রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় • কলকাতা |
হাওড়াতেও জৌলুস বাড়ছে জগদ্ধাত্রী পুজোর। বিশেষ করে বাউড়িয়া, উলুবেড়িয়া, বাগনান প্রভৃতি জায়গায় জগদ্ধাত্রী পুজোর সংখ্যা বাড়ছে বছরের পর বছর। পুজো দেখতে আসেন বহু দর্শনার্থী।
বাউড়িয়ায় জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা হয় পারিবারিক পুজোর মধ্য দিয়ে। প্রথম পারিবারিক পুজো ১৮৭০ সালে চালু করেন পশ্চিম বুড়িখালির কৃষ্ণপ্রসাদ ঘোষ। ধারাবাহিক ভাবে এই পুজো হয়ে আসছে জাঁকজমক সহকারে। পশ্চিম বুড়িখালির সাহা পরিবারের পুজো এ বারে পড়ল ২৪ বছরে। এই পুজোর জাঁকও দেখার মতো। বাড়ির পুজো ছাড়া সর্বজনীন পুজোর সংখ্যাও কম নয়। পুলিশ সূত্রের খবর, এ বছর বাউড়িয়া জুড়ে ৪০টি সর্বজনীন পুজো হচ্ছে। অমর সঙ্ঘ, দিশারী, শান্তি সমন্বয় কমিটি এবং বান্ধব সমিতি এই চারটি ক্লাবের পুজো চার দিনের। বাকি ৩৬টি সর্বজনীন পুজো এক দিনের। বাউড়িয়া পূর্ব বুড়িখালি, বউলখালি, বেনেখালি, হাট বাউড়িয়া, সন্তোষপুর প্রভৃতি এলাকায় এই সব পুজো হয়ে থাকে।
উলুবেড়িয়ার বাসুদেবপুর গ্রাম জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাসুদেবপুরকে বলা হয় ‘মিনি চন্দননগর’। পাড়ায় পাড়ায় মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে জোর কদমে। এই এলাকায় প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো হয় পশ্চিম বাসুদেবপুর ব্যানার্জি পাড়ায় ১৮৩০ সালে। তার পর থেকে একের পর এক জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়েছে। |
বাগনানের চন্দ্রভাগায় জগদ্ধাত্রী ভক্ত ক্লাবের মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র। |
বাসুদেবপুরে পুজোর সংখ্যা ১৪টি। পাশাপাশি গ্রামগুলিতেও পুজো হচ্ছে। সব মিলিয়ে এই এলাকায় পুজোর সংখ্যা ৫৩। বাসুদেবপুরে রয়েছে কয়েকটি পারিবারিক পুজো। নাথ পরিবারের পুজো এ বারে পড়ল ৭২ তম বছরে। প্রাচীনতম পারিবারিক পুজো এটি। সর্বজনীন পুজোগুলির মধ্যে রয়েছে বাসুদেবপুর তরুণ সঙ্ঘের পুজো। থিম, বরফের দেশে কাঠের বাড়ি। মোনালিসা সঙ্ঘের পুজোর থিম পদ্মমন্দির, দাসপাড়া মিলন সঙ্ঘের থিম বাঁশের কেল্লা।
বাগনানের চন্দ্রভাগ গ্রামে চাঁদ রায়তলায় জগদ্ধাত্রী ভক্ত ক্লাবের পুজো মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে জোর কদমে। মণ্ডপের থিম দক্ষিণ ভারতের শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের আদলে। প্রতিমা শোলার ডাকের চালচিত্রের পটভূমিকায়। থাকছে আকর্ষণীয় আলোকসজ্জা। বাঁটুল প্রভাতী সঙ্ঘের এ বারের থিম, সংসদ ভবন। নুন্টিয়ার সাহাড়া রাজধানী ক্লাবের পুজোর থিম ওড়িশার একটি মন্দিরের আদলে। খালোড় কালীবাড়ি-সংলগ্ন মাতৃমন্দির সেবা সমিতির সর্বজনীন পুজো মণ্ডপের থিম, পাকা ঠাকুর বাড়ির দালান। বাগনান স্বস্তিক-এর প্রধান আকর্ষণ প্রতিমা।
প্রায় ১৬ ফুট উচ্চতার প্রতিমা আসছে কুমারটুলি থেকে। দেউলটি নিউ ইয়ংস্টার-এর মণ্ডপ তৈরি হয়েছে মাটির ভাঁড়, মাটির ধুনুচি দিয়ে। প্রতিমা এসেছে কুমারটুলি থেকে। পারিবারিক পুজোগুলির মধ্যে রয়েছে বেড়াবেড়িয়ার চক্রবর্তী বাড়ির পুজো এবং মহাদেবপুরের ঘোষ পরিবারের পুজো। দু’টি পারিবারিক পুজোই বেশ পুরনো। গ্রামবাসীদের স্বতঃস্ফুর্ত যোগদানে দু’টি পুজোই সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়। |