সোমবার বিকেলের পরে হুগলিতে সমস্যা আপাতত মিটলেও ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে গোলমালের জেরে এ বার বাস চলাচল বন্ধ হল হাওড়ার কিছু রুটে। কিন্তু দিনভর দুই জেলার যাত্রীদেরই নাকাল হতে হল বিস্তর। সকাল থেকেই অটো, ট্রেকার, মোটরভ্যান বা রিকশায় বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। তবে, তারকেশ্বর এবং আরামবাগে বাস চলেছে। হুগলি জেলা বাস-মালিক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি দেবব্রত ভৌমিক বলেন, “প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। মঙ্গলবার সব রুটে বাস চলবে।”
|
হাওড়া রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়ের তোলা ছবি। |
গত ১১ নভেম্বর নতুন ভাড়া কার্যকর হয়। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, ভাড়া বাড়ানোর হার সঠিক হয়নি। অনেক ক্ষেত্রেই প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। এই নিয়েই অনেক জায়গায় বর্ধিত হারে ভাড়া দিতে রাজি হচ্ছেন না এক শ্রেণির যাত্রী। বাসকর্মীদের সঙ্গে তাঁদের গোলমালও হচ্ছে। এর জেরেই রবিবার সন্ধ্যা থেকে হুগলিতে বাস বন্ধ করে বাস-মালিক সংগঠন। সমস্যা মেটাতে সোমবার বিকেলে জেলাশাসক মনমীত নন্দ বাস-মালিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) আবিদ হোসেন, আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা (আরটিও) সৈকত দাস, তৃণমূল বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত প্রমুখ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে স্থির হয়েছে যাত্রীদের থেকে সরকার নির্ধারিত বর্ধিত ভাড়াই নেওয়া হবে। কোথাও যদি ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের হাতে বাসকর্মীরা হেনস্থা বা নিগৃহীত হন, তা হলে বিষয়টি থানায় জানালেই পুলিশ তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে গ্রেফতার করা হবে সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের। রবিবার রাতেই অবশ্য তারকেশ্বর ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে তারকেশ্বর-আরামবাগের বাস-মালিকদের আলোচনা হয়। পরে তারকেশ্বরের কয়েকটি রুটে এবং আরামবাগে বাস বন্ধের সিদ্ধান্ত বদলান মালিকরা। |
হুগলিতে ছবিটি তুলেছেন প্রকাশ পাল। |
সোমবার সকাল থেকে বাগনান-আমতা, বাগনান-শ্যামপুর, বাগনান-কমলপুর, উলুবেড়িয়া-গাদিয়াড়া, শ্যামপুর-ধর্মতলা, ঝিকিরা-হাওড়া, মুচিঘাটা-করুণাময়ী-সহ কয়েকটি রুটের বাস বন্ধ হয়ে যায়। এই জেলাতেও ভাড়া নিয়ে বিভ্রান্তির জেরে যাত্রীদের সঙ্গে কন্ডাক্টরদের গোলমাল হচ্ছে গত দিন কয়েক। যাত্রীদের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। বস্তুত, দ্বিতীয় বার সংশোধিত ভাড়া ঘিরে বিভ্রান্তির জেরেই সমস্যা দেখা দিয়েছে গণ-পরিবহণে।
হাওড়ার কিছু বাস-মালিকের বক্তব্য, ৬ নভেম্বর প্রথম বাস ভাড়া বাড়ে। বর্ধিত ভাড়া-তালিকা জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর থেকে তাঁদের দেওয়া হয়। কিন্তু গত শুক্রবার ফের মহাকরণে ভাড়া-তালিকা সংশোধন করা হলেও তা এখনও দেওয়া হয়নি। জেলা পরিবহণ দফতরের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) অশোককুমার দাস বলেন, “মহাকরণে দ্বিতীয়বার ঘোষণার পরে সরকার নতুন যে ভাড়ার হার সংশোধন করেছেন তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন ভাড়া-তালিকা তৈরি করে বাস-মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। আশা করি সমস্যা মিটে যাবে।” |