|
|
|
|
বিদ্যাসাগরে সমাবর্তন |
উচ্চশিক্ষার পুনর্গঠনে নতুন চিন্তা চান রাজ্যপাল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
রাজ্যে উচ্চশিক্ষা পরিকাঠামোর পুনর্গঠনে নতুন চিন্তাধারা প্রয়োজন। এমনটাই মনে করছেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। তাঁর মতে, উচ্চশিক্ষা নিয়ে যা ভাবা হচ্ছে এবং যা করা হচ্ছে, তার মধ্যে ফাঁক থেকে যাচ্ছে। মঙ্গলবার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “উপলব্ধি এবং বাস্তবতার মধ্যে ফাঁক থেকে যাচ্ছে। উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য, শিক্ষিতের সংখ্যা বাড়ানো নয়। সংখ্যা একটা বিষয়। এটা প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরে ঠিক আছে। উচ্চশিক্ষা জ্ঞান-ভিত্তিক হওয়া প্রয়োজন। আরও উৎকৃষ্টতা প্রয়োজন।” এ ক্ষেত্রে রাজ্যে যে পরিকাঠামো রয়েছে, তা যথেষ্ট নয় বলেও মন্তব্য করেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, “উচ্চশিক্ষার আরও উন্নত প্রতিষ্ঠান দরকার।” |
|
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল। —নিজস্ব চিত্র। |
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মঙ্গলবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এম কে নারায়ণন। শহরের শহিদ প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী গোবর্ধন মেহতা, দিলীপ মহালনবীশ, রমণ সুকুমার, বিশিষ্ট সানাই বাদক উস্তাদ আলি আহমেদ হোসেন খান প্রমুখ। মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গোবর্ধন মেহেতা। তিনি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্যও রাখেন। অন্য দিকে, সানাই বাদক উস্তাদ আলি আহমেদ হোসেন খানকে সাম্মানিক ডি লিট এবং দিলীপ মহালনবীশ, রমণ সুকুমার এই দুই বিজ্ঞানীকে সাম্মানিক ডিএসসি ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এঁদের হাতে স্মারক তুলে দেন রাজ্যপাল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার কয়েকটি দিকই তুলে ধরেন আচার্য। তাঁর কথায়, “উচ্চশিক্ষার পরিকাঠামোর পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে নতুন চিন্তাধারা প্রয়োজন। আমাদের দেশের জনসংখ্যার ৩০ শতাংশই ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সের। উন্নত গবেষণার দিক থেকে আমাদের চিনের পরেই থাকা উচিত। দুর্ভাগ্যজনক তা হয় না।” রাজ্যপালের বক্তব্য, গবেষণার ক্ষেত্রেও মানই বিচারের মাপকাঠি। সংখ্যা নয়। তিনি বলেন, “উচ্চশিক্ষায় আরও বেশি উৎসাহের প্রয়োজন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা রয়েছে।” পাশাপাশি, শিক্ষার মানোন্নয়নে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ঠিক রাখা প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন রাজ্যপাল।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গোবর্ধন মেহতা বলেন, “শুধু ভাল করাটা যথেষ্ট নয়। ভাল থেকে আরও ভাল করাটাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। সে জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে হবে।” নিজের বক্তব্যে দেশের দু’টি অবস্থার কথা তুলে ধরেন মেহেতা। তাঁর বক্তব্য, “দেশের একটা ভাল অংশের মানুষ মোবাইল ব্যবহার করেন, এটা ঠিক। আবার অনেক স্কুলে মেয়েদের জন্য শৌচাগার নেই, এটাও ঠিক। বিশ্বে যত ধনী ব্যক্তি রয়েছে, তার একটা ভাল অংশই এ দেশের। আবার দেশের সর্বত্রই পাণীয় জলের সুবন্দোবস্ত নেই।” এই অসামঞ্জস্য দূর করার জন্য তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, তরুণ প্রজন্ম এগিয়ে এলেই এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য ফিরে আসতে পারে। ২০১১ সালে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়নি। তাই এ বার দু’বছরের অনুষ্ঠানই একসঙ্গে করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৯০ জন ছাত্রছাত্রীকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের ৬৩ জন এবং কলা বিভাগের ২৭ জন রয়েছেন। |
|
|
|
|
|