মর্গের চাবি নেই, শিশুর দেহ পেল না পরিবার
র্গের চাবি হারিয়ে গিয়েছে। তাই চার বছরের একটি শিশুর দেহ হাতে পেল না পরিবার। সোমবার ছট পুজোর সন্ধেয় আদালতগঞ্জ ঘাটে পদপিষ্ট হয়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তাদের মধ্যে ১০ জনই শিশু। এই শিশুটি তাদেরই এক জন। যদিও এ দিন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদী বলেছেন, “এখনও পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।”
ওই দুর্ঘটনার পরে হাসপাতালের তরফে দুর্গতদের যথোচিত সাহায্য করা হয়নি বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে। আজ সেই অভিযোগই আরও জোরদার হল যখন মর্গের চাবি হারিয়ে ফেলার অজুহাতে ফিরিয়ে দেওয়া হল মৃত একটি শিশুর পরিবারকে। আত্মীয়দের এক জন সিকন্দর দাস পরে বলেন, “সাত সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি। কেউ চাবিটাই খুঁজে বার করতে পারল না। এ যেন বুনো হাঁসের পিছনে দৌড়নো!”
স্বজনহারাদের সঙ্গে লালুপ্রসাদ যাদব। মঙ্গলবার পটনায়। ছবি: পিটিআই।
ছট পুজোর আগের দিন অর্থাৎ শুক্রবার ঘাটগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই গিয়েছিলেন। আগের দিন পাকিস্তান থেকে ফিরে মুখ্যমন্ত্রী সপার্ষদ লঞ্চে করে গঙ্গা বিহারে গিয়ে ঘাটগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। সে দিন তিনি জানিয়েছিলেন সব ঠিক আছে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের ঘাটগুলির সুবন্দোবস্তের জন্য ধন্যবাদও দিয়েছিলেন। তার পরে এই দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনা-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় গলদ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সুশাসনকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে। স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে হারানো রোশন সাউ কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, ‘‘চোখের সামনে সব শেষ হয়ে গেল। সরকার ঠিক মতো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলে এমন ঘটত না।”। সোমবার রাতেই নীতীশ ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আমির সুবানিকে। কিন্তু তদন্তের পদ্ধতি নিয়েও এখনই প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়ে গিয়েছে।
কী রকম? স্বরাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন, তদন্তে দু’টি বিষয়ের উপরে জোর দেওয়া হবে। এক, কী করে দুর্ঘটনা ঘটল এবং দুই, ঘাটে উপযুক্ত সংখ্যক পুলিশ ছিল কি না। এ বার কী করে দুর্ঘটনা ঘটল, তার উত্তর খুঁজতে গিয়েই জটিলতা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলিতে বাঁশের সেতু ভেঙে পড়ার কথা পরিষ্কার বলা হয়েছে। অথচ সোমবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, সেতু ভেঙে এই ঘটনা ঘটেনি। তার পরই তড়িঘড়ি ওই অস্থায়ী ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন? পটনার জেলাশাসক সঞ্জয় কুমার সিংহ বলেন, “আর যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সেই কারণেই সেতুটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু তদন্তের স্বার্থে সেতুটি রেখে দেওয়া জরুরি ছিল না? জেলাশাসকের উত্তর, “তা বলতে পারব না।” আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব আজ দুপুরে দিল্লি থেকে পটনায় ফিরেছেন। তাঁর অভিযোগ, “ওই সেতু মৃত্যুর সেতু।” আরজেডি মৃতদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেবে। সরকারের তরফেও পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।
এই দুর্ঘটনার জেরে আগামী কাল, বুধবার নীতীশ কুমারের ডাকা ভোজসভাও স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের বিশেষ মর্যাদার দাবিতে ৪ নভেম্বর নীতীশ কুমার দলীয় ভাবে যে ‘অধিকার সভা’ করেছিলেন, তার সাফল্য উদ্যাপন করতেই এই ভোজসভার আয়োজন করা হয়েছিল। দলের সাংসদ এবং বিধায়কদের ভোজসভায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নীতীশ।তবে এ দিন ভোর থেকে আদালতগঞ্জের ঘাটে আবারও হাজার হাজার পুণ্যার্থীর ভিড় জমে। দুর্ঘটনার পরে ঘাটগুলিকে ফের নতুন করে সাজানো হয়েছিল। আজই ছিল ছট পুজোর শেষ দিন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.