ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার ১০
ফেসবুকে মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন তরুণী
দু’দিন আগেই বাল ঠাকরের মৃত্যুকে ঘিরে মুম্বইয়ের জনজীবন স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার সমালোচনা করেছিলেন ফেসবুকে। লিখেছিলেন, সম্মান অর্জন করতে হয়, জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না।
কিন্তু গ্রেফতারির পর জামিনে ছাড়া পেয়ে সেই শাহিন ধাদা তড়িঘড়ি বন্ধ করে দিলেন নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়ে জানালেন, “বাল ঠাকরে বড় মাপের মানুষ ছিলেন।” পুলিশের অতি সক্রিয়তার সমালোচনার পাশাপাশিই এ-ও জানিয়েছেন, থানায় তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি কেউ।
রবিবার নিজের ফেসবুক পেজে শাহিন লিখেছিলেন, বাল ঠাকরের প্রতি শ্রদ্ধায় নয় বরং গণ্ডগোলের ভয়েই মুম্বইয়ে বন্ধ সব কিছু। তাঁর এই পোস্ট ‘লাইক’ করেন বন্ধু রেণু শ্রীনিবাস। এক শিব সৈনিকের করা এফআইআরের ভিত্তিতে সোমবার সকালেই তাঁদের দু’জনকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ২৯৫ এ (ইচ্ছাকৃত ভাবে ধর্মীয় আবেগে আঘাত), ৫০৫ (২) (উস্কানিমূলক মন্তব্য) ও তথ্য প্রযুক্তি আইন ৬৬ এ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। স্থানীয় আদালত তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিলেও শেষ পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত জামিনে ছাড়া পান দু’জন।
হেনস্থা শেষ হয়নি এখানেই। সোমবার শাহিনের কাকার ক্লিনিকে ঢুকে ভাঙচুর চালায় জনা চল্লিশেক দুষ্কৃতী। অভিযোগের আঙুল উঠেছিল শিবসেনা সমর্থকদের দিকেই।
এই ঘটনায় সোমবার রাত থেকে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশির ভাগই সেনা সমর্থক বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বাকিদের খোঁজ চলছে, জানান ঠানের পুলিশ সুপার।
সোমবার জামিনের পরে শাহিন ধাদা ও রেণু শ্রীনিবাস। ছবি: পিটিআই
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। সোমবারই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণকে ই-মেল পাঠান প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মার্কণ্ডেয় কাটজু। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কী পদক্ষেপ করছেন তা যেন অবিলম্বে জানান। অন্যথায় আইনের পথ দেখতে হবে তাঁকে। বিতর্কের চাপে পড়ে গত কালই মহারাষ্ট্র সরকার জানায়, গোটা ঘটনাটির তদন্ত করছেন কোঙ্কন রেঞ্জের আইজি। আশা করা হচ্ছে আগামী কালই তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবেন আইজি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর আর পাটিল মঙ্গলবার বলেন, তরুণীদের বিরুদ্ধে সঠিক ধারা আনা হয়েছে কি না এবং হাসপাতাল ভাঙচুরে কারা জড়িত, এ সবই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ আজ সাংবাদিকদের জানান, রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই এ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।
এ দিকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আজ নিজের অসন্তোষ জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মিলিন্দ দেওরা। তাঁর মতে, ফেসবুকে নিজের মত জানানো এফআইআর যোগ্য কোনও অপরাধই নয়। এতে আইনের অপব্যবহার করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই ঘটনার পর তথ্যপ্রযুক্তি আইনের পরিধি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে মিলিন্দ জানান, আইনের বদল নয়, বরং তার অপব্যবহার রোখাই জরুরি।
কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ মন্ত্রী কপিল সিব্বলও জানান, এই ঘটনা দুঃখজনক। তাঁর মতে, মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি আইন তৈরি হয়নি। এই আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে।
শাহিন ও রেণুর অযথা হয়রানির প্রতিবাদে মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের মহিলা কমিশনে অভিযোগ জানান আইনজীবী আভা সিংহ। ওই তরুণীদের সূর্যোদয়ের আগে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল, যা আইন বিরুদ্ধ, অভিমত তাঁর। মহিলা কমিশনের সদস্যদের পালঘর থানায় এসে গোটা পরিস্থিতি দেখে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি। এত কিছুর পরও শিবসেনা আছে সেই শিবসেনাতেই। নিজেদের অবস্থান একটুও বদলাতে নারাজ তারা। দলের বিধায়ক সঞ্জয় রাউত এ দিন জানান, পুলিশ উচিত কাজই করেছে। তাঁরা পুলিশের পাশেই আছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.