আশ্বাস থাকলেও বাড়িতে ‘ছায়া’ পড়েনি প্রশাসনের
রিমপুর-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়ক লাগোয়া একচিলতে উঠোনটা পেরিয়ে থমকে দাঁড়াতে হল ঘরটার সামনে। দুই নাবালক ছেলে-মেয়েকে আঁকড়ে বসে আছেন মহিলা।
সুধাময় ঘোষের স্ত্রী রীতা। বুধবার নদিয়ার তেহট্টে পুলিশের গুলিতে গুরুতর জখম হয়েছেন সুধাময়। ছ-দিন পেরিয়ে গিয়েছে। তেহট্টের ওই গুলি চালনা নিয়ে উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু তেহট্টের পিডব্লুডি মোড়ে সুধাময়ের বাড়িতে কেউ আসেননি। প্রশাসনের লোকজন তো দূরঅস্ত, এই ক’দিনে ঘোষ বাড়িতে পা পড়েনি কোন রাজনৈতিক নেতারও।
রীতা বলেন, ‘‘তাহলে মানুষটার কি মরে যাওয়ায় ভাল ছিল! একটিবারের জন্য কেউ আমাদের বাড়িতে এলো না। ও তো সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেল। আমি একা দুই নাবালক ছেলেমেয়েকে নিয়ে কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।’’
ছেলেমেয়ের সঙ্গে সুধাময় ঘোষের স্ত্রী। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক।
বুধবার হাউলিয়া মোড়ে পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছেন অশোক সেন। গুরুতর আহত হয়ে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতাল, শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল হয়ে বর্তমানে নীলরতন মেডিক্যালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন সুধাময়বাবু। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে বাড়ি অশোক সেনের। নেতারা যাঁরা অশোক সেনের বাড়ি আসছেন, তাঁরা কার্যত ঘোষ বাড়ির উঠোনের উপর দিয়েই যাচ্ছেন। প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীও ঘোষ বাড়ি থেকে পঞ্চাশ মিটার দূরে অশোকবাবুর বাড়ি গিয়ে সাহায্য করে এসেছেন। কিন্তু সুধায়ময়বাবুর বাড়িতে কারও ছায়া পড়েনি। সুধাময়ের মেজদা বাসুদেব শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতা থেকে বাড়ি এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘টিভিতে দেখলাম মুখ্যমন্ত্রীও মৃতের পরিবারের জন্য টাকা, চাকরি ঘোষণা করে দিয়েছেন। আমার ভাইটা কী তবে মারা গেলেই ভাল হত! সামান্য সৌজন্যও নেই। খোঁজ পর্যন্ত নিতে এল না কেউ।’’
অন্য দিকে, ঘটনার পর থেকে অশোক সেনের বাড়িতে প্রতিবেশী, আত্মীয়, রাজনৈতিক নেতাদের ভিড় লেগে থাকলেও সেন পরিবারও কার্যত অন্ধকারে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার ব্যাপারে সোমবার মৃতের ভাই অজিত সেন বলেন, ‘‘টিভি ও কাগজে দেখেছি যে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন দাদার পরিবারকে দুই লক্ষ টাকা ও পরিবারের একজনকে চাকরি দেবেন। কিন্তু বুধবারের পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ আমাদের বাড়িতে আসেনি।” জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন ঠিকই। তবে এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে কোন নির্দেশ আসেনি।’’
নিহত অশোক সেনের পরিবার এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনরকম অভিযোগ দায়ের করেনি এদিকে বুধবার সকালে তেহট্টের ওই ঘটনায় ওই দিনই সন্ধ্যায় ১০২২ জনের বিরুদ্ধে তেহট্ট থানায় এফ আই আর ( কেস নম্বর- ৮২৫ ২০১২, তারিখ- ১৪-১১-২০১২) করেছেন তেহট্টের এসডিপিও শৈলেশ। তার মধ্যে মৃত অশোক সেন ও আহত সুধাময় ঘোষ-সহ ২২ জনের নাম রয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.