ঢালাও লেনদেনের অভিযোগ ওঠার পরেও শহরে অবৈধ বাণিজ্যিক নির্মাণ ভাঙা নিয়ে শিলিগুড়ি পুরসভার কংগ্রেস-তৃণমূল বোর্ড গড়িমসি করছে কেন, এই প্রশ্নে জনতার আদালতের রায় চাইবেন বামেরা। মঙ্গলবার প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য এ কথা জানান। দলীয় অফিসে বসে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী বলেন, “শিলিগুড়ির মানুষ তিতিবিরক্ত। বহু মানুষ পুরসভায় গিয়ে হয়রান হচ্ছেন। ব্যবসায়ীদেরও নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। পরিষেবা মিলছে না। অথচ শহরে একের পর এক বেআইনি বাণিজ্যিক নির্মাণ হচ্ছে। লেনদেনের অভিযোগ কবুল করছেন শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা। আমরা ঢালাও লেনদেন ও বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ এবং পুরসভার কংগ্রেস-তৃণমূলের ভূমিকার বিষয়টি নিয়ে জনতার আদালতে যাব। আমজনতার কাছে রায় চাইব। কারণ, মানুষই শেষ কথা বলবে।”
কেমন ভাবে যাওয়া হবে জনতার আদালতে? অশোকবাবু জানান, আগামী ডিসেম্বরের মাস থেকে শহরের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে নাগরিক কনভেনশন করা হবে। ওই কনভেনশনের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষের কাছে পুরসভার এই হাল তুলে ধরা হবে। সেখানেই মানুষের রায় নেওয়া হবে। এ ছাড়া আগামী ৩০ নভেম্বর দার্জিলিং জেলা বস্তি উন্নয়ন সমিতির ব্যানারে মিছিল করা হবে। ১ ডিসেম্বর ওই সংগঠনের সম্মেলনেও বিষয়গুলি নিয়ে সরব হবেন বাম নেতারা।
পাশাপাশি, শহরের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের তরফে অনেকেই প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর কাছে গিয়ে পুরসভার কর্তা ও অফিসারদের ভূমিকা নিয়ে নানাবিধ অভিযোগ করেছেন। এমনকী, কংগ্রেস-তৃণমূলের প্রবীণ নেতাদের একাংশও বাম আমলের তুলনায় খোলাখুলি লেনদেনের অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী বলেন, “অনেকেই আমাদের কাছে এসে দুঃখ করছেন। ক্ষোভ জানাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, শহর যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। পুরসভায় দুর্নীর্তি বাসা বেঁধেছে। একের পর এক অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। মেয়রের কৈফিয়ত চাইছেন মন্ত্রী। অথচ তিনি নিজেই একজন কাউন্সিলর। তাঁরও দায়িত্ব কম নয়। তাঁকেও কৈফিয়ত দিতে হবে। আমরা পুরসভার এই হাল নিয়ে জনতার আদালতে যাব। এই পুরবোর্ডকে আগামী নির্বাচনে অপসারিত না করলে আগামী দিনে শহরবাসীর চরম দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখে জনতার রায় চাইব।” সেবক রোডের অবৈধ নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ পেয়ে তা ভাঙতে গত সোমবারই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ২৪ ঘন্টা সময় দিয়েছিলেন পুর কমিশনারকে। কিন্তু পদ্ধতি মেনে তা ভাঙার জন্য ৩ দিন সময় লাগবে বলে পুর কমিশনার সময় চান। পুরসভা সূত্রকেই জানা গিয়েছে, সোমবার মন্ত্রী বলার পরেই অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে তাদের নোটিস পাঠিয়ে ৩ দিনের মধ্যে তা ভেঙে দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় পুরসভা নিজেই তা ভেঙে দেবে। কিন্তু, শেঠ শ্রীলাল মার্কেট সহ যে সব এলাকায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে শোরগোল চলছে সেগুলি কবে ভাঙা হবে তা স্পষ্ট নয় বলে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ জানিয়েছে।
পুর কর্তৃপক্ষ সময় মতো ব্যবস্থা নিতে না পারায় গৌতমবাবুকে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার মতো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে দেখে তিনি হতাশ। অবৈধ নির্মাণ নিয়ে পুরসভার ভূমিকায় আগের দিনই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এ দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “পুর কমিশনার ফোন করেছিলেন। নিয়ম মেনে অবৈধ নির্মাণটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৩ দিন সময় চেয়েছেন তাঁরা। দেখা যাক কী হয়। অবৈধ নির্মাণ ভাঙার মতো বিষয়ে আমাকে কেন হস্তক্ষেপ করতে হবে?” উন্নয়ন কাজের বিষয়গুলিও পুর কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলে এ দিন আক্ষেপ করেছেন গৌতমবাবু।বাম আমলে যে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে তা নিয়ে অশোকবাবুর দাবি, “আমি যখন মন্ত্রী ছিলাম সেই সময় যে দু’একটি অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ পেয়েছি তখনই ব্যবস্থা নিয়েছি।”
বুনো হাতির হামলায় মৃত্যু। খেতের ধান পাহারা দিতে গিয়ে দাঁতালের হামলায় মৃত্যু হল এক কৃষকের। ডুয়ার্সের শামুকতলা থানা এলাকার ধওলাঝোরা ১ গ্রামে সোমবার রাত ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত ব্যক্তির নাম মাইস ওঁরাও (৪২)। বাড়ি ওই গ্রামে। এ দিন রাতে নিজের খেতে ধান পাহারা দেওয়ার সময় হাতিটি মাইসকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে তুলে আছাড় দেয়। গুরুতর জখম অবস্থায় উত্তর রায়ডাক রেঞ্জের বনকর্মীরা তাঁকে ওই দিন রাতেই আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কিছুক্ষণ পরে মারা যায় মাইস ওরাও। |