বীরভূমে জাতীয় সড়কের বেহাল দশার কথা নতুন নয়। প্রায় দিনই দুর্ঘটনা ঘটে, (দুর্ঘটনার হাত থেকে বাদ যাননি কোদ জেলার পুলিশ সুপারও!) তার জেরে বাসিন্দারা অবরোধও করেন। কিন্তু স্থায়ী সমাধান মেলেনি কোনও দিনই। তাই বেহাল রাস্তা নিয়ে নিত্য দিনই এলাকাবাসীর ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। মঙ্গলবার তারই আর এক ছবি দেখল জেলাবাসী।
এ দিন জাতীয় সড়কের সংস্কার ও রাস্তার ধুলোদূষণ আটকানোর দাবিতে দু’ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অবরোধ করলেন ময়ূরেশ্বর থানার মল্লারপুরের রায়পাড়ার বাসিন্দারা। ৬০ নম্বর রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম জাতীয় সড়কে রায়পাড়া মোড়ে ওই অবরোধ হয়। অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে দীর্ঘ ক্ষণ যান চলাচল ব্যাহত হয়। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জাতীয় সড়কের উপর পণ্যবাহী ট্রাক, বেসরকারি ও সরকারি দূরপাল্লার বাস ও অন্যান্য যানবাহন দাঁড়িয়ে পড়ে।
প্রথমে ময়ূরেশ্বর থানার ওসি, সার্কেল ইন্সপেক্টর ও মল্লারপুর থানার পুলিশ ইনচার্জ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের বিডিও বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের পক্ষে সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত বিশ্বাস এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। |
আলোচনার পর সমাধানের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। বিশ্বনাথবাবু বলেন, “আপাতত ঠিক হয়েছে মল্লারপুর ব্লক অফিস মোড় থেকে বটতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় ১ কিমি রাস্তায় জল ছেটানোর ব্যবস্থা করবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। পরে ওই অংশের মেরামতিও করা হবে বলে জানিয়েছে তারা।”
যদিও ওই মেরামতি নিয়ে সংশয় এখনও কাটেনি। কারণ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অংশের রাস্তা সংস্কারের জন্য গত ৮ নভেম্বর কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু কেউই তাতে সাড়া দেননি। এ দিকে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের মহম্মদবাজার থেকে মোরগ্রাম পর্যন্ত ৭০ কিমি রাস্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত বাস্তুকার অনলজ্যোতি রায় বলেন, “আগামী ২৭ নভেম্বর ফের দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে। এজেন্সি পাওয়া গেলে ওই অংশের রাস্তার সংস্কারের কাজ শুরু হবে।” ওই অংশের রাস্তা নতুন করে তৈরির এলাকাবাসীর দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওই দাবি মানতে গেলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের রিজিওনাল অফিসের অনুমতি লাগবে।”
যদিও স্বস্তি কবে ফিরবে তা নিয়ে সংশয় কাটছে না বাসিন্দাদের। রায়পাড়ার বাসিন্দা সৌমেন রায়, প্রদীপ বিশ্বাসদের ক্ষোভ, “জাতীয় সড়কের বেহাল দশার জন্য রাস্তার দু’ধারে বসবাসকারীদের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা থেকে কবে মুক্তি মিলবে কে জানে!” |