শহর দুর্গাপুর থেকে দূরত্ব দশ কিলোমিটারের কম। কিন্তু বাস না থাকায় ওইটুকু রাস্তা পার করাটাই কাঁকসা ব্লকের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে রীতিমতো বিড়ম্বনার। বাধ্য হয়ে চড়া ভাড়া দিয়ে রিকশা বা অটো চড়ে জাতীয় সড়কে গিয়ে বাস ধরে পৌঁছাতে হয় দুর্গাপুরে। অবিলম্বে নিয়মিত বাস পরিষেবা চালুর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গ্রামের রাস্তাঘাট পিচের তৈরি। বাস চলাচলের উপযুক্ত। পঞ্চায়েত অফিস, সরকারি স্কুল, বেসরকারি স্কুল, কম্পিউটর সেন্টার, বড় বাজার রয়েছে। চালু রয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা। তবুও দুর্গাপুর শহরে যেতে হলেই সমস্যায় পড়তে হয় এখানকার মানুষজনকে। যাঁদের নিজের গাড়ি বা মোটরবাইক রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে অবশ্য সমস্যা কিছুটা কম। অনেকে রিকশা বা অটো ভাড়া করে জাতীয় সড়কে গিয়ে বাস ধরেন। কিন্তু বিপাকে পড়েন দুঃস্থ মানুষজন। জাতীয় সড়ক পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। তাছাড়া সেখানে গিয়েও যে সহজেই বাস মেলে এমনটা নয়। কারণ জাতীয় সড়ক ধরে যাতায়াতকারী খুব কম বাসই সেখানে দাঁড়ায়। অনেকে তাই আরও দূরে মুচিপাড়ায় গিয়ে বাস ধরেন।
গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “উন্নত গ্রাম। অথচ এই একটি পরিষেবার জন্য আমরা বহু পিছিয়ে আছি।” বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, বাস যোগাযোগ চালু হলে তাঁদেরও মালপত্র আদান-প্রদানের কাজে সুবিধা হয়। এখন চড়া ভাড়া দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে জিনিসপত্র আনতে হয়। বাস যোগাযোগ চালু হয়ে গেলে তাঁদের লাভের পরিমাণও বাড়ে। বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের নিয়মিত দুর্গাপুরে যেতে হয়। শুধু তাই নয়, দুর্গাপুর মহকুমা শহর হওয়ায় প্রশাসনিক যে কোনও কাজকর্ম সারতেও তাঁদের যেতে হয় ওখানেই। কিন্তু বাসের অভাবে প্রায়শই বিপাকে পড়তে হয় তাঁদের। স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, সঞ্জয় হাজরাদের কথায়, “দুর্গাপুর থেকে কলকাতা-সহ রাজ্য ও ভিন্ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বাস-যোগাযোগ রয়েছে। গোপালপুর থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত বাস পরিষেবা চালু হলে এখানকার বাসিন্দারা দুর্গাপুরে গিয়ে দূরপাল্লার বাস ধরতে পারবেন।”
দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে তিনি এই সমস্যার কথা শুনেছেন। সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। |