থমকে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের কাজ
শহরকে আবর্জনামুক্ত করার উদ্যোগ শিকেয়
হরকে দূষণমুক্ত করার জন্য সরকারি প্রকল্প রয়েছে। অর্থেরও অভাব নেই। কিন্তু পুর-কর্তৃপক্ষের গড়িমসিতে কাজ থমকে গিয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, প্রকল্পে প্রয়োজনীয় দ্রব্যও দেখভালের অভাবে নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে। মেদিনীপুরে ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্পের হাল এমনই।
পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহর মেদিনীপুর। স্বাভাবিক ভাবেই দিনে দিনে শহরের চেহারা বদলাচ্ছে। বসতি বাড়ছে, বাড়ছে জনসংখ্যাও। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণ। রাস্তার ধারে জমা আবর্জনায় দুর্ভোগ বাড়ছে মানুষেরও। শহরের বহু এলাকায় আবর্জনা ফেলার ভ্যাট আছে। কিন্তু অনেক ভ্যাটের চারদিক ঘেরা না থাকায় আবর্জনার স্তূপ প্রায়শই রাস্তায় নেমে আসে। শহরের পাশে ধর্মায় পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ড রয়েছে। কিন্তু, এখানেও পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এক সময়ে ধর্মার বদলে কেরানিচটি এলাকায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে মেদিনীপুর-খড়গপুর উন্নয়ন পর্ষদের সঙ্গে পুর-কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক আলোচনাও হয়। তবে আলোচনা আর বেশি দূর এগোয়নি।
থমকে কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
এই পরিস্থিতিতে ২০০৮ সালের গোড়ায় মেদিনীপুরে ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্প চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে ১১, ১৪, ১৭, ১৮, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে পরীক্ষামূলক ভাবে এই প্রকল্প চালু করার সিদ্ধান্ত হয়। ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে তা চালুও হয়। পরে ৬ নম্বর ওয়ার্ডেও প্রকল্পটি চালু হয়। প্রত্যেক বাড়িতে লাল ও নীল রঙের দু’টি করে প্লাসটিকের পাত্র দেওয়ার কথা। জৈব ও অজৈব আবর্জনা পৃথক ভাবে জমা থাকবে দুই পাত্রে। পরে জৈব আবর্জনা থেকে সার তৈরি হবে। ফলে একদিকে যেমন শহর আবর্জনামুক্ত হবে, অন্য দিকে সার বিক্রি করে পুরসভারও আয় বাড়বে। কিন্তু, স্রেফ পুর-কর্তৃপক্ষের গড়িমসির অভাবে এমন একটি পরিবেশ-বান্ধব প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। প্রকল্পটি শ্লথ হয়ে যাওয়ার কথা মানছেন পুর-কর্তৃপক্ষও। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “প্রকল্প বন্ধ হয়নি। তবে গতি নেই।” তিনি বলেন, “এক সংস্থার সঙ্গে পুরসভার চুক্তি রয়েছে। ২-৩টি ওয়ার্ডে প্রকল্প চালু করার চেষ্টা চলছে।” তবে প্রাক্তন পুরপ্রধান নাজিম আহমেদের পাল্টা অভিযোগ, “কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। বরং প্রকল্পের টাকা লুঠ হয়েছে। বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনা হলেও তা দেখভাল করা হয়নি।”
প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থের যে ঠিক মতো ব্যবহার হয়নি, গত বছরের শেষে পুরসভা পরিদর্শনে এসে নিজের রিপোর্টে তা জানিয়েছিলেন পুর দফতরের এক আধিকারিক। তারপরও হুঁশ ফেরেনি। পুরসভার এক কাউন্সিলর বলেন, “দূষণ রোখার পাশাপাশি আবর্জনাকে পরিবর্তিত রূপে পুনরায় কাজে লাগানোর চিন্তাভাবনা থেকেই সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প চালু হয়েছে। প্রকল্প রূপায়ণে বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়েছে, আলোচনা হয়েছে। তবে কাজ বেশিদূর এগোয়নি।” তাঁর কথায়, “প্রকল্প পুরোদমে চালু হলে শহরের সর্বত্র ভ্যাট রাখারই প্রয়োজন থাকবে না। এখন যেখানে ভ্যাট রয়েছে, সেখানে গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্যায়ন করা যেত। কিন্তু, সব ওয়ার্ডে প্রকল্প চালু না হওয়ায় সেই সুযোগ নেই।”
পরিবেশ-দূষণের হাত থেকে রেহাই পেতে পুর-কর্তৃপক্ষের আশ্বাসই এখন ভরসা শহরবাসীর।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.