ছট উৎসব উপলক্ষে আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে অজয়ে ডুবে মৃত্যু হল এক তরুণীর। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে পাণ্ডবেশ্বরে অজয় নদে। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম নেহা বার্নোয়াল (১৮)। তাঁর বাড়ি অন্ডালের উখড়ার গুলজারবাগে। উখড়া আদর্শ হিন্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন তিনি।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাণ্ডবেশ্বরের ডিভিসি মোড়ে পিসতুতো দিদির শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন নেহা। এ দিন সকালে উদীয়মান সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদন করতে আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে অজয় নদের ঘাটে গিয়েছিলেন। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ পুজো চলাকালীন নেহা তাঁর নিজের ভাই-বোন সোনু ও নিশা,
নেহা বার্নোয়াল।
—নিজস্ব চিত্র। |
পিসতুতো বোন পুজা ও খুড়তুতো বোন জুহিকে নিয়ে হেঁটে উল্টো পাড়ে বীরভূমের দিকে চলে যান। পাঁচ জন সেখানেই স্নান করতে নামেন। হঠাৎ পুজো কমিটির কিছু লোকজন দেখতে পান, ওই পাঁচ জন তলিয়ে যাচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে কয়েক জন যুবক জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। চার জনকে তখনই উদ্ধার করা গেলেও নেহার খোঁজ মেলেনি। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় নেহাকে উদ্ধার করা হয়। তাঁকে ডালুরবাঁধ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, চার ভাইবোনের মধ্যে নেহা বড়। তাঁর বাবা দীনেশ বার্নোয়াল পেশায় চা বিক্রেতা। নেহার খুড়তুতো দাদা মন্টু বার্নোয়াল বলেন, “সকালে আমি উখড়ায় ছিলাম। ফোনে ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে যাই। গিয়েই বড় দুঃসংবাদ পাই।” নেহা পাণ্ডবেশ্বরে যে পিসতুতো দিদির বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন, সেই গুড়িয়াদেবী বলেন, “আমার বাড়িতে এসে যে বোনের এত বড় সর্বনাশ হবে, কল্পনা করতে পারিনি।”
দুঃসংবাদ পাওয়ার পরে শোকের ছায়া নেমে আসে উখড়ার গুলজারবাগে নেহার পাড়াতেও। খবর পাওয়ার পর থেকেই শোকে কথা হারিয়েছেন নেহার বাবা দীনেশবাবু ও মা সুনীতাদেবী। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য লালা কুমার জানান, পরিবারের আর্থিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নেহা ভাল ভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিল। তাই এমন ঘটনায় এলাকার সকলেই মর্মাহত। পুলিশ জানায়, দেহ ময়না-তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। |