পড়ুয়াদের অবরোধ ঘিরে রণক্ষেত্র শিলচর
রীক্ষা পিছনোর দাবিতে শিলচরে বিভিন্ন কলেজের ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ ও অবরোধ ঘিরে আজ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শহর। সাড়ে ছয় ঘন্টা পথ অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনকারীরা। শেষে বেলা আড়াইটায় লাঠি চালিয়ে শিলচর-আইজল ও শিলচর-হাইলাকান্দি সড়ক অবরোধমুক্ত করে পুলিশ। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেলও। অভিযোগ, ভাঙচুর হয় গুরুচরণ কলেজে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি বাসও ভাঙচুর করা হয়েছে। গোলমালে জড়িত থাকার অভিযোগে সন্ধ্যায় ছাত্রনেতা তমাল ভট্টাচার্য-সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে ছাত্রদের তরফে হাঙ্গামা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পথ অবরোধ ও দফায় দফায় গোলমাল ও সংঘর্ষের জেরে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা এ দিন কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের প্রথম ও পঞ্চম সেমেস্টারের পরীক্ষা ২২ নভেম্বর শুরু হওয়ার কথা। তৃতীয় সেমেস্টার ২৩ থেকে। আজ বিভিন্ন কলেজে পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গুরুচরণ কলেজ, কাছাড় কলেজ, রাধামাধব কলেজ, মহিলা কলেজ-সহ শহরের সমস্ত কলেজের ছাত্রছাত্রীরা রাঙ্গিরখাড়িতে গিয়ে একযোগে তিন দিকের রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েন। তাঁরা গুরুচরণ কলেজে বিক্ষোভ দেখিয়ে কাউকে অ্যাডমিট কার্ড তুলতে দেননি। কাছাড় কলেজের অফিসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ অবশ্য তালা ভেঙে পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড বিলি করার ব্যবস্থা করেন।
গুরুচরণ কলেজের তমাল চক্রবর্তী, অমিতেশ চক্রবর্তী, রাধামাধব কলেজের লিটন সোম, রাজদীপ দেব, কাছাড় কলেজের রঞ্জনা লস্করের দাবি, স্নাতক স্তরে সেমেস্টার প্রথা চালু হওয়ার পর থেকেই সমস্যা লেগে রয়েছে। ১০ জুলাই দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ছয় মাস পরের হিসেবে জানুয়ারির আগে পরীক্ষা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ চার মাস পরই পরীক্ষায় বসতে নির্দেশ দিয়েছে। এরই প্রতিবাদে প্রথমে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু তিনি পরীক্ষা পিছনোর দাবি মানতে রাজি হননি।
পরে শনিবার ছাত্রছাত্রীরা শহরের প্রেমতলায় সড়ক অবরোধ করেন। সোমবার এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের তরফে এমন খবর পেয়ে সে দিন দেড় ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। সোমবারের ওই বৈঠকে অবশ্য ছাত্রছাত্রীদের দাবি সোজা খারিজ করে দেওয়া হয়। ফলে আজ সকাল আটটায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েন পাঁচ শতাধিক ছাত্রছাত্রী। এতে শহর জুড়ে যানজট দেখা দেয়। এরই মধ্যে ওই পথ ধরে রওয়ানা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি বাস। ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা সেগুলিতে ভাঙচুর চালায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অবরোধস্থলে যান অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবাশিস চক্রবর্তী, সদর মহকুমা শাসক ডেভিড টিমুং, দুই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়ন্ত চৌধুরী ও ধ্রুব বরা। পুলিশকর্তারা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বললেও তাঁরা পরীক্ষা না-পিছনো পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। এর পরই লাঠি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেলও। পদপিষ্ট হয়ে কাছাড় কলেজের রঞ্জনা লস্কর জখম হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নিরঞ্জন রায় বলেন, ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থেই এ ভাবে বারবার পরীক্ষা পিছনো ঠিক নয়। তিনি নির্ধারিত সূচি অনুসারে ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.