন। বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রী অনুদানের টাকা নেওয়ার জন্য বছরে এক দিন আসে। এই সংখ্যা খুব কম নয়। ৯০ শতাংশ হাজির থাকলে তবে অনুদানের টাকা পাওয়া যাবে। কিন্তু মানবিকতার খাতিরে বছরে এক দিন হাজির থাকা ছাত্রছাত্রীদের অনুদানের টাকা পাইয়ে দেওয়া জন্য স্কুল থেকে নাম কাটা হচ্ছে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.