হলদিয়ায় পাল্টা সভা শুভেন্দুর |
সভার পথে ঘেরাও দীপার গাড়ি, ভাঙচুর কংগ্রেস কর্মীদের বাসেও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া ও তমলুক |
আশঙ্কাই সত্যি হল। মঙ্গলবার কংগ্রেসের ‘হলদিয়া চলো’ কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পূর্ব মেদিনীপুর। সভায় যাওয়ার পথে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সির গাড়ি আটকানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সভা থেকে ফেরার পথে নন্দকুমারে কংগ্রেস নেতাদের গাড়িতে হামলা ও কর্মী-সমর্থকদের বাসে ভাঙচুর চালানোরও অভিযোগ উঠেছে। সেখানে একদফা সংঘর্ষ হয় কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে। |
|
হলদিয়ায় সদ্য কাজহারা শ্রমিকদের কথা শুনছেন দীপা দাশমুন্সি। ছবি: আরিফ ইকবাল খান। |
এবিজি-বিদায়ের পরে কাজহারা শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় মঙ্গলবার হলদিয়ার চিরঞ্জীবপুরে জনসভা করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিল কংগ্রেস। একই দিনে শ’খানেক মিটার দূরে রানিচকে মিছিল করার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি নেয় তৃণমূল। দু’পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে গোলমালের আশঙ্কায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল হলদিয়া জুড়ে। তা সত্ত্বেও গণ্ডগোল আটকানো গেল না। এ দিন দুপুরে সভায় আসার পথে হলদিয়ার তালপুকুরের কাছে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সির গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করেন তৃণমূল সমর্থকেরা। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে সভায় পৌঁছন দীপা। সভা শেষে বেলা আড়াইটা নাগাদ হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের নন্দকুমার মোড়ে ফের গণ্ডগোল বাধে। |
|
হলদিয়ায় কংগ্রেসের সভা। |
চৌমাথা মোড়ে আইএনটিটিইউসি-র দলীয় অফিসের সামনে স্থানীয়তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার দে-র নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জন কর্মী-সমর্থক ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তোলেন। এগরা ১ ব্লকের কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অরুণ নায়েকের গাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পিছনেই থাকা কংগ্রেস নেত্রী মালা রায়ের গাড়ি লক্ষ করে পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের ৪টি বাসেও ভাঙচুর চালানো হয়। বাস থেকে কংগ্রেসের লোকেরা নেমে এলে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। তাই শুনে কিছু দূর চলে গিয়েও ফিরে আসেন দীপা। তিনি বলেন, “আমার ওপর আক্রমণ চালাতে চেয়েছিল ওরা। না-পারায় এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।” যদিও তৃণমূল নেতা সুকমার দে-র দাবি, “আমাদের পতাকা ছিড়ে দিচ্ছিল কংগ্রেস। ওরাই প্রথম আক্রমণ চালায়। |
|
সভা করলেন শুভেন্দু অধিকারীও। |
ঘটনার প্রতিবাদে নন্দকুমার মোড়েই প্রায় দু’ঘণ্টা অবরোধ করে কংগ্রেস। পরে পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়। সন্ধ্যায় জেলার বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় প্রতিবাদ মিছিল করে কংগ্রেস। কলকাতার হাজরা মোড়েও অবরোধ হয় বিকেলে। আজ, বুধবার মেট্রো চ্যানেলে পূর্বঘোষিত সভায় বিষয়টি নিয়ে সরব হবেন বলেও এ দিন জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। |
|
নন্দকুমারে গণ্ডগোলের পরে কংগ্রেসের অবরোধে যানজট। |
তবে এ দিন হলদিয়ায় কংগ্রেসের সভা হয়েছে নির্বিঘ্নেই। সভায় তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীকে ‘হলদিয়ার যুবরাজ’ বলে কটাক্ষ করেন দীপা। কেন্দ্রে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনাস্থা আনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রয়োজনে আলিমুদ্দিনে যেতে রাজি বলেছেন। এটা শোনার পরে মনে হচ্ছে তৃণমূল আসলে বিজেপি ও সিপিএমের বি-টিম।” বন্দরের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানান দীপা। কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যও বক্তব্য রাখেন সভায়। |
|
এগরায় কংগ্রেসের প্রতিবাদ মিছিল। |
আজ রানিচক থেকে ক্ষুদিরামনগরের কদমতলা পর্যন্ত মিছিল করে তৃণমূল। মিছিলের পরে সন্ধ্যায় কদমতলার সভায় যোগ দেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। কংগ্রেসকে ‘পরিযায়ী পাখি’ বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “হলদিয়ার পুরভোটে যাদের স্থান বিজেপির পরে, তারা বাইরে থেকে লোক এনে সভা করছে। এঁরা এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কুৎসা অপপ্রচার করতে।”
|
—নিজস্ব চিত্র। |
|